কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে পুলিশের মধ্যস্থতায় প্রেমিকের সংগে বিয়ে হয়েছে এক তরুণীর। দীর্ঘ সময় দু’জন প্রেম করলেও বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিলো কলেজ শিক্ষক প্রেমিক। এর জেরে আত্মহত্যার পরিকল্পনাও করেছিলেন তরুণী। তবে শেষ পর্যন্ত তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে হয়নি তাঁকে। পুলিশের সহায়তায় তাঁদের বিয়ে হয়েছে।
সুইসাইড নোট লেখা সেই তরুণী পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, আল্লাহ আপনাদেরকে ফেরেশতা করে আমার কাছে পাঠিয়েছেন।
শুক্রবার (২৮ মে) বিকালে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানার পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়েছে, পুলিশের চেষ্টায় আত্মহত্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া এবং প্রেমিকের সংগে বিয়ে হওয়ার পর নিজ উপলব্ধি থেকে ওই তরুণী কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মেয়েটি গত রাতেই সুইসাইড নোট লিখেছিলেন। পরে পুলিশের বার্তা পেয়ে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থেকে মেয়েটি লিখেছেন, গত রাতেই সুইসাইড নোট লিখেছিলাম, হয়তো রাতেই কিছু করে ফেলতাম। আপনাদের মেসেজ পেয়ে ভরসা পেয়েছি।
সুইসাইড নোটে তিনি লিখেছিলেন, এক যুবকের সংগে তাঁর বহুদিনের প্রেমের সম্পর্ক। ছেলেটি কলেজশিক্ষক। বিয়ের আশ্বাসে তারা অনেক গভীরভাবে মিশেছেন। যুবকের ইচ্ছায় তিনি গর্ভপাত করাতেও বাধ্য হয়েছেন।
তিনি জানান, তাঁদের সম্পর্কের বিষয়টি এলাকার সবাই জেনে গেছে। এই মুহূর্তে ছেলেটি তাঁকে বিয়ে করতে অস্বীকার করছেন। ছেলেটির পরিবারও তাকে মেনে নেবে না। এলাকার গণ্যমান্য অনেকের শরণাপন্ন হয়েও কোনো কাজ হয়নি। প্রভাবশালী হওয়ায় ছেলের পরিবার কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না। স্থানীয় সব উপায়ের শরণাপন্ন হয়েও কোনো সমাধান বা বিচার না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। তাই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
এই সময় পরিচিত একজনের পরামর্শে পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে তিনি লেখেন, তিনি সম্মানের সংগে বাঁচতে চান।
মিডিয়া উইং প্রাথমিকভাবে তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দেয়। তাকে ইতিবাচক চিন্তা করতে উৎসাহ দেয়। নানানভাবে কাউন্সেলিং করে। পাশাপাশি কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার ওসি মো. রওশন কবিরকে বিষয়টি ভালোভাবে তদন্ত করে দেখার এবং প্রয়োজন হলে আইনি সহায়তা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সার্কেল এএসপি মো. সুমন রেজাকে পরামর্শ দেয় বিষয়টি তদারকি করতে।
নাগেশ্বরী থানার ওসির প্রচেষ্টায় এবং সার্কেল এএসপির তত্ত্বাবধানে বিষয়টির দ্রুত সমাধানের পথ সুগম হয়। এলাকার চেয়ারম্যানসহ অন্য জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উদ্যোগে ও উপস্থিতিতে একটি উৎসবমুখর পরিবেশে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হন ওই তরুণী ও কলেজশিক্ষক।
পরে সেই তরুণী পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লেন, মহান আল্লাহর দরবারে শতকোটি শুকরিয়া। আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। আমরা এখন স্বামী-স্ত্রী। ভাবতেই খুশিতে পাগল হয়ে যাচ্ছি আমি। স্যার, আল্লাহ আমার সংগে কোনো অন্যায় হতে দেননি। আর এত কিছু সব সম্ভব হয়েছে শুধু আপনাদের জন্য।
তিনি আরও লেখেন, আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমার জানা নাই। তবে আমি সারা জীবন আপনাদের জন্য দোয়া করবো। আল্লাহ আপনাদেরকে ফেরেশতা করে আমার কাছে পাঠিয়েছেন। আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আমরা যেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একসংগে সুখে সংসার করতে পারি।-ডেল্টা টাইমস্

দৈনিক দেশ নিউজ বিডি ডটকম ডেস্ক 
























