মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকার কুরিয়ারেই পঁচল রাজশাহীর বিক্রিতার আম!

রাজশাহী থেকে ঢাকায় পার্সেলে পাঠানো আম কুরিয়ার অফিসে পড়ে থেকেই পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। গত ২৮ মে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের রাজশাহী আলুপট্টি শাখা থেকে ঢাকায় ৪০কেজি আম পাঠানো হলেও তা প্রাপকের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। সেই আম ফেরতও আসেনি রাজশাহীতে প্রেরকের কাছে। আমের প্রেরক প্রতিষ্ঠানটির হটলাইনে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দেয়ার জন্য কল করলে নম্বরেও পাননি সংযোগ। প্রতিষ্ঠানটি এর দায় স্বীকারও করেছে।

জানা গেছে, গত ২৮ মে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকার মো. নুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছে দুই ক্যারেটে ২০ কেজি করে ১ মণ গোপালভোগ আম পাঠান রাজশাহীর মৌসুমি আম ব্যবসায়ী মো. সম্রাট হোসেন। ঠিকানা দেয়া হয় মাজার রোড, মিরপুর-১০ ঢাকা। আমের পার্সেল পরদিনই অর্থাৎ ২৯ মে পৌঁছায় ঢাকার মিরপুর-১০ শাখায়। রিসিভ করেন ওই শাখার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান। কিন্ত প্রাপক নুরুল ইসলামের কাছে ফোন দেয়া হয়নি।

আম প্রেরক মৌসুমি ব্যবসায়ী মো. সম্রাট হোসেন বলেন, ‘নাম, ঠিকানা ও একাধিক মোবাইল নম্বর সঠিকভাবে মিলিয়ে সুন্দরভাবে ক্যারেটে প্যাকিং করে আম পাঠালেও তা প্রাপকের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়নি সুন্দরবন কুরিয়ার। এমনকি কুরিয়ার অফিস থেকে কল-এসএমএসও করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির গাফেলতিতে আম হাতে পাননি প্রাপক। কোনো পার্সেল প্রাপক না পেলে তা প্রেরকের কাছে ফেরত আসে। অথচ সেই আম ফেরতও আসেনি রাজশাহীতে।’

তিনি বলেন, ‘পরে ৩১ মে আমি কুরিয়ার অফিসে যোগাযোগ করি এবং জানতে পারি আম কুরিয়ার অফিসেই রয়েছে। এ সময় তৎক্ষনাৎ সুন্দরবনের মিরপুর-১০ শাখায় একজনকে পাঠায়। ততক্ষনে পঁচে নষ্ট হয়ে যায় আম। সেসময় কুরিয়ারের লোকজনও আমার প্রতিনিধিকে জানায়, আম পঁচে গেছে এবং ফিরে চলেন আসেন তিনি। ফলে এবার কুরিয়ারের জরুরী হটলাইনে কল দিয়ে বিষয়টি অভিযোগ দিতে চাইলে হটলাইনেও সংযোগ পাইনি।’

এ বিষয়ে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ঢাকা মিরপুর-১০ শাখায় যোগাযোগ করা হলে সেখানকার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান তাদের অফিসে আম পঁচে নষ্ট হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তিনি কাছে দাবি করেছেন, তাদের অফিসে আম পৌঁছার পরপরই প্রাপকের মোবাইল নম্বরে এসএমএস দেয়া হয়েছিল। নম্বরটি ভুল হওয়ায় প্রাপক আম পৌঁছার বিষয়টি জানতে পারেন নি। পরে জানা যায় নম্বরটি ভুল।

ইনচার্জ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘প্রেরকের নম্বরে যোগাযোগ করে প্রাপকের সঠিক নম্বর দিতে বলি অথবা তিনি যেন কুরিয়ারে যোগাযোগ করেন, সেটাও বলি। কিন্ত কেউ আর যোগাযোগ করেননি। তবে আম প্রেরকের কাছে ফেরত পাঠানোর নিয়ম নেই। আম বাদে অন্য সব পণ্য ফেরত যায়। তাই আম পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে।’

এ বিষয়ে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস রাজশাহী বিভাগীয় অফিসের ম্যানেজার আলতাব হোসেন দায় স্বীকার করে  ‘এ দায় এড়ানো যায় না। এমন ঘটনার দায় প্রতিষ্টানেরই। আরো গুরুত্বের সাথে দেখভাল করে সবকিছু সরবরাহ করা উচিত। তবে আম যেহেতু নষ্ট হয়ে গেছে, অফিসিয়ালি কোনো অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ঢাকার কুরিয়ারেই পঁচল রাজশাহীর বিক্রিতার আম!

প্রকাশিত সময় : ০৪:৫৩:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুন ২০২১

রাজশাহী থেকে ঢাকায় পার্সেলে পাঠানো আম কুরিয়ার অফিসে পড়ে থেকেই পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। গত ২৮ মে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের রাজশাহী আলুপট্টি শাখা থেকে ঢাকায় ৪০কেজি আম পাঠানো হলেও তা প্রাপকের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। সেই আম ফেরতও আসেনি রাজশাহীতে প্রেরকের কাছে। আমের প্রেরক প্রতিষ্ঠানটির হটলাইনে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দেয়ার জন্য কল করলে নম্বরেও পাননি সংযোগ। প্রতিষ্ঠানটি এর দায় স্বীকারও করেছে।

জানা গেছে, গত ২৮ মে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকার মো. নুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছে দুই ক্যারেটে ২০ কেজি করে ১ মণ গোপালভোগ আম পাঠান রাজশাহীর মৌসুমি আম ব্যবসায়ী মো. সম্রাট হোসেন। ঠিকানা দেয়া হয় মাজার রোড, মিরপুর-১০ ঢাকা। আমের পার্সেল পরদিনই অর্থাৎ ২৯ মে পৌঁছায় ঢাকার মিরপুর-১০ শাখায়। রিসিভ করেন ওই শাখার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান। কিন্ত প্রাপক নুরুল ইসলামের কাছে ফোন দেয়া হয়নি।

আম প্রেরক মৌসুমি ব্যবসায়ী মো. সম্রাট হোসেন বলেন, ‘নাম, ঠিকানা ও একাধিক মোবাইল নম্বর সঠিকভাবে মিলিয়ে সুন্দরভাবে ক্যারেটে প্যাকিং করে আম পাঠালেও তা প্রাপকের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়নি সুন্দরবন কুরিয়ার। এমনকি কুরিয়ার অফিস থেকে কল-এসএমএসও করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির গাফেলতিতে আম হাতে পাননি প্রাপক। কোনো পার্সেল প্রাপক না পেলে তা প্রেরকের কাছে ফেরত আসে। অথচ সেই আম ফেরতও আসেনি রাজশাহীতে।’

তিনি বলেন, ‘পরে ৩১ মে আমি কুরিয়ার অফিসে যোগাযোগ করি এবং জানতে পারি আম কুরিয়ার অফিসেই রয়েছে। এ সময় তৎক্ষনাৎ সুন্দরবনের মিরপুর-১০ শাখায় একজনকে পাঠায়। ততক্ষনে পঁচে নষ্ট হয়ে যায় আম। সেসময় কুরিয়ারের লোকজনও আমার প্রতিনিধিকে জানায়, আম পঁচে গেছে এবং ফিরে চলেন আসেন তিনি। ফলে এবার কুরিয়ারের জরুরী হটলাইনে কল দিয়ে বিষয়টি অভিযোগ দিতে চাইলে হটলাইনেও সংযোগ পাইনি।’

এ বিষয়ে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ঢাকা মিরপুর-১০ শাখায় যোগাযোগ করা হলে সেখানকার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান তাদের অফিসে আম পঁচে নষ্ট হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তিনি কাছে দাবি করেছেন, তাদের অফিসে আম পৌঁছার পরপরই প্রাপকের মোবাইল নম্বরে এসএমএস দেয়া হয়েছিল। নম্বরটি ভুল হওয়ায় প্রাপক আম পৌঁছার বিষয়টি জানতে পারেন নি। পরে জানা যায় নম্বরটি ভুল।

ইনচার্জ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘প্রেরকের নম্বরে যোগাযোগ করে প্রাপকের সঠিক নম্বর দিতে বলি অথবা তিনি যেন কুরিয়ারে যোগাযোগ করেন, সেটাও বলি। কিন্ত কেউ আর যোগাযোগ করেননি। তবে আম প্রেরকের কাছে ফেরত পাঠানোর নিয়ম নেই। আম বাদে অন্য সব পণ্য ফেরত যায়। তাই আম পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে।’

এ বিষয়ে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস রাজশাহী বিভাগীয় অফিসের ম্যানেজার আলতাব হোসেন দায় স্বীকার করে  ‘এ দায় এড়ানো যায় না। এমন ঘটনার দায় প্রতিষ্টানেরই। আরো গুরুত্বের সাথে দেখভাল করে সবকিছু সরবরাহ করা উচিত। তবে আম যেহেতু নষ্ট হয়ে গেছে, অফিসিয়ালি কোনো অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’