মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টিকা নেয়ার পর ৪০০০ নারীর মাসিকে পরিবর্তন, ‘ভয়ের কিছু নেই’

করোনা ভাইরাসের টিকা নেয়ার পর বৃটেনে কমপক্ষে ৪০০০ নারীর মাসিকের ধরন পরিবর্তন হয়েছে। গাইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিবর্তন আকস্মিক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃটেনে কয়েক লাখ নারীকে এই টিকা দেয়া হয়েছে। সেই তুলনায় এই সংখ্যা খুবই নগণ্য।

এর ফলে টিকার সঙ্গে মাসিকের বা ঋতুস্রাবের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। রয়েল কলেজ অব অবস্টেট্রিসিয়ানস অ্যান্ড গাইনিকোলজিস্টস (আরসিওজি)-এর বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অনেক নারীর অস্থায়ী সময়ের জন্য মাসিকের পরিবর্তন ঘটে। ফলে এসব নারীর এই পরিবর্তন এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন তারা করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়েছেন। বৃটেনের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখনও টিকার সঙ্গে মাসিকের অনিয়ম অথবা অপ্রত্যাশিতভাবে রক্তপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধির কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত দেয়নি।

কিন্তু আরসিওজি নিশ্চিত করে বলেছে, ওইসব নারী টিকা নেয়ার পর তাদের মাসিক খুব মারাত্মক পর্যায়ে গেছে। অধিক রক্তপাত হচ্ছে। কেন এমন হচ্ছে তা নির্ণয়ের জন্য আরো গবেষণা করার প্রয়োজন বলে তারা মন্তব্য করেছে।

সানডে টাইমস রিপোর্ট করেছে যে, এস্ট্রাজেনেকার টিকা নেয়ার পর ২৭৩৪ জন, ফাইজারের টিকা নেয়ার পর ১১৫৮ জন, মডার্নার টিকা নেয়ার পর ৬৬ জন নারী মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার নামক নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে মাসিকের অনিয়মের রিপোর্ট করেছেন ১৭ই মে পর্যন্ত। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নারী রিপোর্ট করেছেন স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের।

আরসিওজিতে মেম্বারশিপের জন্য ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. প্যাট ওব্রায়েন বলেছেন, এটা স্মরণ রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বড় কিছু নয়। এটি হাল্কা একটি বিষয়। এর ফলে নারীদেরকে টিকা নেয়া থেকে বিরত রাখা উচিত নয়।  তিনি বলেন, জীবনে বিভিন্ন সময়ে অনেক নারীর মাসিকের পরিবর্তন অস্থায়ী সময়ের জন্য হয়ে থাকে। এখন বহু নারী, যাদের বয়স ২০ উত্তীর্ণ এবং ৩০ উত্তীর্ণ তারা করোনা ভাইরাসের টিকা নিচ্ছেন।

তাই এ বিষয়টি অপরিহার্য যে, কিছু নারীর মধ্যে ওই পরিবর্তনটি কাকতালীয়ভাবে একই সঙ্গে ঘটছে। অর্থাৎ তারা যখন টিকা নিচ্ছেন, তখনই তাদের মাসিকের ওই পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে। তবে তিনি সতর্ক করেছেন। বলেছেন, যদি এই পরিবর্তন বিদ্যমান থাকে অথবা মাসিকের পরেও রক্তপাত হতে থাকে, তাহলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উত্তম। তিনি আরো বলেন, এই পরিবর্তনের সঙ্গে নারীর উর্বরা শক্তি নষ্ট হবে অথবা সন্তান ধারণে সক্ষম হবেন না- এমন চিন্তাভাবনা বা দ্বিধাদ্ব›দ্ব থাকা উচিত নয়। করোনার টিকা উর্বরা শক্তিকে নষ্ট করে এমন কোনো প্রমাণই নেই।

এরই মধ্যে যেসব নারীর মাসিকের অনিয়ম পাওয়া গেছে তা নিয়ে পর্যালোচনা করেছে কমিশন অন হিউম্যান মেডিসিন্স, মেডিসিন্স ফর ওম্যানস হেলথ এক্সপার্ট এডভাইজরি গ্রুপপ, মেডিসিন্স অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি (এমএইচআরএ)। এমএইচআরএ’র প্রধান নির্বাহী ড. জুন রেইন বলেছেন, বর্তমানে যেসব তথ্যপ্রমাণ এসেছে তাতে এটা প্রমাণ করে না যে, টিকা নেয়ার ফলে মাসিকের এই পরিবর্তনের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরো বলেন, যেসব নারীকে টিকা দেয়া হয়েছে তার মধ্যে খুব কম সংখ্যকই এমন পরিবর্তনের কথা বলেছেন। তবে এ বিষয়টিকে উল্লেখযোগ্য একটি লক্ষণ হিসেবে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।– মানবজমিন 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, ঝুলন্ত  লাশ উদ্ধার

টিকা নেয়ার পর ৪০০০ নারীর মাসিকে পরিবর্তন, ‘ভয়ের কিছু নেই’

প্রকাশিত সময় : ০৮:৪২:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুন ২০২১

করোনা ভাইরাসের টিকা নেয়ার পর বৃটেনে কমপক্ষে ৪০০০ নারীর মাসিকের ধরন পরিবর্তন হয়েছে। গাইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিবর্তন আকস্মিক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃটেনে কয়েক লাখ নারীকে এই টিকা দেয়া হয়েছে। সেই তুলনায় এই সংখ্যা খুবই নগণ্য।

এর ফলে টিকার সঙ্গে মাসিকের বা ঋতুস্রাবের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। রয়েল কলেজ অব অবস্টেট্রিসিয়ানস অ্যান্ড গাইনিকোলজিস্টস (আরসিওজি)-এর বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অনেক নারীর অস্থায়ী সময়ের জন্য মাসিকের পরিবর্তন ঘটে। ফলে এসব নারীর এই পরিবর্তন এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন তারা করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়েছেন। বৃটেনের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখনও টিকার সঙ্গে মাসিকের অনিয়ম অথবা অপ্রত্যাশিতভাবে রক্তপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধির কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত দেয়নি।

কিন্তু আরসিওজি নিশ্চিত করে বলেছে, ওইসব নারী টিকা নেয়ার পর তাদের মাসিক খুব মারাত্মক পর্যায়ে গেছে। অধিক রক্তপাত হচ্ছে। কেন এমন হচ্ছে তা নির্ণয়ের জন্য আরো গবেষণা করার প্রয়োজন বলে তারা মন্তব্য করেছে।

সানডে টাইমস রিপোর্ট করেছে যে, এস্ট্রাজেনেকার টিকা নেয়ার পর ২৭৩৪ জন, ফাইজারের টিকা নেয়ার পর ১১৫৮ জন, মডার্নার টিকা নেয়ার পর ৬৬ জন নারী মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার নামক নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে মাসিকের অনিয়মের রিপোর্ট করেছেন ১৭ই মে পর্যন্ত। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নারী রিপোর্ট করেছেন স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের।

আরসিওজিতে মেম্বারশিপের জন্য ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. প্যাট ওব্রায়েন বলেছেন, এটা স্মরণ রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বড় কিছু নয়। এটি হাল্কা একটি বিষয়। এর ফলে নারীদেরকে টিকা নেয়া থেকে বিরত রাখা উচিত নয়।  তিনি বলেন, জীবনে বিভিন্ন সময়ে অনেক নারীর মাসিকের পরিবর্তন অস্থায়ী সময়ের জন্য হয়ে থাকে। এখন বহু নারী, যাদের বয়স ২০ উত্তীর্ণ এবং ৩০ উত্তীর্ণ তারা করোনা ভাইরাসের টিকা নিচ্ছেন।

তাই এ বিষয়টি অপরিহার্য যে, কিছু নারীর মধ্যে ওই পরিবর্তনটি কাকতালীয়ভাবে একই সঙ্গে ঘটছে। অর্থাৎ তারা যখন টিকা নিচ্ছেন, তখনই তাদের মাসিকের ওই পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে। তবে তিনি সতর্ক করেছেন। বলেছেন, যদি এই পরিবর্তন বিদ্যমান থাকে অথবা মাসিকের পরেও রক্তপাত হতে থাকে, তাহলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উত্তম। তিনি আরো বলেন, এই পরিবর্তনের সঙ্গে নারীর উর্বরা শক্তি নষ্ট হবে অথবা সন্তান ধারণে সক্ষম হবেন না- এমন চিন্তাভাবনা বা দ্বিধাদ্ব›দ্ব থাকা উচিত নয়। করোনার টিকা উর্বরা শক্তিকে নষ্ট করে এমন কোনো প্রমাণই নেই।

এরই মধ্যে যেসব নারীর মাসিকের অনিয়ম পাওয়া গেছে তা নিয়ে পর্যালোচনা করেছে কমিশন অন হিউম্যান মেডিসিন্স, মেডিসিন্স ফর ওম্যানস হেলথ এক্সপার্ট এডভাইজরি গ্রুপপ, মেডিসিন্স অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি (এমএইচআরএ)। এমএইচআরএ’র প্রধান নির্বাহী ড. জুন রেইন বলেছেন, বর্তমানে যেসব তথ্যপ্রমাণ এসেছে তাতে এটা প্রমাণ করে না যে, টিকা নেয়ার ফলে মাসিকের এই পরিবর্তনের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরো বলেন, যেসব নারীকে টিকা দেয়া হয়েছে তার মধ্যে খুব কম সংখ্যকই এমন পরিবর্তনের কথা বলেছেন। তবে এ বিষয়টিকে উল্লেখযোগ্য একটি লক্ষণ হিসেবে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।– মানবজমিন