শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাবুলে মার্কিন সেনাদের নাকের ডগায় ছিলাম: জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ

তালেবান মুখপাত্র হিসেবে প্রতিনিয়তই গণমাধ্যমে নাম আসতো জাবিহউল্লাহ মুজাহিদের। তবে তাকে নিয়ে ছিল রহস্য। আসলে এই নামে কেউ আছে কিনা তা নিয়ে ছিল সংশয়। নাকি প্রতীকী এই নামের আড়ালে একাধিক ব্যক্তি পাঠাতেন তালেবানের বার্তা।

অবশ্য গত ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুল নিয়ন্ত্রণের পরে প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলনে আসেন তিনি। শেষ পর্যন্ত রহস্যময় এই মুখপাত্রকে স্বচক্ষে দেখতে পান সাংবাদিকরা।

কীভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান সেনাদের নজরদারি এড়িয়ে কাজ করতেন, সেটা এবার জানালেন পাকিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে।

তিনি বলেন, যুদ্ধের সময়ে কাবুলে মার্কিন ও আফগান সেনাদের চোখে ধুলো দিয়ে তাদের নাকের ডগায় ছিলেন তিনি।

জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘ক্রমাগত চেষ্টা পরও ধরতে না পেরে আমাকে ওরা ভূত ভাবতে শুরু করেছিল। ভেবেছিল মুজাহিদ নামে হয়তো কেউ নেই। কিন্তু কাবুলে গোটা সময় ধরে ছায়ার মতো ওদের পেছনেই ছিলাম।’

তিনি জানান, শুরুতে অন্য আফগান শিশুদের মতো সাধারণ স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন। পরে উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের নওসেরায় হাক্কানিয়া সেমিনারিতে ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করেন।

কাবুলে থেকেই তিনি সংগঠনের কাজ করে গেছেন দাবি তালেবান মুখপাত্র বলেন, ‘আমাকে ধরার জন্য বহু তল্লাশি চালিয়েছে ওরা। প্রত্যেকবার আমিও ওদের চোখের সামনে থেকে পালিয়েছি। গোটা আফগানিস্তান ঘুরেছি।’

তিনি বলেন, ‘সব সময়ে সামনের সারির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। তাদের পাকা খবর দিতাম। একটা সময়ে আমেরিকান সেনাদের ধারণা হয়েছিল, মুজাহিদ নামে কোনো একজন নয়, একাধিক ব্যক্তি রয়েছে।’

তার খোঁজ পেতে স্থানীয়দের প্রচুর টাকা দিয়েছিল মার্কিন সেনারা। অনেক চর নিয়োগ করা সত্ত্বেও তাকে ধরতে পারেনি বলেই দাবি করেন জাবিউল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘কোনো দিন আফগানিস্তান ছাড়ার চেষ্টা করিনি। এমনকি আফগানিস্তান ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়ার কথাও ভাবিনি।’

জাবিহউল্লাহই তার নাম বলে জানান তালেবান মুখপাত্র। তবে, শিক্ষকরা একপর্যায়ে তাকে মুজাহিদ নামে ডাকা শুরু করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

কাবুলে মার্কিন সেনাদের নাকের ডগায় ছিলাম: জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ

প্রকাশিত সময় : ০৩:৫৩:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

তালেবান মুখপাত্র হিসেবে প্রতিনিয়তই গণমাধ্যমে নাম আসতো জাবিহউল্লাহ মুজাহিদের। তবে তাকে নিয়ে ছিল রহস্য। আসলে এই নামে কেউ আছে কিনা তা নিয়ে ছিল সংশয়। নাকি প্রতীকী এই নামের আড়ালে একাধিক ব্যক্তি পাঠাতেন তালেবানের বার্তা।

অবশ্য গত ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুল নিয়ন্ত্রণের পরে প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলনে আসেন তিনি। শেষ পর্যন্ত রহস্যময় এই মুখপাত্রকে স্বচক্ষে দেখতে পান সাংবাদিকরা।

কীভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান সেনাদের নজরদারি এড়িয়ে কাজ করতেন, সেটা এবার জানালেন পাকিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে।

তিনি বলেন, যুদ্ধের সময়ে কাবুলে মার্কিন ও আফগান সেনাদের চোখে ধুলো দিয়ে তাদের নাকের ডগায় ছিলেন তিনি।

জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘ক্রমাগত চেষ্টা পরও ধরতে না পেরে আমাকে ওরা ভূত ভাবতে শুরু করেছিল। ভেবেছিল মুজাহিদ নামে হয়তো কেউ নেই। কিন্তু কাবুলে গোটা সময় ধরে ছায়ার মতো ওদের পেছনেই ছিলাম।’

তিনি জানান, শুরুতে অন্য আফগান শিশুদের মতো সাধারণ স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন। পরে উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের নওসেরায় হাক্কানিয়া সেমিনারিতে ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করেন।

কাবুলে থেকেই তিনি সংগঠনের কাজ করে গেছেন দাবি তালেবান মুখপাত্র বলেন, ‘আমাকে ধরার জন্য বহু তল্লাশি চালিয়েছে ওরা। প্রত্যেকবার আমিও ওদের চোখের সামনে থেকে পালিয়েছি। গোটা আফগানিস্তান ঘুরেছি।’

তিনি বলেন, ‘সব সময়ে সামনের সারির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। তাদের পাকা খবর দিতাম। একটা সময়ে আমেরিকান সেনাদের ধারণা হয়েছিল, মুজাহিদ নামে কোনো একজন নয়, একাধিক ব্যক্তি রয়েছে।’

তার খোঁজ পেতে স্থানীয়দের প্রচুর টাকা দিয়েছিল মার্কিন সেনারা। অনেক চর নিয়োগ করা সত্ত্বেও তাকে ধরতে পারেনি বলেই দাবি করেন জাবিউল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘কোনো দিন আফগানিস্তান ছাড়ার চেষ্টা করিনি। এমনকি আফগানিস্তান ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়ার কথাও ভাবিনি।’

জাবিহউল্লাহই তার নাম বলে জানান তালেবান মুখপাত্র। তবে, শিক্ষকরা একপর্যায়ে তাকে মুজাহিদ নামে ডাকা শুরু করেন।