বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে অর্থ আদায়, আরএমপির ৬ সদস্য বরখাস্ত

বাসের দুই যাত্রীকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) একজন এটিএসআইসহ ৬ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক তাদের বিরুদ্ধে এ আদেশ জারি করেন।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তারা হলেন এটিএসআই মো. নাসির উদ্দিন, এএসআই মো. সেলিম শাহাজাদা, শ্রী শংকর চন্দ্র, মো. সরোয়ার আলম, মো. শাহ আলম, মো. রিপন আলী। এ ছয়জনকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
ঘটনার বিবরণে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কুমিল্লা জেলার বড়ুয়া থানার শাকপুর গ্রামের আলহাজ মো. খোরশেদ গাজী ও নরসিংন্দী জেলার বাবুরহাট শেখের চর এলাকার মো. শাহীন রাজশাহীর আদালতে হাজিরা শেষে কুমিল্লা যাওয়া উদ্দেশে নগরীর গৌরহাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে উঠছিলেন। সম্পর্কে মো. শাহীন আলহাজ খোরশেদ গাজীর ভাগ্নিজামাই। এসময় হঠাৎ এএসআই মো. সেলিম শাহাজাদা ও তার সঙ্গীয় ফোর্স তাদের জোরপূর্বক পুলিশবক্সে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এতে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে খোরশেদ গাজী সেখান থেকে পালিয়ে যান।
অপরদিকে জামাই শাহীনকে পুলিশ বক্সে নিয়ে আসেন। তার দেহ তল্লাশি করে দুটি সিগারেট ছাড়া কিছুই পায় না পুলিশ। কিছু না পেয়েও শাহীনকে গাঁজা সেবনের দোষারোপ করে নগদ এক হাজার টাকা কেড়ে নেয় পুলিশ। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আরও অর্থ দাবি করা হয়। পরে শাহীনকে তার মোবাইল থেকে তার বড় ভাই মো. আ. মজিদকে ফোন করে টাকা চাইতে বলা হয়। শাহীন তার বড় ভাইকে ঘটনার বিস্তারিত জানালে এএসআই সেলিমের দেওয়া বিকাশ নাম্বারে চার হাজার ৬০০ টাকা প্রেরণ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, ইতোমধ্যে এটিএসআই মো. নাসির উদ্দিন পুলিশবক্সে এসে ঘটনা সম্পর্কে সব জানার পরও শাহীনকে দ্রুত ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যেতে বলেন। কিন্তু শাহীনের কাছে যাওয়ার মতো কোনো অর্থ না থাকায় এটিএসআই নাসিরের কাছে গাড়ি ভাড়ার টাকা চান। এতে নাসির ক্ষিপ্ত হয়ে জেলে যাওয়ার ভয় তাকে আবারও চলে যেতে বলেন। পরে উপায় না পেয়ে শাহীন ওই স্থান ত্যাগ করেন।
অভিযুক্তদের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, অভিযুক্ত ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাময়িক বরখাস্তের কারণে তারা আপাতত সরকারি বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা পাবেন এবং আরএমপি পুলিশ লাইন্সে আইআর এর নিকট রোলকল দেবেন।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে অর্থ আদায়, আরএমপির ৬ সদস্য বরখাস্ত

প্রকাশিত সময় : ০৯:১৩:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
বাসের দুই যাত্রীকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) একজন এটিএসআইসহ ৬ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক তাদের বিরুদ্ধে এ আদেশ জারি করেন।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তারা হলেন এটিএসআই মো. নাসির উদ্দিন, এএসআই মো. সেলিম শাহাজাদা, শ্রী শংকর চন্দ্র, মো. সরোয়ার আলম, মো. শাহ আলম, মো. রিপন আলী। এ ছয়জনকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
ঘটনার বিবরণে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কুমিল্লা জেলার বড়ুয়া থানার শাকপুর গ্রামের আলহাজ মো. খোরশেদ গাজী ও নরসিংন্দী জেলার বাবুরহাট শেখের চর এলাকার মো. শাহীন রাজশাহীর আদালতে হাজিরা শেষে কুমিল্লা যাওয়া উদ্দেশে নগরীর গৌরহাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে উঠছিলেন। সম্পর্কে মো. শাহীন আলহাজ খোরশেদ গাজীর ভাগ্নিজামাই। এসময় হঠাৎ এএসআই মো. সেলিম শাহাজাদা ও তার সঙ্গীয় ফোর্স তাদের জোরপূর্বক পুলিশবক্সে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এতে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে খোরশেদ গাজী সেখান থেকে পালিয়ে যান।
অপরদিকে জামাই শাহীনকে পুলিশ বক্সে নিয়ে আসেন। তার দেহ তল্লাশি করে দুটি সিগারেট ছাড়া কিছুই পায় না পুলিশ। কিছু না পেয়েও শাহীনকে গাঁজা সেবনের দোষারোপ করে নগদ এক হাজার টাকা কেড়ে নেয় পুলিশ। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আরও অর্থ দাবি করা হয়। পরে শাহীনকে তার মোবাইল থেকে তার বড় ভাই মো. আ. মজিদকে ফোন করে টাকা চাইতে বলা হয়। শাহীন তার বড় ভাইকে ঘটনার বিস্তারিত জানালে এএসআই সেলিমের দেওয়া বিকাশ নাম্বারে চার হাজার ৬০০ টাকা প্রেরণ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, ইতোমধ্যে এটিএসআই মো. নাসির উদ্দিন পুলিশবক্সে এসে ঘটনা সম্পর্কে সব জানার পরও শাহীনকে দ্রুত ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যেতে বলেন। কিন্তু শাহীনের কাছে যাওয়ার মতো কোনো অর্থ না থাকায় এটিএসআই নাসিরের কাছে গাড়ি ভাড়ার টাকা চান। এতে নাসির ক্ষিপ্ত হয়ে জেলে যাওয়ার ভয় তাকে আবারও চলে যেতে বলেন। পরে উপায় না পেয়ে শাহীন ওই স্থান ত্যাগ করেন।
অভিযুক্তদের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, অভিযুক্ত ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাময়িক বরখাস্তের কারণে তারা আপাতত সরকারি বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা পাবেন এবং আরএমপি পুলিশ লাইন্সে আইআর এর নিকট রোলকল দেবেন।