বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চার দিনেও ৩ কলেজছাত্রীর সন্ধান নেই

রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে নিখোঁজের চার দিন পার হলেও তিন কলেজছাত্রীর সন্ধান পায়নি পুলিশ। তাদের অবস্থান সম্পর্কেও নিশ্চিত হতে পারেনি তারা। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার চারজনের একজনকে রোববার রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। অন্য তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

পুলিশ ও নিখোঁজ শিক্ষার্থীদর স্বজনদের সন্দেহ তারা কোনো মানবপাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়েছে। তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পল্লবী থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামির মধ্যে মো. রকিবুল্লাহর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

অপর তিন আসামির বয়স নির্ধারণের পর রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে তারা আর ফেরেনি। শনিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। ফেসবুকেও তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।

এ অবস্থায় তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থী এখনো উদ্ধার হয়নি। অভিযান চলছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

তাদের সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থীর বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তবে তারা এখন পর্যন্ত দেশে আছে বলেই আমাদের কাছে তথ্য আছে। যেহেতু ওই শিক্ষার্থীদের কোনো পাসপোর্ট নাই, ধরেই নেওয়া যায় বৈধ উপায়ে তাদের দেশ ত্যাগের কোনো সুযোগ নেই। অবৈধ পথে যাতে তারা দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেটা নিয়ন্ত্রণ এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তাদের খোঁজ বের করতে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা রোববার বলেন, মানবপাচারকারী চক্রের পাশাপাশি টিকটকসহ সম্ভাব্য অপহরণকারী চক্র জড়িত কি না তদন্ত চলছে। এর আগে টিকটক চক্র ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নারী পাচার করেছিল। নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থীর মধ্যে স্নেহা নামের মেয়েটি ছিল খুবই উচ্চাভিলাষী। ধারণা করা হচ্ছে, তার সঙ্গে টিকটক চক্রের যোগাযোগ রয়েছে। সে-ই অন্য দুই শিক্ষার্থীকে কৌশলে সঙ্গে নিয়ে পাচারকারীদের সঙ্গে লাপাত্তা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার পল্লবী এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় তারা। তারা সবাই উচ্চ মাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

গত ২ অক্টোবর পল্লবী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নিখোঁজ এক শিক্ষার্থীর বড় বোন এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেন। নিখোঁজদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়, একটি মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য ওই তিন শিক্ষার্থীকে বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বাসা থেকে বের করে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই তারা নিখোঁজ রয়েছেন। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় তারা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, স্কুল সার্টিফিকেট ও মূল্যবান সামগ্রি সঙ্গে করে নিয়ে গেছে।

শনিবার রাতে নিখোঁজ আরেক শিক্ষার্থীর বোন বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার মো. রকিবুল্লাহর (২০) দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম মাহমুদা বেগমের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

চার দিনেও ৩ কলেজছাত্রীর সন্ধান নেই

প্রকাশিত সময় : ০৭:০৫:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ অক্টোবর ২০২১

রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে নিখোঁজের চার দিন পার হলেও তিন কলেজছাত্রীর সন্ধান পায়নি পুলিশ। তাদের অবস্থান সম্পর্কেও নিশ্চিত হতে পারেনি তারা। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার চারজনের একজনকে রোববার রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। অন্য তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

পুলিশ ও নিখোঁজ শিক্ষার্থীদর স্বজনদের সন্দেহ তারা কোনো মানবপাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়েছে। তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পল্লবী থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামির মধ্যে মো. রকিবুল্লাহর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

অপর তিন আসামির বয়স নির্ধারণের পর রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে তারা আর ফেরেনি। শনিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। ফেসবুকেও তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।

এ অবস্থায় তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থী এখনো উদ্ধার হয়নি। অভিযান চলছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

তাদের সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থীর বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তবে তারা এখন পর্যন্ত দেশে আছে বলেই আমাদের কাছে তথ্য আছে। যেহেতু ওই শিক্ষার্থীদের কোনো পাসপোর্ট নাই, ধরেই নেওয়া যায় বৈধ উপায়ে তাদের দেশ ত্যাগের কোনো সুযোগ নেই। অবৈধ পথে যাতে তারা দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেটা নিয়ন্ত্রণ এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তাদের খোঁজ বের করতে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা রোববার বলেন, মানবপাচারকারী চক্রের পাশাপাশি টিকটকসহ সম্ভাব্য অপহরণকারী চক্র জড়িত কি না তদন্ত চলছে। এর আগে টিকটক চক্র ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নারী পাচার করেছিল। নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থীর মধ্যে স্নেহা নামের মেয়েটি ছিল খুবই উচ্চাভিলাষী। ধারণা করা হচ্ছে, তার সঙ্গে টিকটক চক্রের যোগাযোগ রয়েছে। সে-ই অন্য দুই শিক্ষার্থীকে কৌশলে সঙ্গে নিয়ে পাচারকারীদের সঙ্গে লাপাত্তা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার পল্লবী এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় তারা। তারা সবাই উচ্চ মাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

গত ২ অক্টোবর পল্লবী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নিখোঁজ এক শিক্ষার্থীর বড় বোন এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেন। নিখোঁজদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়, একটি মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য ওই তিন শিক্ষার্থীকে বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বাসা থেকে বের করে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই তারা নিখোঁজ রয়েছেন। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় তারা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, স্কুল সার্টিফিকেট ও মূল্যবান সামগ্রি সঙ্গে করে নিয়ে গেছে।

শনিবার রাতে নিখোঁজ আরেক শিক্ষার্থীর বোন বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার মো. রকিবুল্লাহর (২০) দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম মাহমুদা বেগমের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেয়।