শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আফ্রিকার শিশুদের ম্যালেরিয়া টিকার অনুমোদন দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

আফ্রিকা মহাদেশের শিশুদের প্রাণঘাতী ম্যালেরিয়া রোগ থেকে সুরক্ষার জন্য টিকার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই টিকা উদ্ভাবনে এক শতকের বেশি সময় লেগেছে। সেই কারণে একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের বড় অর্জন বলে মনে করা হচ্ছে। খবর বিবিসির।

জানা গেছে, আরটিএস, এস নামের এই টিকা কার্যকর বলে প্রমাণিত হয় ছয় বছর আগে। ঘানা, কেনিয়া ও মালাউয়িতে পাইলট টিকাদান কর্মসূচির পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এই টিকা সাব-সাহরান আফ্রিকা অঞ্চলে প্রয়োগ করা উচিত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আদানম গেব্রিয়াসিস বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত শিশুদের জন্য ম্যালেরিয়া টিকা বিজ্ঞান, শিশু স্বাস্থ্য ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। প্রচলিত ওষুধের পাশাপাশি এই টিকা প্রয়োগের ফলে প্রতি বছর লাখো শিশুর জীবন বাঁচানো যাবে।

প্রতি বছর বিশ্বে ২৩ কোটি মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন এবং চার লাখ মানুষ এতে মারা যান। এর মধ্যে ৯৫ ভাগ মৃত্যু হয়েছে আফ্রিকায়। ২০১৯ সালে এই অঞ্চলে দুই লাখ ৬০ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

আফ্রিকায় শতাধিক ম্যালেরিয়া পরজীবী আছে। আরটিএস, এস টিকায় আফ্রিকায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপ্যারামকে টার্গেট করা হয়েছে।

২০১৫ সালের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে টিকাটি ১০টি কেসের মধ্যে চারটি ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া গুরুতর আক্রান্ত ১০টি কেসের তিনটির ক্ষেত্রেও সফলতা এসেছে এবং শিশুদের মধ্যে রক্ত সঞ্চলনের হার এক-তৃতীয়াংশ কমেছে।

ডব্লিউএইচও’র বৈশ্বিক ম্যালেরিয়া কর্মসূচির পরিচালক ড. পেড্রো আলোনসো বলেন, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি বড়ধরনের যুগান্তকারী ঘটনা, জনস্বাস্থ্যগত দিক থেকে এটি একটি ঐতিহাসিক কীর্তি। আমরা প্রায় শতাধিক বছর ধরে ম্যালেরিয়ার টিকার অনুসন্ধানে ছিলাম। এটি জীবন বাঁচাবে এবং আফ্রিকার শিশুদের আক্রান্ত হওয়া ঠেকাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

আফ্রিকার শিশুদের ম্যালেরিয়া টিকার অনুমোদন দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

প্রকাশিত সময় : ০৭:৫৬:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর ২০২১

আফ্রিকা মহাদেশের শিশুদের প্রাণঘাতী ম্যালেরিয়া রোগ থেকে সুরক্ষার জন্য টিকার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই টিকা উদ্ভাবনে এক শতকের বেশি সময় লেগেছে। সেই কারণে একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের বড় অর্জন বলে মনে করা হচ্ছে। খবর বিবিসির।

জানা গেছে, আরটিএস, এস নামের এই টিকা কার্যকর বলে প্রমাণিত হয় ছয় বছর আগে। ঘানা, কেনিয়া ও মালাউয়িতে পাইলট টিকাদান কর্মসূচির পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এই টিকা সাব-সাহরান আফ্রিকা অঞ্চলে প্রয়োগ করা উচিত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আদানম গেব্রিয়াসিস বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত শিশুদের জন্য ম্যালেরিয়া টিকা বিজ্ঞান, শিশু স্বাস্থ্য ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। প্রচলিত ওষুধের পাশাপাশি এই টিকা প্রয়োগের ফলে প্রতি বছর লাখো শিশুর জীবন বাঁচানো যাবে।

প্রতি বছর বিশ্বে ২৩ কোটি মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন এবং চার লাখ মানুষ এতে মারা যান। এর মধ্যে ৯৫ ভাগ মৃত্যু হয়েছে আফ্রিকায়। ২০১৯ সালে এই অঞ্চলে দুই লাখ ৬০ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

আফ্রিকায় শতাধিক ম্যালেরিয়া পরজীবী আছে। আরটিএস, এস টিকায় আফ্রিকায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপ্যারামকে টার্গেট করা হয়েছে।

২০১৫ সালের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে টিকাটি ১০টি কেসের মধ্যে চারটি ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া গুরুতর আক্রান্ত ১০টি কেসের তিনটির ক্ষেত্রেও সফলতা এসেছে এবং শিশুদের মধ্যে রক্ত সঞ্চলনের হার এক-তৃতীয়াংশ কমেছে।

ডব্লিউএইচও’র বৈশ্বিক ম্যালেরিয়া কর্মসূচির পরিচালক ড. পেড্রো আলোনসো বলেন, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি বড়ধরনের যুগান্তকারী ঘটনা, জনস্বাস্থ্যগত দিক থেকে এটি একটি ঐতিহাসিক কীর্তি। আমরা প্রায় শতাধিক বছর ধরে ম্যালেরিয়ার টিকার অনুসন্ধানে ছিলাম। এটি জীবন বাঁচাবে এবং আফ্রিকার শিশুদের আক্রান্ত হওয়া ঠেকাবে।