কুমিল্লার ঘটনার জেরে এবার হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের হরি বল ঠাকুর মন্দিরের হামলা চালিয়েছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে এক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মন্দিরের সামনে দিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে মিছিলকারীরা মন্দিরে হামলা চালায়।
নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ডালিম আহমদকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

তাৎক্ষণিক ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, নবীগঞ্জ-বাহুবলের সংসদ সদস্য শাহ নওয়াজ মিলাদ গাজী, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মুরাদ আলী, নবীগঞ্জ-বাহুবলের সার্কেল এএসপি আবুল খায়ের, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আলমগীর চৌধুরী, নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দিন, নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মুজিবুর রহমান শেফু, উপজেলা বাস মালিক শ্রমিক নেতা ইয়াওর মিয়া, নবীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন মিঠুসহ রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের নেতারা।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, একদল যুবক কুমিল্লায় মন্দিরে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআন রাখার অভিযোগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল পাঞ্জারাই বাজার থেকে গুমগুমিয়া বাজার হয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি হরি বল ঠাকুর মন্দিরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মিছিলকারী লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় সনাতন ধর্মাবলম্বী ও ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ডালিম আহমেদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় ওসিসহ অন্তত ২০ জন লোক আহত হন।

আহতদের মধ্যে আশঙ্কা জনক অবস্থায় নিরাপদ দাশ (৩৮), সতীশ চন্দ্র দাশ (৪১), পুরবী দাশ (৬২) ও বিউটি দাশ (২৫)কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর আহতরা হলেন, বদরুল হোসেন (১৫), রুকু দাশ (৩৫), প্রিয়ংকা দাশ (২২), কুটন দাশ (৩৩), শুক্রদীপ দাশ (২৫), সত্যন্দ্র দাম (৬৫), গণজিত দাশ (৫৫), ইব্রহিম (৩০), গুরুধন দাশ (৬৫), আশিষ দাশ (৪০), পিন্টু দাশ (৪৬) ও তমাল দাশ (৩৫) কে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র্যাব, ডিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
এদিকে রাতে গুমগুমিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, হরি বল ঠাকুর মন্দিরে কয়েকজন বাদ্যযন্ত্রকারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন ছাড়া আর কেউ নেই।

দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম ডেস্ক 

























