মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লামায় পূজামণ্ডপে হামলা, ওসিসহ আহত শতাধিক

বান্দরবানের লামায় মানবন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশেকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে লামা থানার ওসিস শতাধিক লোক আহত হয়েছে। এই সময় উত্তেজিত জনতা লামা কেন্দ্রীয় হরিমন্দিরের পূজামণ্ডপে হামলা চালায়। এছাড়া ভাঙচুর করে পার্শ্ববর্তী ১৫টি দোকান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। ঘটনাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন অবমাননার কথিত অভিযোগের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় লামা উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন লামা কোর্ট জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আজিজুল হক। সভায় বক্তব্য দেন লামা পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম ও লামা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. ইব্রাহিম। বিক্ষোভকারীরা সভা শেষে ফিরে যাওয়ার পথে লামা মাছ বাজার কর্ণার থেকে পূজার প্যাণ্ডেলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে মন্দিরের ভেতর থেকে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে পাল্টা ইটপাটকেল, মরিচের গুঁড়া ও গরম পানি নিক্ষেপ করা হয়। এতে সংঘর্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে গেলে পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। প্রায় তিন-চার ঘণ্টা ব্যাপী এই সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আনসার মোতায়েন করা হয়। সংঘর্ষে লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমানসহ অন্তত শতাধিক লোক আহত হয়েছে।

বিকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিররিজী ও বান্দরবান পুলিশ সুপার জেরিন আখতার, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে লামা উপজেলা পরিষদে জরুরি সভা করে। সভায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার জানান, ভিডিও ফুটেজ এবং বিভিন্নভাবে তথ্যের ভিত্তিতে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

লামা কেন্দ্রীয় হরিমন্দির কমিটির সভাপতি প্রশান্ত ভট্টাচার্য জানান, সংঘর্ষে পূজামণ্ডপের ক্ষতি হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের কবল থেকে পূজা কমিটি দূর্গাপ্রতিমাকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে।

লামা কোট জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আজিজুল হক বলেন, প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে মন্দিরের পূজামণ্ডপে হামলাকারীদের কোনো সম্পর্ক নেই।-ভোরের কাগজ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, ঝুলন্ত  লাশ উদ্ধার

লামায় পূজামণ্ডপে হামলা, ওসিসহ আহত শতাধিক

প্রকাশিত সময় : ১০:২৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অক্টোবর ২০২১

বান্দরবানের লামায় মানবন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশেকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে লামা থানার ওসিস শতাধিক লোক আহত হয়েছে। এই সময় উত্তেজিত জনতা লামা কেন্দ্রীয় হরিমন্দিরের পূজামণ্ডপে হামলা চালায়। এছাড়া ভাঙচুর করে পার্শ্ববর্তী ১৫টি দোকান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। ঘটনাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন অবমাননার কথিত অভিযোগের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় লামা উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন লামা কোর্ট জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আজিজুল হক। সভায় বক্তব্য দেন লামা পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম ও লামা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. ইব্রাহিম। বিক্ষোভকারীরা সভা শেষে ফিরে যাওয়ার পথে লামা মাছ বাজার কর্ণার থেকে পূজার প্যাণ্ডেলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে মন্দিরের ভেতর থেকে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে পাল্টা ইটপাটকেল, মরিচের গুঁড়া ও গরম পানি নিক্ষেপ করা হয়। এতে সংঘর্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে গেলে পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। প্রায় তিন-চার ঘণ্টা ব্যাপী এই সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আনসার মোতায়েন করা হয়। সংঘর্ষে লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমানসহ অন্তত শতাধিক লোক আহত হয়েছে।

বিকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিররিজী ও বান্দরবান পুলিশ সুপার জেরিন আখতার, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে লামা উপজেলা পরিষদে জরুরি সভা করে। সভায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার জানান, ভিডিও ফুটেজ এবং বিভিন্নভাবে তথ্যের ভিত্তিতে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

লামা কেন্দ্রীয় হরিমন্দির কমিটির সভাপতি প্রশান্ত ভট্টাচার্য জানান, সংঘর্ষে পূজামণ্ডপের ক্ষতি হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের কবল থেকে পূজা কমিটি দূর্গাপ্রতিমাকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে।

লামা কোট জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আজিজুল হক বলেন, প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে মন্দিরের পূজামণ্ডপে হামলাকারীদের কোনো সম্পর্ক নেই।-ভোরের কাগজ