শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েলের মৃত্যু

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল মারা গেছেন। করোনা সংক্রমণ পরবর্তী জটিলতায় তার মৃত্যু হয় বলে পরিবার এক বিবৃতিতে জানায়। মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।

পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, কলিন পাওয়েল করোনার দুই ডোজ টিকা নিয়েছিলেন। তবে এরপরও তিনি করোনা পরবর্তী জটিলতায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে ওয়ালটার রিড ন্যশনাল মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে সোমবার তার মৃত্যু হয়।

ভিয়েতনাম যুদ্ধ, ইরাক যুদ্ধসহ অনেক ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত ব্যক্তি কলিন পাওয়েল। ২০০৩ সালে তিনি বাংলাদেশ সফরে আসেন।

তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কলিন পাওয়েল আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেছেন। আমরা একজন অসাধারণ মানুষ, প্রেমময় স্বামী, বাবা, দাদা এবং মহান আমেরিকানকে হারিয়েছি’।

কলিন পাওয়েল তার চার দশকের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে পুরো সময়ে ছিলেন আলোচিত। শীর্ষ সৈনিক, কূটনীতিক এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০৩ সালে জাতিসংঘে তার ভাষণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইরাকে যুদ্ধে যাওয়ার পথ করে দিয়েছিল।

পাওয়েল ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ১৯৩৭ সালে জ্যামাইকায় জন্ম নেয়া পাওয়েল যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ব্রনক্সে বড় হন। ভিয়েতনাম যুদ্ধে তার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর একটি অংশ প্রচুর মানুষ হত্যা করে বলে অভিযোগ রয়েছে। সে যুদ্ধে তিনি আহত হন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে। তখনকার প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব পান পাওয়েল।

তাকে ১৯৮৯ সালে পানামা আক্রমণ এবং ১৯৯১ সালে পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধের স্থপতি বলা হয়। যে যুদ্ধের পর কুয়েতের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারান তৎকালীন ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন। তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডিক চেনির সঙ্গে পাওয়েল যুক্তরাষ্ট্রের কোল্ড ওয়ার পরবর্তী সামরিক বাহিনীকে নতুন রূপ দেন। বলা হয়ে থাকে তিনি সামরিক অভিযানে পাওয়েল মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করেন। যা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আদায়ে সামরিক অভিযান  এবং তার পক্ষে জনসমর্থন আদায়। শত্রুকে পরাজিত করার জন্য অপ্রতিরোধ্য শক্তি ব্যবহার করতে বলেন পাওেয়ল।

২০০৭ দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে  পাওয়েল নিজের বিষয়ে করেছিলেন, পাওয়েল মানে সমস্যা সমাধানকারী। তার দৃষ্টিভঙ্গি আছে, কিন্তু সে আদর্শবাদী নয়। তার আবেগ আছে কিন্তু সে ধর্মান্ধ নয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েলের মৃত্যু

প্রকাশিত সময় : ০৯:৫৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অক্টোবর ২০২১

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল মারা গেছেন। করোনা সংক্রমণ পরবর্তী জটিলতায় তার মৃত্যু হয় বলে পরিবার এক বিবৃতিতে জানায়। মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।

পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, কলিন পাওয়েল করোনার দুই ডোজ টিকা নিয়েছিলেন। তবে এরপরও তিনি করোনা পরবর্তী জটিলতায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে ওয়ালটার রিড ন্যশনাল মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে সোমবার তার মৃত্যু হয়।

ভিয়েতনাম যুদ্ধ, ইরাক যুদ্ধসহ অনেক ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত ব্যক্তি কলিন পাওয়েল। ২০০৩ সালে তিনি বাংলাদেশ সফরে আসেন।

তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কলিন পাওয়েল আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেছেন। আমরা একজন অসাধারণ মানুষ, প্রেমময় স্বামী, বাবা, দাদা এবং মহান আমেরিকানকে হারিয়েছি’।

কলিন পাওয়েল তার চার দশকের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে পুরো সময়ে ছিলেন আলোচিত। শীর্ষ সৈনিক, কূটনীতিক এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০৩ সালে জাতিসংঘে তার ভাষণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইরাকে যুদ্ধে যাওয়ার পথ করে দিয়েছিল।

পাওয়েল ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ১৯৩৭ সালে জ্যামাইকায় জন্ম নেয়া পাওয়েল যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ব্রনক্সে বড় হন। ভিয়েতনাম যুদ্ধে তার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর একটি অংশ প্রচুর মানুষ হত্যা করে বলে অভিযোগ রয়েছে। সে যুদ্ধে তিনি আহত হন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে। তখনকার প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব পান পাওয়েল।

তাকে ১৯৮৯ সালে পানামা আক্রমণ এবং ১৯৯১ সালে পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধের স্থপতি বলা হয়। যে যুদ্ধের পর কুয়েতের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারান তৎকালীন ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন। তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডিক চেনির সঙ্গে পাওয়েল যুক্তরাষ্ট্রের কোল্ড ওয়ার পরবর্তী সামরিক বাহিনীকে নতুন রূপ দেন। বলা হয়ে থাকে তিনি সামরিক অভিযানে পাওয়েল মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করেন। যা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আদায়ে সামরিক অভিযান  এবং তার পক্ষে জনসমর্থন আদায়। শত্রুকে পরাজিত করার জন্য অপ্রতিরোধ্য শক্তি ব্যবহার করতে বলেন পাওেয়ল।

২০০৭ দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে  পাওয়েল নিজের বিষয়ে করেছিলেন, পাওয়েল মানে সমস্যা সমাধানকারী। তার দৃষ্টিভঙ্গি আছে, কিন্তু সে আদর্শবাদী নয়। তার আবেগ আছে কিন্তু সে ধর্মান্ধ নয়।