শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকাকে বহিষ্কারের দাবিতে আবারও অনশন

শিক্ষিকা ফারহানার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ছাড়াই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বৈঠক মুলতবি করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে রবির ঢাকা অফিসে এ বৈঠক শুরু হয়। টানা তিন ঘণ্টা বৈঠক চলার পর কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই এ রাত সাড়ে সাতটার দিকে এ বৈঠক শেষ হয়। বৈঠক শেষে রবিব দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ ও রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী মোবাইল ফোনে শাহজাদপুরের কান্দাপাড়ার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অপেক্ষমান শিক্ষার্থীদের বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর পরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতারা জরুরি সভা করে আবারও আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তারা রাত আটটা থেকে ৯টা পর্যন্ত অনশন ও লাগাতার অবস্থান ধর্মঘট শুরুর ঘোষণা দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু করেন।শিক্ষার্থীরা দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে শাহজাদপুরের কান্দাপাড়ার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশন ও বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকার শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের একাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি শুরু করেন। এ ঘটনায় আবারও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এরপর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শুক্রবার বিকেলে ঢাকা অফিসে সিন্ডিকেট বৈঠক ডাকেন। যথাসময়ে এ বৈঠক শুরু হলেও কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠকটি মুলতবি হয়ে যায়। এরপর পরই শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনের ডাক দেয়।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন গত ২৬ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় ওই বিভাগের প্রথম বর্ষের ১৪ ছাত্রের মাথার চুল কাচি দিয়ে কেটে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। চুলকেটে দেওয়ার এ অপমান সইতে না পেরে এক ছাত্র ঘুমের ওষুধ সেবন করে আত্নহত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও শিক্ষিকা ফারহানার অপসারণ দাবীতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করে। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের মুখে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনকে সাময়ীক বরখাস্ত করে ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের বদন্ত কমিটি গঠন করে। এরপর তদন্ত কমিটির কাছে নির্যাতিত ছাত্র, প্রত্যক্ষদর্শী,শিক্ষক,কর্মকর্তা,কর্মচারিরা স্বাক্ষ দিলেও শিক্ষিকা ফারহানা স্বাক্ষ না দিয়ে দুই সপ্তাহের সময় প্রার্থনা করেন। তদন্ত কমিটি প্রথমে ৩দিন,পরে আরও ছয় দিন ও সব শেষে ১৪ দিন সময় দেন। এ সময়ের শেষ দিন বৃহস্পতিবারও তিনি স্বাক্ষ দিতে আসেননি। ফলে তাকে আর সময় না দিয়ে তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে শামীম হোসেন বলেন, শুক্রবারের সিন্ডিকেট বৈঠকে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনের স্থায়ী বরখাস্তর সিদ্ধান্ত হওয়া আশা করেছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত না নিয়ে আমাদের পরীক্ষার হলে ফিরে যেতে বলেন। আমরা তাদের এ আদেশ গ্রহণ না করে শিক্ষিকা ফারহানার স্থায়ী বরখাস্ত না হওয়া পর্যন্ত আবারও আন্দোলন শুরু করেছি।

এ বিষয়ে জানতে রবিব দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ এবং রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী বলেন গতকার শুক্রবার সিন্ডিকেট সবায় কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। কিছু মতভেদের কারণে পরবর্তিতে আবার বৈঠক হবে। এখন আবার ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করেছে বলে শুনেছি।

এদিকে শনিবার সকাল থেকে সাত শিক্ষার্থী অনশনসহ আবার আন্দোলন শুরু করবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।b

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকাকে বহিষ্কারের দাবিতে আবারও অনশন

প্রকাশিত সময় : ০৩:৩৬:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২১

শিক্ষিকা ফারহানার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ছাড়াই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বৈঠক মুলতবি করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে রবির ঢাকা অফিসে এ বৈঠক শুরু হয়। টানা তিন ঘণ্টা বৈঠক চলার পর কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই এ রাত সাড়ে সাতটার দিকে এ বৈঠক শেষ হয়। বৈঠক শেষে রবিব দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ ও রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী মোবাইল ফোনে শাহজাদপুরের কান্দাপাড়ার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অপেক্ষমান শিক্ষার্থীদের বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর পরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতারা জরুরি সভা করে আবারও আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তারা রাত আটটা থেকে ৯টা পর্যন্ত অনশন ও লাগাতার অবস্থান ধর্মঘট শুরুর ঘোষণা দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু করেন।শিক্ষার্থীরা দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে শাহজাদপুরের কান্দাপাড়ার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশন ও বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকার শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের একাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি শুরু করেন। এ ঘটনায় আবারও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এরপর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শুক্রবার বিকেলে ঢাকা অফিসে সিন্ডিকেট বৈঠক ডাকেন। যথাসময়ে এ বৈঠক শুরু হলেও কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠকটি মুলতবি হয়ে যায়। এরপর পরই শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনের ডাক দেয়।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন গত ২৬ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় ওই বিভাগের প্রথম বর্ষের ১৪ ছাত্রের মাথার চুল কাচি দিয়ে কেটে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। চুলকেটে দেওয়ার এ অপমান সইতে না পেরে এক ছাত্র ঘুমের ওষুধ সেবন করে আত্নহত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও শিক্ষিকা ফারহানার অপসারণ দাবীতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করে। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের মুখে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনকে সাময়ীক বরখাস্ত করে ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের বদন্ত কমিটি গঠন করে। এরপর তদন্ত কমিটির কাছে নির্যাতিত ছাত্র, প্রত্যক্ষদর্শী,শিক্ষক,কর্মকর্তা,কর্মচারিরা স্বাক্ষ দিলেও শিক্ষিকা ফারহানা স্বাক্ষ না দিয়ে দুই সপ্তাহের সময় প্রার্থনা করেন। তদন্ত কমিটি প্রথমে ৩দিন,পরে আরও ছয় দিন ও সব শেষে ১৪ দিন সময় দেন। এ সময়ের শেষ দিন বৃহস্পতিবারও তিনি স্বাক্ষ দিতে আসেননি। ফলে তাকে আর সময় না দিয়ে তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে শামীম হোসেন বলেন, শুক্রবারের সিন্ডিকেট বৈঠকে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনের স্থায়ী বরখাস্তর সিদ্ধান্ত হওয়া আশা করেছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত না নিয়ে আমাদের পরীক্ষার হলে ফিরে যেতে বলেন। আমরা তাদের এ আদেশ গ্রহণ না করে শিক্ষিকা ফারহানার স্থায়ী বরখাস্ত না হওয়া পর্যন্ত আবারও আন্দোলন শুরু করেছি।

এ বিষয়ে জানতে রবিব দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ এবং রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী বলেন গতকার শুক্রবার সিন্ডিকেট সবায় কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। কিছু মতভেদের কারণে পরবর্তিতে আবার বৈঠক হবে। এখন আবার ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করেছে বলে শুনেছি।

এদিকে শনিবার সকাল থেকে সাত শিক্ষার্থী অনশনসহ আবার আন্দোলন শুরু করবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।b