রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাম্প্রতিক ঘটনার দায় এড়াতে পারে না ফেসবুক: তথ্যমন্ত্রী

ফেসবুক সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার দায় এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রোববার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সম্পাদক ফোরামের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, কুমিল্লার ঘটনাটি যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড না হতো তাহলে এ ঘটনা বিস্তৃত হয়ে সারাদেশে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না। রংপুরের পীরগঞ্জের ঘটনাও সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে। সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে এ ঘটনা ঘটে। আমি ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্য গিয়েছিলাম, সেখানে তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত পার্লামেন্টারি কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ নিয়ে বসেছিলাম। তথন এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। ইউরোপেও একটি জরিপে উঠে এসেছে ইউরোপের ৮০ ভাগ মানুষ মনে করে সোশ্যাল মিডিয়া অনেকক্ষেত্রে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি, সমাজের শান্তির জন্য হুমকি।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ইউরোপের পার্লামেন্টারি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট দেওয়া হয় এবং এ ধরনের ঘটনা ঘটে। নাসিরনগর, কক্সবাজারের রামুর ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছি তোমরা কী ব্যবস্থা গ্রহণ করো। তিনি জানিয়েছেন পারসনকে খুঁজে পাওয়া কঠিন। পারসন পরিচয় লুকিয়ে পোস্ট দেয়, কিংবা বিদেশ থেকে পোস্ট দেয়। উই ফাইন্ড অথরিটি, সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিস প্রোভাইডার। যে সকল ঘটনা ঘটেছে সেটির দায় সোশ্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। এটি নিয়ে ভাবার বিষয় আছে। শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বব্যাপী এটি উদ্বেগ তৈরি করেছে।

তিনি জানান, টেলিফোনের সিম কিনতেও তার আইডি কার্ড লাগে, একজন ব্যক্তি কয়টি সিম পাবে সেটিও নির্ধারণ করা আছে এবং একটি করপোরেট হাউজ কয়টি সিম পাবে সেটিও নির্ধারণ করা আছে। সরকারের পক্ষ থেকে অনেক আগেই সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। বাংলাদেশেও আইডি কার্ড দিয়ে যেন ফেসবুক আইডি খুলতে পারে, সেটি করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু ফেসবুক কর্তৃপক্ষ রাজি হয়নি। যারা ফেসবুকে চাকরি করেছে তারা চাকরি ছেড়ে দিয়ে এসে বলছেন যে সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হয়। তাদের সাবেক কর্মকর্তার বক্তব্য তারা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার চেয়েও নিজেদের লাভটাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। এটা আমার নয় তাদের সাবেক কর্মকর্তার বক্তব্য।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে ফেসবুকে ভুয়া পোস্ট দেওয়ার জন্য সেটির দায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বা সংশ্লিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। আমি মনে করি এটি নিয়ে ভাবার প্রয়োজন আছে। বিশ্বব্যাপী এটি ভাবনার বিষয়। এ সপ্তাহেই আমরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করবো। একই সঙ্গে আইএমইডির সঙ্গেও যোগাযোগ করবো।

তিনি আরও বলেন, শুধু ফেসবুকে পোস্টের জন্য এটি হয়েছে এককভাবে সেটি নয়। ফেসবুকে পোস্ট যদি না যেত তাহলে এমন পরিস্থিতি হতো না। এ ঘটনার জন্য যে কোরআন রেখেছে সে দায়ী, যে করিয়েছে সে দায়ী, যারা পোস্টের প্রেক্ষিতে যাচাই বাছাই না করে পরিস্থিতি তৈরি করলো তারাও দায়ী। একই সঙ্গে ফেসবুক কর্তৃপক্ষও দায়ী। সমাজে অস্থিরতা তৈরির জন্য এটি করা হয়েছে তারাও দায়ী। তারাও দায় এড়াতে পারে না। আগেও বিভিন্ন ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়া দিয়ে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না। সবকিছুই এমনভাবে পরিচালনা করা উচিত যাতে সেটি খারাপ কাজে ব্যবহার করা না হয়। যেতে স্বচ্ছতা থাকে। ফেসবুকে পরিচয় গোপন করে পোস্ট দেওয়া হয়, তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

সাম্প্রতিক ঘটনার দায় এড়াতে পারে না ফেসবুক: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত সময় : ০৪:১১:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২১

ফেসবুক সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার দায় এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রোববার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সম্পাদক ফোরামের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, কুমিল্লার ঘটনাটি যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড না হতো তাহলে এ ঘটনা বিস্তৃত হয়ে সারাদেশে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না। রংপুরের পীরগঞ্জের ঘটনাও সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে। সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে এ ঘটনা ঘটে। আমি ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্য গিয়েছিলাম, সেখানে তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত পার্লামেন্টারি কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ নিয়ে বসেছিলাম। তথন এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। ইউরোপেও একটি জরিপে উঠে এসেছে ইউরোপের ৮০ ভাগ মানুষ মনে করে সোশ্যাল মিডিয়া অনেকক্ষেত্রে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি, সমাজের শান্তির জন্য হুমকি।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ইউরোপের পার্লামেন্টারি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট দেওয়া হয় এবং এ ধরনের ঘটনা ঘটে। নাসিরনগর, কক্সবাজারের রামুর ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছি তোমরা কী ব্যবস্থা গ্রহণ করো। তিনি জানিয়েছেন পারসনকে খুঁজে পাওয়া কঠিন। পারসন পরিচয় লুকিয়ে পোস্ট দেয়, কিংবা বিদেশ থেকে পোস্ট দেয়। উই ফাইন্ড অথরিটি, সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিস প্রোভাইডার। যে সকল ঘটনা ঘটেছে সেটির দায় সোশ্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। এটি নিয়ে ভাবার বিষয় আছে। শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বব্যাপী এটি উদ্বেগ তৈরি করেছে।

তিনি জানান, টেলিফোনের সিম কিনতেও তার আইডি কার্ড লাগে, একজন ব্যক্তি কয়টি সিম পাবে সেটিও নির্ধারণ করা আছে এবং একটি করপোরেট হাউজ কয়টি সিম পাবে সেটিও নির্ধারণ করা আছে। সরকারের পক্ষ থেকে অনেক আগেই সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। বাংলাদেশেও আইডি কার্ড দিয়ে যেন ফেসবুক আইডি খুলতে পারে, সেটি করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু ফেসবুক কর্তৃপক্ষ রাজি হয়নি। যারা ফেসবুকে চাকরি করেছে তারা চাকরি ছেড়ে দিয়ে এসে বলছেন যে সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হয়। তাদের সাবেক কর্মকর্তার বক্তব্য তারা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার চেয়েও নিজেদের লাভটাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। এটা আমার নয় তাদের সাবেক কর্মকর্তার বক্তব্য।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে ফেসবুকে ভুয়া পোস্ট দেওয়ার জন্য সেটির দায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বা সংশ্লিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। আমি মনে করি এটি নিয়ে ভাবার প্রয়োজন আছে। বিশ্বব্যাপী এটি ভাবনার বিষয়। এ সপ্তাহেই আমরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করবো। একই সঙ্গে আইএমইডির সঙ্গেও যোগাযোগ করবো।

তিনি আরও বলেন, শুধু ফেসবুকে পোস্টের জন্য এটি হয়েছে এককভাবে সেটি নয়। ফেসবুকে পোস্ট যদি না যেত তাহলে এমন পরিস্থিতি হতো না। এ ঘটনার জন্য যে কোরআন রেখেছে সে দায়ী, যে করিয়েছে সে দায়ী, যারা পোস্টের প্রেক্ষিতে যাচাই বাছাই না করে পরিস্থিতি তৈরি করলো তারাও দায়ী। একই সঙ্গে ফেসবুক কর্তৃপক্ষও দায়ী। সমাজে অস্থিরতা তৈরির জন্য এটি করা হয়েছে তারাও দায়ী। তারাও দায় এড়াতে পারে না। আগেও বিভিন্ন ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়া দিয়ে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না। সবকিছুই এমনভাবে পরিচালনা করা উচিত যাতে সেটি খারাপ কাজে ব্যবহার করা না হয়। যেতে স্বচ্ছতা থাকে। ফেসবুকে পরিচয় গোপন করে পোস্ট দেওয়া হয়, তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না।