শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ত্রিপুরার ১৬ মসজিদে ভাঙচুর, ৩টিতে আগুন, শ্লীলতাহানি, নীরব মূলধারার মিডিয়া

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে নাকি ‘অল ইজ ওয়েল’। পুলিশ তেমনটাই বলছে। তাদের দাবি, তেমন কিছুই হয়নি। আইন-শৃঙ্খলা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। স্থানীয়দের অভিযোগ, মঙ্গলবার ভিইএইচপির তাণ্ডবের দিনেই মুসলিম নারীর শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মাকতুব মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, পানিসাগরের রাওবাজার এলাকার মুসলিমদের বাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। থানায় যে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল তাতে অবশ্য নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ থাকলেও, তা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়নি।

বিশ্বহিন্দুপরিষদের দুষ্কৃতিকারীরা স্থানীয় রোয়া জামে মসজিদে হামলার ছক কষেছিল। পুলিশ বলছে কিছু হয়নি, তবে উত্তর ত্রিপুরার পানিসাগর থানায় জমা পড়েছে অভিযোগ। সাতজন পুরুষ ও তিন নারী অভিযোগ দায়ের করেন।

বাংলাদেশে পূজামণ্ডপে সহিংসতার পর থেকে বিজেপি শাসিত অসম ও ত্রিপুরায় গেরুয়া তাণ্ডবকারীরা সংখ্যালঘু মনে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। ত্রিপুরার এসআইও কর্মী সুলতান হুসেন টুইটারে ভিএইচপি কর্মীদের নির্লজ্জ কাণ্ড-কারখানা সামনে এনেছেন।

অন্য সমাজকর্মী নূর উল ইসলাম বলেন, পুলিশ কেন হিন্দুত্ববাদী দুষ্কৃতিকারীদের এমন মিছিলের অনুমতি দিয়েছিল? তার অভিযোগ গোটা ব্যাপারটা হয়েছে বিপ্লব দেব সরকারের যোগসাজসে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করতে পারেনি। মুসলিমদের নিরাপত্তা দিতে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ।

স্থানীয় মুসলিমদের অনেকের অভিযোগ, মুসলিমদের ওপর হামলার অভিযোগ দেখেও চুপ করে রয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা দেখেও একইভাবে চুপ করে রয়েছে মূলধারার মিডিয়া। এটা আসেল দ্বিচারিতা।

টুইটারে কেউ কেউ অবশ্য অগ্নিদগ্ধ মসজিদের ছবি ও মুসলিমদের বাড়ি ভাঙচুরের ছবি পোস্ট করেছে। হ্যাসট্যাগ সেভ ত্রিপুরা মুসলিম নাম চালানো হয়েছে ক্যাম্পেনও। সামনে ভোট, সে কারণেই এমন সহিংতা দেখেও চুপ করে রয়েছে সিপিএমের মতো তথাকথিত দলগুলোও। কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপিকে নিশানা করে বলেছে ত্রিপুরার আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে।

ত্রিপুরার রাজপরিবারের অন্যতম সদস্য প্রদ্যোত মাণিক্য বলেছেন, এটি আমার রাজনৈতিক জীবনের একটি লজ্জাজনক অধ্যায়।
সূত্র : পুবের কলম

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ত্রিপুরার ১৬ মসজিদে ভাঙচুর, ৩টিতে আগুন, শ্লীলতাহানি, নীরব মূলধারার মিডিয়া

প্রকাশিত সময় : ০৯:৫৪:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে নাকি ‘অল ইজ ওয়েল’। পুলিশ তেমনটাই বলছে। তাদের দাবি, তেমন কিছুই হয়নি। আইন-শৃঙ্খলা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। স্থানীয়দের অভিযোগ, মঙ্গলবার ভিইএইচপির তাণ্ডবের দিনেই মুসলিম নারীর শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মাকতুব মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, পানিসাগরের রাওবাজার এলাকার মুসলিমদের বাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। থানায় যে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল তাতে অবশ্য নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ থাকলেও, তা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়নি।

বিশ্বহিন্দুপরিষদের দুষ্কৃতিকারীরা স্থানীয় রোয়া জামে মসজিদে হামলার ছক কষেছিল। পুলিশ বলছে কিছু হয়নি, তবে উত্তর ত্রিপুরার পানিসাগর থানায় জমা পড়েছে অভিযোগ। সাতজন পুরুষ ও তিন নারী অভিযোগ দায়ের করেন।

বাংলাদেশে পূজামণ্ডপে সহিংসতার পর থেকে বিজেপি শাসিত অসম ও ত্রিপুরায় গেরুয়া তাণ্ডবকারীরা সংখ্যালঘু মনে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। ত্রিপুরার এসআইও কর্মী সুলতান হুসেন টুইটারে ভিএইচপি কর্মীদের নির্লজ্জ কাণ্ড-কারখানা সামনে এনেছেন।

অন্য সমাজকর্মী নূর উল ইসলাম বলেন, পুলিশ কেন হিন্দুত্ববাদী দুষ্কৃতিকারীদের এমন মিছিলের অনুমতি দিয়েছিল? তার অভিযোগ গোটা ব্যাপারটা হয়েছে বিপ্লব দেব সরকারের যোগসাজসে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করতে পারেনি। মুসলিমদের নিরাপত্তা দিতে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ।

স্থানীয় মুসলিমদের অনেকের অভিযোগ, মুসলিমদের ওপর হামলার অভিযোগ দেখেও চুপ করে রয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা দেখেও একইভাবে চুপ করে রয়েছে মূলধারার মিডিয়া। এটা আসেল দ্বিচারিতা।

টুইটারে কেউ কেউ অবশ্য অগ্নিদগ্ধ মসজিদের ছবি ও মুসলিমদের বাড়ি ভাঙচুরের ছবি পোস্ট করেছে। হ্যাসট্যাগ সেভ ত্রিপুরা মুসলিম নাম চালানো হয়েছে ক্যাম্পেনও। সামনে ভোট, সে কারণেই এমন সহিংতা দেখেও চুপ করে রয়েছে সিপিএমের মতো তথাকথিত দলগুলোও। কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপিকে নিশানা করে বলেছে ত্রিপুরার আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে।

ত্রিপুরার রাজপরিবারের অন্যতম সদস্য প্রদ্যোত মাণিক্য বলেছেন, এটি আমার রাজনৈতিক জীবনের একটি লজ্জাজনক অধ্যায়।
সূত্র : পুবের কলম