স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা দিতে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাকেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে। রাজধানীতে আটটি কেন্দ্র করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রতিদিন পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হবে।
আজ সোমবার (১ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়। রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ টিকাদান কেন্দ্রে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
কেন্দ্রটিতে করোনার প্রথম টিকা পেয়েছেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহসান হোসেন। টিকা নেওয়ার পর নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন তাহসান। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন কার্যক্রমে অংশ নিতে পেরে নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে করছি। শুরুর দিকে একটু ভয় কাজ করছিলো। তবে এখন সত্যিই খুব ভালো লাগছে এটা ভেবে যে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে আমিই প্রথম টিকা নিয়েছি। করোনা ভাইরাসের ভয়টা আমার মধ্যে ছিলো, এখন আর তা থাকবে না।

দেশের করোনা টিকা নেওয়া প্রথম ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থী হিসেবে আমি সহপাঠী শিক্ষার্থীদের সবাইকে আহ্বান জানায় সবাই যেনো টিকা কার্যক্রমে অংশ নেন।
তাহসানের বাবা তোফাজ্জ্বল হোসেন বলেন, বাবা হিসেবে আমি গর্বিত। আমি ৫০ বছর বয়সে করোনা টিকা দিয়েছি। আমার সন্তান মাত্র ১৫ বছর বয়সে টিকা নিয়েছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ।
সব শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের টিকা কার্যক্রমে সহযোগিতা আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, করোনার কারণে অনেক শিক্ষার্থী এখনও স্কুলে আসতে ভয় পায়। আমি মনে করি, টিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ায় এখন শিক্ষার্থীরা ভয় পাবে না
এছাড়া আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজসহ রাজধানীর ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিকা দেওয়া হবে। সেই কেন্দ্রগুলো হলো- হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সাউথপয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ, চিটাগং গ্রামার স্কুল, আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা কমার্স কলেজ, কাকলি হাই স্কুল এন্ড কলেজ, সাউথ ব্রিজ স্কুল।
ডা. শামসুল হক বলেন, টিকা পেতে স্কুল শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। তারা জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে নিবন্ধন করতে পারবে। তারপর মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে টিকা নেয়ার তারিখ ও টিকাদান কেন্দ্রের নাম জানানো হবে। শিক্ষার্থীদের টিকা নেয়ার জন্য তাদের টিকা কার্ড এবং জন্মনিবন্ধন কার্ড নিয়ে টিকা কেন্দ্রে আসতে হবে। যে ৮টি কেন্দ্র নির্বাচন করা হয়েছে সেখানে তারা নিজেদের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আশপাশের নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে পারবেন। ফাইজার টিকাটি তাপমাত্রা সংবেদনশীল। যে কেন্দ্র, যে বুথে এই টিকা দিতে হয় সেটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হতে হয়। এ বিষয়টি বিবেচনা করে যেখানে আমাদের এই সুযোগ আছে সেই স্কুলগুলোকে নির্বাচন করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ২৫টি বুথ করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হলো, প্রতিদিন যেন ৪ থেকে ৫ হাজার শিশুকে আমরা টিকা দিতে পারি। আমরা অনেকগুলো স্কুলের তালিকা চেয়েছিলাম কিন্তু মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রাথমিকভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাপনা রয়েছে এমন ৮টি স্কুলের তালিকা দিয়েছে। তবে পরবর্তী সময়ে এই কার্যক্রমকে ঢাকা শহরসহ আরো প্রায় ২২টি জেলায় শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচি শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে প্রতিটি জেলায় এই কর্মমসূচি সম্প্রসারিত করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, টিকা নেওয়ার পর কোনো শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এই টিকাদান কার্যক্রমে শিশুদের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত ফাইজারের টিকা ব্যবহার করা হবে।-ভোরের কাগজ

দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম ডেস্ক 

























