শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাড় নেই, চাপ দেবেন না’ সেই আকিবের জ্ঞান ফিরেছে

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদী জে আকিবের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি হাসপাতালের আইসিইউ বেডে এখন নড়াচড়া করছেন।

রোববার (৩১ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আকিবের চিকিৎসার তত্ত্বাবধানে থাকা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নেতা ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান।

তিনি বলেন, শক্ত কিছুর আঘাতে আকিবের মাথায় রক্ত জমাট বেঁধেছিল। অস্ত্রোপচার করে সেগুলো অপসারণ করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় তার জ্ঞান ফিরেছে। তবে এখনও তাকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

হাসপাতালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আকিবের বাবা গোলাম ফারুক বলেন, আমার ছেলের জন্য সবাই দোয়া করবেন, যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। মেডিকেলের ছাত্রদের আমি বলবো, তারা যেন রাজনীতির নামে নিজেরা মারামারি না করে।

এর আগে চিকিৎসাধীন আকিবের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ছবিতে আকিবের মাথায় ব্যান্ডেজ দেখা যায় এবং ওই ব্যান্ডেজের ওপর লেখা- ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না।’

গত শুক্র এবং শনিবার চমেক ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত আকিবকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার রাতে চমেকের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. তৌফিকুর রহমান বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- সাদ মোহাম্মদ গালিব (২১), আহসানুল কবির রুমন (২১), জাহিদুল ইসলাম জিসান (২১), মাহাদি বিন হাশিম (২৪), আসিফ বিন তাকি (২৫), ইমতিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী (২১), মাহতাব উদ্দিন রাফি (২১), জাহিদুল আলম জিসান (২১), সৌরভ বেপারী (২১), মো. আনিস (২১), রক্তিম দে (২১), এইচ এম আসহাব উদ্দিন (২১), তানভীর ইসলাম (২১), নাজমুস সাদাত আসিফ (২১), এনামুল হাসান সীমান্ত (২১) ও রিজওয়ান আহমেদ (২১)।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চমেকে এককভাবে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রলীগের গ্রুপ। নাছির চমেক হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিও ছিলেন দীর্ঘদিন। গত বছরের ২০ আগস্ট এ পদে আসেন ব্যারিস্টার নওফেল। সে থেকে ধাপে ধাপে চমেক ক্যাম্পাসে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে নওফেল গ্রুপ। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একপর্যায়ে উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়ায়। ছোটখাটো সংঘর্ষের পর গত ২৭ এপ্রিল সিএমসি ক্যান্টিনে এক ছাত্রলীগ নেতাকে কটূক্তির ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে বড় সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন। এ ঘটনার পর পাঁচলাইশ থানায় উভয় গ্রুপ পাল্টাপাল্টি মামলা করে। একইসঙ্গে চমেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট ডাকেন। পরে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সমঝোতা হলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

সর্বশেষ গত শুক্র ও শনিবার সংঘর্ষের পর জরুরি বৈঠকে বসে প্রশাসন। বৈঠক শেষে মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

হাড় নেই, চাপ দেবেন না’ সেই আকিবের জ্ঞান ফিরেছে

প্রকাশিত সময় : ০৬:১২:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদী জে আকিবের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি হাসপাতালের আইসিইউ বেডে এখন নড়াচড়া করছেন।

রোববার (৩১ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আকিবের চিকিৎসার তত্ত্বাবধানে থাকা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নেতা ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান।

তিনি বলেন, শক্ত কিছুর আঘাতে আকিবের মাথায় রক্ত জমাট বেঁধেছিল। অস্ত্রোপচার করে সেগুলো অপসারণ করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় তার জ্ঞান ফিরেছে। তবে এখনও তাকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

হাসপাতালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আকিবের বাবা গোলাম ফারুক বলেন, আমার ছেলের জন্য সবাই দোয়া করবেন, যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। মেডিকেলের ছাত্রদের আমি বলবো, তারা যেন রাজনীতির নামে নিজেরা মারামারি না করে।

এর আগে চিকিৎসাধীন আকিবের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ছবিতে আকিবের মাথায় ব্যান্ডেজ দেখা যায় এবং ওই ব্যান্ডেজের ওপর লেখা- ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না।’

গত শুক্র এবং শনিবার চমেক ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত আকিবকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার রাতে চমেকের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. তৌফিকুর রহমান বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- সাদ মোহাম্মদ গালিব (২১), আহসানুল কবির রুমন (২১), জাহিদুল ইসলাম জিসান (২১), মাহাদি বিন হাশিম (২৪), আসিফ বিন তাকি (২৫), ইমতিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী (২১), মাহতাব উদ্দিন রাফি (২১), জাহিদুল আলম জিসান (২১), সৌরভ বেপারী (২১), মো. আনিস (২১), রক্তিম দে (২১), এইচ এম আসহাব উদ্দিন (২১), তানভীর ইসলাম (২১), নাজমুস সাদাত আসিফ (২১), এনামুল হাসান সীমান্ত (২১) ও রিজওয়ান আহমেদ (২১)।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চমেকে এককভাবে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রলীগের গ্রুপ। নাছির চমেক হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিও ছিলেন দীর্ঘদিন। গত বছরের ২০ আগস্ট এ পদে আসেন ব্যারিস্টার নওফেল। সে থেকে ধাপে ধাপে চমেক ক্যাম্পাসে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে নওফেল গ্রুপ। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একপর্যায়ে উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়ায়। ছোটখাটো সংঘর্ষের পর গত ২৭ এপ্রিল সিএমসি ক্যান্টিনে এক ছাত্রলীগ নেতাকে কটূক্তির ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে বড় সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন। এ ঘটনার পর পাঁচলাইশ থানায় উভয় গ্রুপ পাল্টাপাল্টি মামলা করে। একইসঙ্গে চমেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট ডাকেন। পরে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সমঝোতা হলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

সর্বশেষ গত শুক্র ও শনিবার সংঘর্ষের পর জরুরি বৈঠকে বসে প্রশাসন। বৈঠক শেষে মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ