শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুই দাবিতে আন্দোলনে রাবির তাপসী রাবেয়া হলের ছাত্রীরা

দুই দাবিতে আন্দোলনে রাবির তাপসী রাবেয়া হলের ছাত্রীরা

হলের ডাইনিংয়ে বাধ্যতামূলক খাওয়া ও ‘সান্ধ্য আইন’ (সন্ধ্যায় হলে প্রবেশের নিয়ম) বাতিলের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তাপসী রাবেয়া হলের ছাত্রীরা।

শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে হলের সামনে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন তারা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা) ছাত্রীরা সেখানেই অবস্থান করছেন।

আন্দোলনরত ছাত্রীরা জানান, হল প্রশাসন সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ছাত্রীদের ডাইনিংয়ে খেতে বাধ্য করেছে। অন্যথায় সিট বাতিল করা হবে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

শুক্রবার বিকেলে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে আলোচনায় বসেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌসী মহল। তবে সিদ্ধান্তে না এসেই আলোচনা থেকে তিনি চলে যান বলে অভিযোগ করেন ছাত্রীরা।  তাপসী রাবেয়া হলের সামনে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে এ বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্রীরা।

jagonews24

ছাত্রীদের অভিযোগ, ডাইনিংয়ে দাম বেশি নিয়েও মানসম্মত খাবার দেওয়া হয় না। হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, হল প্রাধক্ষ্য গত মাসে নোটিশ দিয়ে জানান, ছাত্রীদের ডাইনিংয়ে খেতে হবে, অন্যথায় সিট বাতিল করা হবে। খাবারের দাম কমানো হবে কিছুদিনের মধ্যে। কিন্তু দাম কমানো হয়নি, খাবারের মানও খারাপ। তাই আমরা আন্দোলন করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলী  তিনি বলেন, ‘ঘটনা শোনার পর প্রশাসনের সবাই আমরা এসেছি। ছাত্রীদের দাবিগুলো আমরা শুনব। দেখা যাক কী করা যায় এ বিষয়ে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে মেয়েদেরকে হলে ফিরতে হবে।  কিন্তু ছাত্রীরা বলছেন, ক্লাসের পরেও অ্যাসাইনমেন্ট, ব্যক্তিগত নানা কাজ থাকে। পাশাপাশি আড্ডা, বিনোদন, সাংস্কৃতিক চর্চাও জরুরি। এসব কাজ সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে শেষ করা সম্ভব না। এরপর হলে ফিরলে কর্তৃপক্ষ বাজে আচরণ করে। কখনও কখনও ঢুকতে দেয় না।

আর এই বিধিনিষেধ কেবল মেয়েদের হলে, ছেলেদের হলে যেকোনো সময় ঢোকা যায়।

সুমাইয়া রহমান বলেন, ‘হলের গণরুমে যেসব ছাত্রী থাকে তাদের হল ডাইনিংয়ে খাওয়া বাধ্যতামূলক করেছে হল কর্তৃপক্ষ। হলের খাবার খারাপ, বাসি। যা খাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না। আর হলে ডাইনিংয়ে যারা কাজ করে তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে।’

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ ফেরদৌসী মহল বলেন, ‘হলের গণরুমের পাশে ৪০ জনের রান্নার ব্যবস্থা আছে। সেখানে ১৪০ জন রান্না করছে। কিন্তু দীর্ঘদিন হল বন্ধ থাকায় বিদ্যুতের লাইনসহ অনেক কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় রান্না করতে গিয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এই আশঙ্কা থেকে এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

দুই দাবিতে আন্দোলনে রাবির তাপসী রাবেয়া হলের ছাত্রীরা

প্রকাশিত সময় : ১১:০৩:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ নভেম্বর ২০২১

হলের ডাইনিংয়ে বাধ্যতামূলক খাওয়া ও ‘সান্ধ্য আইন’ (সন্ধ্যায় হলে প্রবেশের নিয়ম) বাতিলের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তাপসী রাবেয়া হলের ছাত্রীরা।

শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে হলের সামনে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন তারা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা) ছাত্রীরা সেখানেই অবস্থান করছেন।

আন্দোলনরত ছাত্রীরা জানান, হল প্রশাসন সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ছাত্রীদের ডাইনিংয়ে খেতে বাধ্য করেছে। অন্যথায় সিট বাতিল করা হবে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

শুক্রবার বিকেলে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে আলোচনায় বসেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌসী মহল। তবে সিদ্ধান্তে না এসেই আলোচনা থেকে তিনি চলে যান বলে অভিযোগ করেন ছাত্রীরা।  তাপসী রাবেয়া হলের সামনে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে এ বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্রীরা।

jagonews24

ছাত্রীদের অভিযোগ, ডাইনিংয়ে দাম বেশি নিয়েও মানসম্মত খাবার দেওয়া হয় না। হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, হল প্রাধক্ষ্য গত মাসে নোটিশ দিয়ে জানান, ছাত্রীদের ডাইনিংয়ে খেতে হবে, অন্যথায় সিট বাতিল করা হবে। খাবারের দাম কমানো হবে কিছুদিনের মধ্যে। কিন্তু দাম কমানো হয়নি, খাবারের মানও খারাপ। তাই আমরা আন্দোলন করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলী  তিনি বলেন, ‘ঘটনা শোনার পর প্রশাসনের সবাই আমরা এসেছি। ছাত্রীদের দাবিগুলো আমরা শুনব। দেখা যাক কী করা যায় এ বিষয়ে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে মেয়েদেরকে হলে ফিরতে হবে।  কিন্তু ছাত্রীরা বলছেন, ক্লাসের পরেও অ্যাসাইনমেন্ট, ব্যক্তিগত নানা কাজ থাকে। পাশাপাশি আড্ডা, বিনোদন, সাংস্কৃতিক চর্চাও জরুরি। এসব কাজ সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে শেষ করা সম্ভব না। এরপর হলে ফিরলে কর্তৃপক্ষ বাজে আচরণ করে। কখনও কখনও ঢুকতে দেয় না।

আর এই বিধিনিষেধ কেবল মেয়েদের হলে, ছেলেদের হলে যেকোনো সময় ঢোকা যায়।

সুমাইয়া রহমান বলেন, ‘হলের গণরুমে যেসব ছাত্রী থাকে তাদের হল ডাইনিংয়ে খাওয়া বাধ্যতামূলক করেছে হল কর্তৃপক্ষ। হলের খাবার খারাপ, বাসি। যা খাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না। আর হলে ডাইনিংয়ে যারা কাজ করে তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে।’

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ ফেরদৌসী মহল বলেন, ‘হলের গণরুমের পাশে ৪০ জনের রান্নার ব্যবস্থা আছে। সেখানে ১৪০ জন রান্না করছে। কিন্তু দীর্ঘদিন হল বন্ধ থাকায় বিদ্যুতের লাইনসহ অনেক কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় রান্না করতে গিয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এই আশঙ্কা থেকে এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’