বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় কার্যালয়ে ঢুকে গুলি, কাউন্সিলরসহ নিহত ২

কুমিল্লা নগরীর ১৭নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মো. সোহেল (৫২) এবং আওয়ামী লীগ নেতা হরিপদ সাহা ( ৪৫) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন।

সোমবার (২২ নভেম্বর) বিকালে নগরীর পাথুরীয়াপাড়া পানুয়া খানকা শরীফ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. মহিউদ্দিন দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আহতরা হলেন, আবদুল জলিলের ছেলে মাজেদুল হক বাদল (৩৯), দৌলত মিয়ার ছেলে জুয়েল (৪০), ফজলুল করিমের ছেলে এড. সোহেল চৌধুরী (৪৩),রাসেল (২৯) এবং খোরশেদ মিয়ার ছেলে আউয়াল হোসেন রিজু (২৩)। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে চারটার সময় কয়েকজন মুখোশধারী লোক কাউন্সিলরের অফিসে প্রবেশ করে। প্রবেশ করেই তারা এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। গুলিবিদ্ধ সোহেল সঙ্গে সঙ্গেই নিজের চেয়ার থেকে পড়ে যান। শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা সীমান্তবর্তী বউবাজার এলাকার দিকে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা জানান, হামলাকারীরা ১৬ নং ওয়ার্ডের হতে পারেন। চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই ওয়ার্ডের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে বিরোধ চলছিল কাউন্সিলরের।

কাউন্সিলর সোহেলে ভাগ্নে মোহাম্মদ হানিফ জানান, সবাই আসরের নামাজ পড়ছিল। এ সময় প্রচণ্ড গোলাগুলির আওয়াজ শোনা যায়। দৌড়ে গিয়ে দেখি মামা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। আমি নিজে মামাকে কাঁধে করে বের করি।

পুলিশ জানায়, বিকেল সাড়ে চারটায় কুমিল্লা নগরের পাথরিয়াপাড়া থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে কাউন্সিলর কার্যালয়ে বসা ছিলেন সোহেল। এ সময় কালো মুখোশধারী একদল দুর্বৃত্ত কার্যালয়ে ঢুকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পিস্তলের দুটি গুলি তাঁর মাথায়, দুটি বুকে, অন্য চারটি গুলি পেট ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাগে। এ সময় আরও অন্তত পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ মারা যান। গুলিবিদ্ধ অন্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মো. সোহেল সুজানগর এলাকার শাহজাহান মিয়ার ছেলে। ছয় ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তাঁর স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে আছে। তিনি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়রও ছিলেন। তার বাড়ি নগরের সুজানগর এলাকায়। ২০১২ ও ২০১৭ সালে তিনি কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি প্যানেল মেয়র ছিলেন।

এদিকে ঘটনার পর শত শত মানুষ পাথরিয়াপাড়া সড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন। র‍্যাব ও পুলিশকে ক্ষুব্ধ জনতাকে সরানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

কুমিল্লায় কার্যালয়ে ঢুকে গুলি, কাউন্সিলরসহ নিহত ২

প্রকাশিত সময় : ০৯:১৩:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ নভেম্বর ২০২১

কুমিল্লা নগরীর ১৭নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মো. সোহেল (৫২) এবং আওয়ামী লীগ নেতা হরিপদ সাহা ( ৪৫) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন।

সোমবার (২২ নভেম্বর) বিকালে নগরীর পাথুরীয়াপাড়া পানুয়া খানকা শরীফ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. মহিউদ্দিন দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আহতরা হলেন, আবদুল জলিলের ছেলে মাজেদুল হক বাদল (৩৯), দৌলত মিয়ার ছেলে জুয়েল (৪০), ফজলুল করিমের ছেলে এড. সোহেল চৌধুরী (৪৩),রাসেল (২৯) এবং খোরশেদ মিয়ার ছেলে আউয়াল হোসেন রিজু (২৩)। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে চারটার সময় কয়েকজন মুখোশধারী লোক কাউন্সিলরের অফিসে প্রবেশ করে। প্রবেশ করেই তারা এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। গুলিবিদ্ধ সোহেল সঙ্গে সঙ্গেই নিজের চেয়ার থেকে পড়ে যান। শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা সীমান্তবর্তী বউবাজার এলাকার দিকে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা জানান, হামলাকারীরা ১৬ নং ওয়ার্ডের হতে পারেন। চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই ওয়ার্ডের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে বিরোধ চলছিল কাউন্সিলরের।

কাউন্সিলর সোহেলে ভাগ্নে মোহাম্মদ হানিফ জানান, সবাই আসরের নামাজ পড়ছিল। এ সময় প্রচণ্ড গোলাগুলির আওয়াজ শোনা যায়। দৌড়ে গিয়ে দেখি মামা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। আমি নিজে মামাকে কাঁধে করে বের করি।

পুলিশ জানায়, বিকেল সাড়ে চারটায় কুমিল্লা নগরের পাথরিয়াপাড়া থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে কাউন্সিলর কার্যালয়ে বসা ছিলেন সোহেল। এ সময় কালো মুখোশধারী একদল দুর্বৃত্ত কার্যালয়ে ঢুকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পিস্তলের দুটি গুলি তাঁর মাথায়, দুটি বুকে, অন্য চারটি গুলি পেট ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাগে। এ সময় আরও অন্তত পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ মারা যান। গুলিবিদ্ধ অন্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মো. সোহেল সুজানগর এলাকার শাহজাহান মিয়ার ছেলে। ছয় ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তাঁর স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে আছে। তিনি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়রও ছিলেন। তার বাড়ি নগরের সুজানগর এলাকায়। ২০১২ ও ২০১৭ সালে তিনি কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি প্যানেল মেয়র ছিলেন।

এদিকে ঘটনার পর শত শত মানুষ পাথরিয়াপাড়া সড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন। র‍্যাব ও পুলিশকে ক্ষুব্ধ জনতাকে সরানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে।