রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিনবার রক্তক্ষরণ হয়েছে খালেদা জিয়ার: চিকিৎসকরা ‘হেল্পলেস’

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শরীরে তিনবার রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। তারা পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ে ‘হেল্পলেস’ বলে জানান।

খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বলে জানান তারা।

রবিবার সন্ধ্যায় তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা বিএনপি চেয়ারপারসের বাসভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ডা. ফখরুদ্দীন জানান, এ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার তিনবার রক্তক্ষরণ হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার পর বর্তমানে তিনি স্ট্যাবল আছেন। তবে পুনরায় রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা আগামী ছয় সপ্তাহে ৬০ ভাগ।

খালেদা জিয়ার এ চিকিৎসক জানান, তৃতীয়বারের রক্তক্ষরণের উৎস জানা যায়নি। এ সময়ে খালেদা জিয়ার অন্ত্রে প্রচুর রক্ত জমাট বেঁধে থাকতে দেখা যায়। পরে অ্যান্ড্রোসকপি করা হয়। তবে রক্তক্ষরণের উৎস জানা যায়নি। এর উৎস জানাতে বিদেশে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে তারা মত দেন।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। লিভারে স্বাভাবিক রক্ত পরিচালন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এটি টিপস প্রক্রিয়ায় লিভারে রক্ত পরিচালন চাপ কমাতে হবে। এই চিকিৎসা মূলত যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্রেই সম্ভব।

তিনি বলেন, লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে শুধু দেশের না উপমহাদেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর চেয়ে বেশি কিছু আর আমারে করার নাই। কিন্তু ঝুঁকির মাত্রা লিভারে আবারো রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা আগামি সপ্তাহে ৫০ ভাগ বাড়বে, ৬ সপ্তাহে ৭০ ভাগ বাড়বে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী, অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম মোহসীন, অধ্যাপক ডা. শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা আল মামুন।

তারা বলেন, ১২ নভেম্বর শুক্রবার দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তির পর বাসায় যান বিএনপি চেয়ারপারসন। এরপর হঠাৎ করেই দুর্বল হয়ে পড়েন। অত্যন্ত ফ্যাকাশে হয়ে পড়েন। হিমোগ্লোবিন ড্রপ করে। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করার দরকার হয়। ভর্তি করার পর ম্যাসিভ রক্তবমি হয়। কলাপস করে সকে চলে গিয়েছিলেন। লাইভ সেভিং ফ্লুইড দেয়া হয়, রক্ত দেওয়া হয়। দুই ব্যাগ প্লাজমা দেয়া হয়।

এফ এম সিদ্দিকী বলেন, খালেদা জিয়ার লিভারে পরিপাকীয় চাপ কমাতে বাইপাস প্রক্রিয়া সঞ্চালন নালী তৈরি করতে হবে। এটি টিপস পদ্ধতিতে করা হয় যে প্রযুক্তি শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্রেই সম্ভব। দ্রুত এই সঞ্চালন নালী করা না গেলে বেগম জিয়ার  লিভারে রক্তক্ষরণ ঝুঁকি এক সপ্তাহে ৫০ ভাগ বাড়েবে, পরবর্তি ৬ সপ্তাহে সেই ঝুঁকি বাড়বে ৭০ শতাংশ। এরপরে চিকিৎসকদের আওতায় নাও থাকতে পারে।   –

দেশ রূপান্তর

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

তিনবার রক্তক্ষরণ হয়েছে খালেদা জিয়ার: চিকিৎসকরা ‘হেল্পলেস’

প্রকাশিত সময় : ১০:৩১:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২১

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শরীরে তিনবার রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। তারা পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ে ‘হেল্পলেস’ বলে জানান।

খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বলে জানান তারা।

রবিবার সন্ধ্যায় তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা বিএনপি চেয়ারপারসের বাসভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ডা. ফখরুদ্দীন জানান, এ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার তিনবার রক্তক্ষরণ হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার পর বর্তমানে তিনি স্ট্যাবল আছেন। তবে পুনরায় রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা আগামী ছয় সপ্তাহে ৬০ ভাগ।

খালেদা জিয়ার এ চিকিৎসক জানান, তৃতীয়বারের রক্তক্ষরণের উৎস জানা যায়নি। এ সময়ে খালেদা জিয়ার অন্ত্রে প্রচুর রক্ত জমাট বেঁধে থাকতে দেখা যায়। পরে অ্যান্ড্রোসকপি করা হয়। তবে রক্তক্ষরণের উৎস জানা যায়নি। এর উৎস জানাতে বিদেশে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে তারা মত দেন।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। লিভারে স্বাভাবিক রক্ত পরিচালন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এটি টিপস প্রক্রিয়ায় লিভারে রক্ত পরিচালন চাপ কমাতে হবে। এই চিকিৎসা মূলত যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্রেই সম্ভব।

তিনি বলেন, লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে শুধু দেশের না উপমহাদেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর চেয়ে বেশি কিছু আর আমারে করার নাই। কিন্তু ঝুঁকির মাত্রা লিভারে আবারো রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা আগামি সপ্তাহে ৫০ ভাগ বাড়বে, ৬ সপ্তাহে ৭০ ভাগ বাড়বে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী, অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম মোহসীন, অধ্যাপক ডা. শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা আল মামুন।

তারা বলেন, ১২ নভেম্বর শুক্রবার দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তির পর বাসায় যান বিএনপি চেয়ারপারসন। এরপর হঠাৎ করেই দুর্বল হয়ে পড়েন। অত্যন্ত ফ্যাকাশে হয়ে পড়েন। হিমোগ্লোবিন ড্রপ করে। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করার দরকার হয়। ভর্তি করার পর ম্যাসিভ রক্তবমি হয়। কলাপস করে সকে চলে গিয়েছিলেন। লাইভ সেভিং ফ্লুইড দেয়া হয়, রক্ত দেওয়া হয়। দুই ব্যাগ প্লাজমা দেয়া হয়।

এফ এম সিদ্দিকী বলেন, খালেদা জিয়ার লিভারে পরিপাকীয় চাপ কমাতে বাইপাস প্রক্রিয়া সঞ্চালন নালী তৈরি করতে হবে। এটি টিপস পদ্ধতিতে করা হয় যে প্রযুক্তি শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্রেই সম্ভব। দ্রুত এই সঞ্চালন নালী করা না গেলে বেগম জিয়ার  লিভারে রক্তক্ষরণ ঝুঁকি এক সপ্তাহে ৫০ ভাগ বাড়েবে, পরবর্তি ৬ সপ্তাহে সেই ঝুঁকি বাড়বে ৭০ শতাংশ। এরপরে চিকিৎসকদের আওতায় নাও থাকতে পারে।   –

দেশ রূপান্তর