রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে নারীদের অধিকার বাস্তবায়নে তালেবানের আদেশ জারি

নারীদের অধিকার বাস্তবায়নের আদেশ দিয়ে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার তাদের সর্বোচ্চ নেতার বরাতে শুক্রবার একটি ডিক্রি জারি করেছে। ডিক্রিতে নারীদের অধিকার বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে ‘সিরিয়াস তথা আন্তরিক পদক্ষেপ’ নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার বরাতে ডিক্রিতে বলা হয়েছে, ‘ইসলামী আমিরাতের নেতৃত্ব সমস্ত প্রাসঙ্গিক সংস্থাকে… নারীদের অধিকার কার্যকর করার জন্য সিরিয়াস তথা আন্তরিক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে’।

এতে বলা হয়েছে, নারীদের ‘সম্পত্তি (প্রোপার্টি)’ ভাবা উচিত নয় এবং বিয়েতে অবশ্যই তাদের সম্মতি নেওয়া উচিত। তবে এতে মেয়েদের হাইস্কুলে যাওয়া শুরু করার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে আফগানিস্তানে এখনো মেয়েদের হাইস্কুলগুলো বন্ধ রয়েছে।

নারীদের অধিকারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে তালেবান এই ডিক্রি জারি করল।

তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের প্রকাশ করা ডিক্রিতে বলা হয়েছে, একজন নারী কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয় বরং একজন নারী একজন স্বাধীন মানুষ। জোর করে কেউ কোনো নারীকে কারও হাতে তুলে দিতে পারে না।

এই ডিক্রিতে নারীদের বিবাহ পরিচালনা এবং তাদের সম্পত্তির অধিকার নিয়েও কথা বলা হয়েছে। ডিক্রিতে বলা হয়েছে, নারীদের বিবাহে জোর করা উচিত নয় এবং মৃত স্বামীর সম্পত্তিতে বিধবা নারীদের অংশ থাকা উচিত।

এতে আরও বলা হয়েছে, সিদ্ধান্ত প্রণয়নের সময় আদালতের এই বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা উচিত। একইসঙ্গে ধর্মবিষয়ক এবং তথ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে এসব অধিকারে উৎসাহ দেওয়া উচিত।

তবে বাড়ির বাইরে এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের বাইরে আফগান নারীরা কেমন কাজের সুযোগ পাবে তালেবানের ডিক্রিতে সেটা উল্লেখ করা হয়নি। আর এই বিষয়টি নিয়েই তালেবান আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি চাপে রয়েছে।

ডিক্রিতে মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষা বা নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। আফগানিস্তানে এখনো সরকারি চাকরিতে নারীদের ফিরে আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের প্রথম মেয়াদের শাসনে নারীদের শিক্ষা সহ নানা অধিকার থেকে মারাত্মকভাবে বঞ্চিত করা হয়েছিল। নারীদের সারা শরীর ঢেকে রাখা বোরকা পরতে বাধ্য করা হয়েছিল, শুধুমাত্র একজন পুরুষ অভিভাবকের সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং ঘরের বাইরে কাজ ও শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

অবশেষে নারীদের অধিকার বাস্তবায়নে তালেবানের আদেশ জারি

প্রকাশিত সময় : ০৯:৩৭:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২১

নারীদের অধিকার বাস্তবায়নের আদেশ দিয়ে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার তাদের সর্বোচ্চ নেতার বরাতে শুক্রবার একটি ডিক্রি জারি করেছে। ডিক্রিতে নারীদের অধিকার বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে ‘সিরিয়াস তথা আন্তরিক পদক্ষেপ’ নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার বরাতে ডিক্রিতে বলা হয়েছে, ‘ইসলামী আমিরাতের নেতৃত্ব সমস্ত প্রাসঙ্গিক সংস্থাকে… নারীদের অধিকার কার্যকর করার জন্য সিরিয়াস তথা আন্তরিক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে’।

এতে বলা হয়েছে, নারীদের ‘সম্পত্তি (প্রোপার্টি)’ ভাবা উচিত নয় এবং বিয়েতে অবশ্যই তাদের সম্মতি নেওয়া উচিত। তবে এতে মেয়েদের হাইস্কুলে যাওয়া শুরু করার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে আফগানিস্তানে এখনো মেয়েদের হাইস্কুলগুলো বন্ধ রয়েছে।

নারীদের অধিকারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে তালেবান এই ডিক্রি জারি করল।

তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের প্রকাশ করা ডিক্রিতে বলা হয়েছে, একজন নারী কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয় বরং একজন নারী একজন স্বাধীন মানুষ। জোর করে কেউ কোনো নারীকে কারও হাতে তুলে দিতে পারে না।

এই ডিক্রিতে নারীদের বিবাহ পরিচালনা এবং তাদের সম্পত্তির অধিকার নিয়েও কথা বলা হয়েছে। ডিক্রিতে বলা হয়েছে, নারীদের বিবাহে জোর করা উচিত নয় এবং মৃত স্বামীর সম্পত্তিতে বিধবা নারীদের অংশ থাকা উচিত।

এতে আরও বলা হয়েছে, সিদ্ধান্ত প্রণয়নের সময় আদালতের এই বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা উচিত। একইসঙ্গে ধর্মবিষয়ক এবং তথ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে এসব অধিকারে উৎসাহ দেওয়া উচিত।

তবে বাড়ির বাইরে এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের বাইরে আফগান নারীরা কেমন কাজের সুযোগ পাবে তালেবানের ডিক্রিতে সেটা উল্লেখ করা হয়নি। আর এই বিষয়টি নিয়েই তালেবান আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি চাপে রয়েছে।

ডিক্রিতে মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষা বা নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। আফগানিস্তানে এখনো সরকারি চাকরিতে নারীদের ফিরে আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের প্রথম মেয়াদের শাসনে নারীদের শিক্ষা সহ নানা অধিকার থেকে মারাত্মকভাবে বঞ্চিত করা হয়েছিল। নারীদের সারা শরীর ঢেকে রাখা বোরকা পরতে বাধ্য করা হয়েছিল, শুধুমাত্র একজন পুরুষ অভিভাবকের সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং ঘরের বাইরে কাজ ও শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।