দক্ষিণ আফ্রিকার চিকিৎসকরা শুক্রবার জানিয়েছেন যে, দেশ জুড়ে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ার পরে হাসপাতালে ছোট শিশুদের ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। তবে ওমিক্রন শুধু শিশুদের জন্যই ভয়ঙ্কর কিনা তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
ওমিক্রনের হানায় দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন করোনা সংক্রমণের চতুর্থ তরঙ্গ চলছে। দেশটির আগের তিনটি তরঙ্গের তুলনায় এবার সংক্রমণ অনেক বেশি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
ওমিক্রন প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কেন্দ্র করে ছড়ায় এবং তারপরে অল্পবয়স্কদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যাদের কাছ থেকে ওমিক্রন বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে।
বিজ্ঞানী এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ১০-১৪ বছর বয়সী শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। আর পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি বেশি বাড়ছে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেবল ডিজিজেস-এর ওয়াসিলা জাসাত বলেন, হাসপাতালে সব বয়সী মানুষেরই ভর্তি বাড়ছে। তবে বিশেষ করে পাঁচ বছরের কম বয়সী রোগীর সংখ্যা বেশি বাড়ছে।
তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ওমিক্রন আক্রান্তদের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সীদের হাসপাতালে ভর্তির ঘটনা এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। হাসপাতালে ভর্তিতে শীর্ষে রয়েছেন ৬০ বছরের বেশি বয়সী রোগীরা।
বিজ্ঞানীরা এর বেশ কিছু সম্ভাব্য কারণ উল্লেখ করেছেন। একটি হল দক্ষিণ আফ্রিকায় ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের এখনো ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি। ডাক্তাররা বলছেন, ওমিক্রনে আক্রান্ত বেশিরভাগ শিশু এবং তাদের বাবা-মা কেউই টিকা নেয়নি।
এনআইসিডি-র জনস্বাস্থ্যের প্রধান মিশেল গ্রুম বলেছেন, ভাইরাসটি গাউতেং প্রদেশে মহামারীর যে কোনও সময়ের চেয়ে অনেক বেশি দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। জোহানেসবার্গ এবং রাজধানী প্রিটোরিয়া ওই প্রদেশেই অবস্থিত।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা যাচ্ছে যে, ওমিক্রন আগের ধরনগুলোর চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক এবং এর রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দেওয়ার সক্ষমতাও বেশি’।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, ডেল্টা বা বিটা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ওমিক্রনের সংক্রমণের গতি তিনগুণ বেশি।
যদিও এখনো সাধারণত রোগীদের মধ্যে হালকা লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তথাপি গ্রুম সতর্ক করে দিয়েছেন যে, গুরুতর অসুস্থতার সূত্রপাত শুধুমাত্র আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই দেখা যাবে।
বৃহস্পতিবার দেশটিতে ১১,৫৩৫ জনের দেহে ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। যাদের বেশিরভাগই ভাইরাসটির কেন্দ্রস্থল গৌতেংয়ের বাসিন্দা। এই সংখ্যা মাত্র এক সপ্তাহ আগের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক /দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম 
























