রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতে ৯ অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী গ্রেফতার

দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাসবাদবিরোধী স্কোয়াড (এটিএস) মানবপাচারকারী চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। যাদের মধ্যে সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। গ্রেফতারকৃতরা বাংলাদেশি লোকজনকে দেশটিতে পাচারের পর ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়ে সেখান থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশে পাঠিয়ে দিত।

রাজ্যের এটিএসের কর্মকর্তাদের বরাতে মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) ভারতীয় মিডিয়া দ্য হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়, গেল রবিবার দুপুরের দিকে এটিএসের কর্মকর্তারা কানুপর থেকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে ওই ৯ বাংলাদেশিকে আটক করেছেন। এরপর সোমবার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

এটিএসের পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশের সন্ত্রাসবাদবিরোধী একটি দল ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী ৯ বাংলাদেশিকে রবিবার আটক করেছে। কানপুর থেকে ট্রেনযোগে রাজধানী নয়াদিল্লিতে পৌঁছানোর পর অন্য কোনো দেশে যাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল তাদের। এরপর তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে এই চক্রের মূল হোতা আরেক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়।

বিবৃতিতে এটিএস জানায়, দীর্ঘদিন যাবত ভুয়া ভারতীয় নথিপত্র তৈরি করে এই চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার করতেন বলে গোয়েন্দা তথ্য ছিল। মূলত সেই তথ্যের ভিত্তিতে এটিএসের কর্মকর্তারা অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশকারী আট বাংলাদেশি নাগরিককে শনাক্ত এবং গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতারকৃত বাংলাদেশিরা হলো- আসিদুল ইসলাম, আলামিন আহমেদ, হুসাইন মোহাম্মদ, জাইবুল ইসলাম, জামিল আহমেদ, সাখাওয়াত খান, রাজীব হুসাইন এবং আলাদ্দিন তারেক। অভিযুক্তদের সকলের বয়সই ২০ এর মধ্যে। পশ্চিমবঙ্গের একটি পরিত্যক্ত মাদরাসায় তাদের রেখে হিন্দিতে কথা বলা ও স্বাক্ষরের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।

ট্রেনযোগে রাজধানী নয়াদিল্লিতে নেওয়ার আগে এই বাংলাদেশিদের ভারতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। যেখানে তাদের হিন্দু নাম লেখা ছিল।

এটিএসের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাচারকারী চক্রের মূল হোতা হিসেবে মাহফুজুর রহমানের নাম স্বীকার করেছেন। তিনি এক লাখ রুপির বিনিময়ে প্রত্যেককে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করতেন। এই বাংলাদেশিদের জন্য মাহফুজুর রহমান ভারতীয় ভুয়া পাসপোর্ট ও নথিপত্র তৈরি করতেন। একই সঙ্গে ভারতে পাচার বাংলাদেশিদের দুবাইয়ে কাজের জন্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিতেন তিনি।

বাংলাদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে পাওয়া গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতা শহরের ২৪ পরগনা এলাকার একটি মাদরাসায় অভিযান চালিয়ে মাহফুজুর রহমানকে (৩৪) গ্রেফতার করে এটিএস। বাংলাদেশি নাগরিক মাহফুজুর রহমানও ভুয়া ভারতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত দেশটিতে বসবাস করে আসছিলেন। তাকে সাময়িক রিমান্ডে নেওয়ার জন্য লখনৌতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এটিএসের কর্মকর্তারা।উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের এটিএস অভিযুক্ত ৯ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার দায়ে এফআইআর দায়ের করেছে। একই সঙ্গে তারা ঘটনাটির তদন্তকাজও এরই মধ্যে শুরু করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ভারতে ৯ অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী গ্রেফতার

প্রকাশিত সময় : ১০:০০:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১

দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাসবাদবিরোধী স্কোয়াড (এটিএস) মানবপাচারকারী চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। যাদের মধ্যে সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। গ্রেফতারকৃতরা বাংলাদেশি লোকজনকে দেশটিতে পাচারের পর ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়ে সেখান থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশে পাঠিয়ে দিত।

রাজ্যের এটিএসের কর্মকর্তাদের বরাতে মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) ভারতীয় মিডিয়া দ্য হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়, গেল রবিবার দুপুরের দিকে এটিএসের কর্মকর্তারা কানুপর থেকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে ওই ৯ বাংলাদেশিকে আটক করেছেন। এরপর সোমবার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

এটিএসের পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশের সন্ত্রাসবাদবিরোধী একটি দল ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী ৯ বাংলাদেশিকে রবিবার আটক করেছে। কানপুর থেকে ট্রেনযোগে রাজধানী নয়াদিল্লিতে পৌঁছানোর পর অন্য কোনো দেশে যাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল তাদের। এরপর তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে এই চক্রের মূল হোতা আরেক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়।

বিবৃতিতে এটিএস জানায়, দীর্ঘদিন যাবত ভুয়া ভারতীয় নথিপত্র তৈরি করে এই চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার করতেন বলে গোয়েন্দা তথ্য ছিল। মূলত সেই তথ্যের ভিত্তিতে এটিএসের কর্মকর্তারা অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশকারী আট বাংলাদেশি নাগরিককে শনাক্ত এবং গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতারকৃত বাংলাদেশিরা হলো- আসিদুল ইসলাম, আলামিন আহমেদ, হুসাইন মোহাম্মদ, জাইবুল ইসলাম, জামিল আহমেদ, সাখাওয়াত খান, রাজীব হুসাইন এবং আলাদ্দিন তারেক। অভিযুক্তদের সকলের বয়সই ২০ এর মধ্যে। পশ্চিমবঙ্গের একটি পরিত্যক্ত মাদরাসায় তাদের রেখে হিন্দিতে কথা বলা ও স্বাক্ষরের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।

ট্রেনযোগে রাজধানী নয়াদিল্লিতে নেওয়ার আগে এই বাংলাদেশিদের ভারতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। যেখানে তাদের হিন্দু নাম লেখা ছিল।

এটিএসের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাচারকারী চক্রের মূল হোতা হিসেবে মাহফুজুর রহমানের নাম স্বীকার করেছেন। তিনি এক লাখ রুপির বিনিময়ে প্রত্যেককে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করতেন। এই বাংলাদেশিদের জন্য মাহফুজুর রহমান ভারতীয় ভুয়া পাসপোর্ট ও নথিপত্র তৈরি করতেন। একই সঙ্গে ভারতে পাচার বাংলাদেশিদের দুবাইয়ে কাজের জন্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিতেন তিনি।

বাংলাদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে পাওয়া গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতা শহরের ২৪ পরগনা এলাকার একটি মাদরাসায় অভিযান চালিয়ে মাহফুজুর রহমানকে (৩৪) গ্রেফতার করে এটিএস। বাংলাদেশি নাগরিক মাহফুজুর রহমানও ভুয়া ভারতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত দেশটিতে বসবাস করে আসছিলেন। তাকে সাময়িক রিমান্ডে নেওয়ার জন্য লখনৌতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এটিএসের কর্মকর্তারা।উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের এটিএস অভিযুক্ত ৯ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার দায়ে এফআইআর দায়ের করেছে। একই সঙ্গে তারা ঘটনাটির তদন্তকাজও এরই মধ্যে শুরু করেছে।