শীতের কুয়াশায় আবৃত সকাল। মতিহারের সবুজ চত্ত্বরে এসেছে নবীন। মুখরিত হয়েছে ক্যাম্পাসের প্রতিটি চত্ত্বর। বুকভরা আশা আর হাজারো স্বপ্ন নিয়ে আসা নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

মঙ্গলবার (২০ডিসেম্বর) সকাল থেকেই রঙিন বেশে নবীন শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগের সামনে নতুন শিক্ষার্থীদের অবস্থান। অনেকের সঙ্গে তাদের অভিভাবক। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নবীনদের সংখ্যা বাড়তে থাকে।

এরপর নবীনরা স্ব স্ব বিভাগে উপস্থিত হয়। অধিকাংশ বিভাগই তাদেরকে ক্ষুদ্র আনুষ্ঠানিকতায় বরণ করে নেয়। এরপর অংশ নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাসে। এখান থেকেই শুরু বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক লাইফ। চলবে অনন্ত সময়।
ক্লাস শেষেই ফুল হাতে নতুন বন্ধুদের সঙ্গে হাসিমাখা বদন নিয়ে বের হয় শিক্ষার্থীরা। এরপর তাদের পদচারণায় মুখরিত করে ক্যাম্পাস। টুকিটাকি, বুদ্ধিজীবী চত্বর, জোহা চত্বর, শহীদ মিনারসহ ক্যাম্পাসের জনসমাগম স্থান মাতে তাদের প্রাণোচ্ছ্বল উল্লাসে। এদিকে নবীনদের পেয়ে সাদর সম্ভাষণ জানিয়েছে পুরাতনরা। অভয় আর গভীর ভালবাসায়-মমতা বরণ করা হয় আগতদের।
তবে এবার ক্যাম্পাসে বেশি আলোচনায় এসেছে র্যাগিং ইস্যু। হলে কিংবা একাডেমিক ভবনে নীবিড় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে র্যাগিং বিষয়টিকে। এমনকি র্যাগিংয়ে জড়িত শিক্ষার্থীদে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী সবোর্চ্চ শাস্তি বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী আল সামিন ইয়সির (স্মরণ) বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দিন আমার জন্য একটি বহু প্রতীক্ষীত দিন। বরাবরই রাবির ক্যাম্পাস আমার স্বপ্নের একটি ক্যম্পাস। ক্যাম্পাসে এসে র্যাগীং নিয়ে একটু ভয়ে ছিলাম। কিন্তু এসবের কোনো কিছু পাইনি। পেয়েছি বড়দের উষ্ণ অর্ভ্যথনা। শিক্ষকরা অত্যন্ত বন্ধুত্বপরায়ন। আগামী কয়েকটি বছর অত্যন্ত আনন্দের সাথে কাটাবো এই প্রত্যাশা করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. লিয়াকত আলী এসব কথা বলেন, ক্যাম্পাসে র্যাগিং বন্ধে প্রক্টরিয়াল বডি সব সময় তৎপর রয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ক্যাম্পাসে মাইকিং করা হয়েছে। র্যাগিং বন্ধে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসন ইতোমধ্যে সব ধরনের সচেতনতামূলক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। যদি কনো শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ আসে এবং সে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে বহিস্কার করাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
র্যাগিংমুক্ত সৌহার্দ আর সম্প্রীতি পরিবেশে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হবে এমন আশাবাদ রেখেই নবীন শিক্ষার্থীদের স্মৃতির পাতায় অন্যন্য স্থান করে নেয় আজকের এই দিনটি। এমনই উচ্ছ্বাসে কাটুক অনন্ত জীবন সেই প্রত্যাশা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের।

নিজস্ব প্রতিবেদক: 

























