যে সকল স্কুলে নির্বাচনি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, সেসব স্কুলের সিসি ক্যামেরা উঠিয়ে নেওয়া বা বন্ধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) রাত ১০টায় তৈমূর আলম খন্দকার তার নিজ বাড়িতে জরুরী সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন।
তৈমুর বলেন, ‘বিভিন্ন স্কুল থেকে আমাকে জানানো হচ্ছে যে, প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা আছে স্কুলগুলোর সিসি ক্যামেরা উঠিয়ে নেওয়ার বা বন্ধ করে রাখার। এমন নির্দেশনা আসলে কি বুঝায়, এটার বিষয় বস্তুটা কি সেটা সকলকে বিবেচনায় নেওয়ার আহবান করছি। এটা হঠকারিতা, ভোট চুরি করার জন্য বা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করার জন্য কিংবা পুলিশি নির্যাতন চালানোর জন্য সিসি ক্যামেরাগুলো তুলে দেওয়ার জন্য তারা নির্দেশ দিয়েছে। এই তথ্যের সত্যতা যদি মিথ্যা হয়ে থাকে তাহলে আমি বলব বিষয়টি যাচাই করে দেখেন। যদি সঠিক হয় তাহলে নির্বাচন কমিশনসহ প্রশাসন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন চলাবস্থায় দয়া করে সিসি ক্যামেরাগুলো রাখার ব্যবস্থা করুন। সেখানে যদি আমি কিংবা আমার কোনো লোকজন গোলযোগ করি সেটাও ধরা পড়বে।’
তৈমূর আলম বলেন, গুঞ্জন রয়েছে ভোট কেন্দ্রগুলোতে একজন করে অপারেটর দেওয়ার। ওই অপারেটর যেন আমাদের এজেন্ট ছাড়া কোনো দায়িত্ব পালন না করতে পরে। সেখানে আমাদের এজেন্ট থাকবে এবং তাদের উপস্থিতিতে কোনো অপারেটর যদি তাদের দায়িত্ব পালন যেমন ম্যাশিনে ত্রুটি দেখা দিলে সেটার সমাধান করবে এবং আমাদের এজেন্ট যাতে কেন্দ্রে থাকতে পারে, তাদের যেন কেউ কেন্দ্র থেকে বের করে দিতে না পারে সেটার নিশ্চয়তাও দিতে হবে।
তৈমূর বলেন, বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে, বিভিন্ন হোটেলে, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, সার্কিট হাউজ ও ডাক বাংলোতে বহিরাগত লোকজনে ভরে গেছে। এই বহিরাগতরা এখানে একটি বিশৃঙ্খলা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখবেন। ভোটের দিনে তাদের কোনো কাজ নেই। তারা যাতে নারায়ণগঞ্জে অবস্থান করতে না পারে এবং যারা রাস্তাঘাটে চলাচল করবে তারা যেন আইডি কার্ড নিয়ে চলাফেরা করে। আইডি কার্ডের বাহিরে কোনো বহিরাগত লোক যেন নারায়ণগঞ্জ শহরে চলাচল করতে না পারে।
নিজেকে নিয়ে লজ্জাবোধ করছি। বার বার সংবাদ মাধ্যমের কাছে স্মরনাপন্ন হতে হচ্ছে। কি প্রশাসন, কি-বা নির্বাচন কমিশন, কোথা থেকেও নুন্যতম আশ্রয় ও ন্যায় বিচার পাচ্ছি না। রাত ১০ টা বাজেও আমার বাড়িতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়েছেন।
তৈমূর আলম বলেন, আমি মোবাইল ফোনে বিভিন্ন সংবাদ পাচ্ছি। যে সকল নেতাকর্মী আজ এখানে উপস্থিত হয়েছেন তারাও বিভিন্ন সংবাদ নিয়ে এসেছেন। সেই কথাগুলোই যাচাই-বাছাই করে সংবাদ মাধ্যমে বলব।
উৎসব মুখর পরিবেশে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছিল মন্তব্য করে তৈমূল আলম বলেন, প্রথম থেকেই আমরা আশা ও প্রত্যাশা করছিলাম আমাদের নির্বাচনটা কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ ছাড়াই জনতার রায়ই আমাদের জন্য চিরধার্য হবে। নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম যখন নারায়ণগঞ্জে আসেন সেদিন তার সামনে বক্তব্যে বলেছিলাম নারায়ণগঞ্জের রাস্তায় হেটে যখন ভোট চাই তখন মানুষ দুইটা কথা জিজ্ঞাসা করে। প্রথমত নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা, আমরা ভোট দিতে পারব কিনা। দ্বিতীয়ত প্রশ্ন ছিল আমি বসে যাব কিনা। আমার বসে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নাই। এর কারণ এখন আর ড. কামাল হোসেন ও শফিক রহমান নাই যারা গিয়ে মেডামকে (বেগম খালেদা) বুঝাকে যে অমুক প্রার্থী পাশ না করলে দেশে ক্ষতি হবে, অমুককে পাশ করাতে হবে বা কারো বুদ্ধি শুনেতো আর আমাকে দল থেকে বসাতে পারবে না। এর কারণ আমি বর্তমানে স্বতন্ত্র ক্যান্ডিডেট (প্রার্থী)। আমার দায় দায়িত্ব আমি নিজে এবং আমার জনগন।
একটি জবাব কমিশনের কাছ থেকে চাই জানিয়ে তৈমূর আলম বলেন, নির্বাচনে মানুষ ভোট দেবে কিনা সেটার নিশ্চয়তা তাকে দিতে হবে। উনি (নির্বাচন কমিশন) কিন্তু বলেছিলেন আপনারা নিশ্চিত থাকেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। কিন্তু এখন যে সকল বিষয়ে পরিলক্ষিত হচ্ছে সেগুলোই সংবাদ মাধ্যমের কাছে তুলে ধরতে চাই এবং সংবাদ মাধ্যমের সহায়তায় এদের রাষ্ট্র নায়ক যিনি, যিনি রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতার মালিক সংবিধানের ৪৮ এর ৩ ধারা অনুযায়ী যার পরামর্শ ছাড়া রাষ্ট্রপতিও কোনো কাজ করতে পারবে না বা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না তিনি হলেন এই দেশের প্রধানমন্ত্রী তার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তৈমূর আলম বলেন, সকালের সংবাদ সম্মেলনে একজন মেয়েকে দাঁড় করানো হয়েছিল। ওই মেয়েটিকে আমি নার্সিং (দেখাশুনা) করি। যেহেতু তার বাবা আমার সাথেই গুলিব্ধি হয়েছিল আমাকে রক্ষা করতে গিয়ে। সে গুলিবিদ্ধ হয়েই মৃত্যু বরণ করেছিল। তারপরও সেইদিন আমাকে গুলিবিদ্ধ হতে হয়েছিল। আমার সাথে জামাল উদ্দিনও গুলিবিদ্ধ হয়। স্বাভাবিক ভাবেই তারা আমার পাশে থাকে। সেই মেয়েটি (রেশমা) তার স্বামীর নাম আশরাফ আমার পোষ্টা লাগানোর সময় পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। স্বপন নামের একটি ছেলে হ্যান্ড লিফলেট বিলি করার সময় তাকে ধরে নিয়ে গেছে। মহানগর যুবদলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসেফ দার বাড়ীর তালা ভেঙ্গে তার বাড়ীতে পুলিশ হানা দেয়। সেই সময় জোসেফ তার বাড়ীর ছাদ থেকে পালিয়ে আরেক বাড়ীর ছাদে যাওয়ার চেষ্টা করলে পা ভেঙ্গে যায়। এখন আবার পুনরায় সংবাদ পাচ্ছি প্রত্যেক নেতাকর্মীদের বাড়ীতে পুলিশ যাচ্ছে।
তৈমূর বলেন, নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিন হিসেবে শুক্রবার আমাদের শোডাউন ছিল নদীর ওপারে বন্দর এলাকায়। বন্দরের সেই শোডাউনে অনেক লোকজন সমবেত হয়েছিল যেখানে কোনো বহিরাগত লোকজন ছিলনা। সকলেই নারায়ণগঞ্জের নেতাকর্মী এবং সিটির ভোটার। অপর দিকে আমার প্রতিদ্বদ্বী প্রার্থী যিনিও শোডাউন করেছেন পথসভা করেছেন সেখানে নেতৃত্ব দিয়েছে আমাদের মেহমানরা। তারা অত্যন্ত সম্মানিত মেহমান।
বহিরাগতদের বিষয়ে অভিযোগ করেছি জানিয়ে তৈমূর আলম বলেন, নগরীর বিভিন্ন এলাকা এমিপদের ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। সিটির ৩নং ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে রূপগঞ্জের একজন মন্ত্রী আছেন। তিনি সেখানে লোকবল সরবরাহ করবেন। সেখানে তারা সবকিছু তাদের পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
তৈমূর আলম বলেন, বিভিন্ন বাসা বাড়িতে, বিভিন্ন হোটেলে, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, সার্কিট হাউজ ও ডাক বাংলোতে বহিরাগত লোকজনে ভরে গেছে। এই বহিরাগতরা এখানে একটি বিশৃঙ্খলা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখবেন। ভোটের দিনে তাদের কোন কাজ নেই। তারা যাতে নারায়ণগঞ্জে অবস্থান করতে না পারে এবং যারা রাস্তাঘাটে চলাচল করবে তারা যেন আইডি কার্ড নিয়ে চলাফেরা করে। আইডি কার্ডের বাহিরে কোনো বহিরাগত লোক যেন নারায়ণগঞ্জ শহরে চলাচল করতে না তার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে তৈমূর আলম বলেন, প্রত্যেক কেন্দ্রের ভোট গননা শেষে তার প্রিন্ট কপি আমাদের এজেন্টদের কাছে বুঝিয়ে দিতে হবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা কোনো জটিল কাজ নয়। নির্বাচনের দিন যাদের কোনো বহিরাগত যারা নারায়ণগঞ্জের ভোটার না তারা যেন নারায়ণগঞ্জে অবস্থান করতে না পারে সেই ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা চাচ্ছি।

দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম ডেস্ক 
























