মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় শ্রীঘরে ব্যাংক কর্মকর্তা

সাবেক স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় দেশের রাষ্ট্রায়াত্ব অগ্রণী ব্যাংকের চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার এসএম মশিউর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন রাজশাহীর একটি আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-০১ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মশিউর রহমান। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মনসুর আলম জামিন ওই ব্যাংখ কর্মকর্তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায় পুলিশ। রাজশাহী কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক আবুল হাশেম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, অভিযুক্ত মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ ছিল। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাজশাহীর সোনালী ব্যাংকের কাদিরগঞ্জ গ্রেটার রোড শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ও নির্যাতনের শিকার তাসমীন এহসান এ মামলা দায়ের করেন।

এর আগে গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে এই ব্যাংক কর্মকর্তার (মশিউর রহমান) বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ করেন তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী। একইসঙ্গে অভিযুক্ত যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন বলে জানানো হয়।

এ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংক কর্মকর্তার সাবেক স্ত্রী তাসমীন এহসান জানান, তার সাবেক স্বামী ২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে তাকে বেদম মারধর করেন। কাপর আইরন করা ইস্ত্রি দিয়ে তার হাত পুড়িয়ে দেন। এরপর দুই দিন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি থেকে তিনি চিকিৎসা নেন এবং সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনার পর থেকে তার সাবেক স্বামী তাকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এ সময় সাংবাদিকদের কাছে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও উল্লেখ করেন তাসমীন।

নির্যাতনের শিকার তাসমীন আরও জানান, তিনি মহানগরীর তেরোখাদিয়া এলাকার একটি বাড়িতে থাকেন। বাড়িটি বিক্রি করে দেওয়া হবে বলে মশিউর রহমান লোক পাঠান। আর তিনি তালাক দেওয়ার আগেই এক সেনা কর্মকর্তার সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করেন। তার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে উল্লেখ করেন তাসনীম।

ওই সময় সাবেক স্ত্রীর এমন অভিযোগের বিষয়ে মশিউর রহমান বলেছিলেন, তিনি চট্টগ্রামে থাকেন। ২০২১ সালের ১৭ মার্চ তার তালাক কার্যকর হয়েছে। সুতরাং তাকে নির্যাতেনর প্রশ্নই ওঠে না। সাবেক স্ত্রীর করা সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে এই ব্যাংক কর্মকর্তা আরও জানিয়েছিলেন, সন্তানরা বাড়িতে আছে বলে তিনি বাড়ি বিক্রি করেননি। এছাড়া হুমকি দেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাজশাহীতে স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় শ্রীঘরে ব্যাংক কর্মকর্তা

প্রকাশিত সময় : ১০:২৮:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২২

সাবেক স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় দেশের রাষ্ট্রায়াত্ব অগ্রণী ব্যাংকের চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার এসএম মশিউর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন রাজশাহীর একটি আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-০১ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মশিউর রহমান। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মনসুর আলম জামিন ওই ব্যাংখ কর্মকর্তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায় পুলিশ। রাজশাহী কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক আবুল হাশেম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, অভিযুক্ত মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ ছিল। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাজশাহীর সোনালী ব্যাংকের কাদিরগঞ্জ গ্রেটার রোড শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ও নির্যাতনের শিকার তাসমীন এহসান এ মামলা দায়ের করেন।

এর আগে গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে এই ব্যাংক কর্মকর্তার (মশিউর রহমান) বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ করেন তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী। একইসঙ্গে অভিযুক্ত যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন বলে জানানো হয়।

এ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংক কর্মকর্তার সাবেক স্ত্রী তাসমীন এহসান জানান, তার সাবেক স্বামী ২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে তাকে বেদম মারধর করেন। কাপর আইরন করা ইস্ত্রি দিয়ে তার হাত পুড়িয়ে দেন। এরপর দুই দিন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি থেকে তিনি চিকিৎসা নেন এবং সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনার পর থেকে তার সাবেক স্বামী তাকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এ সময় সাংবাদিকদের কাছে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও উল্লেখ করেন তাসমীন।

নির্যাতনের শিকার তাসমীন আরও জানান, তিনি মহানগরীর তেরোখাদিয়া এলাকার একটি বাড়িতে থাকেন। বাড়িটি বিক্রি করে দেওয়া হবে বলে মশিউর রহমান লোক পাঠান। আর তিনি তালাক দেওয়ার আগেই এক সেনা কর্মকর্তার সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করেন। তার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে উল্লেখ করেন তাসনীম।

ওই সময় সাবেক স্ত্রীর এমন অভিযোগের বিষয়ে মশিউর রহমান বলেছিলেন, তিনি চট্টগ্রামে থাকেন। ২০২১ সালের ১৭ মার্চ তার তালাক কার্যকর হয়েছে। সুতরাং তাকে নির্যাতেনর প্রশ্নই ওঠে না। সাবেক স্ত্রীর করা সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে এই ব্যাংক কর্মকর্তা আরও জানিয়েছিলেন, সন্তানরা বাড়িতে আছে বলে তিনি বাড়ি বিক্রি করেননি। এছাড়া হুমকি দেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।