দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত এবং এর ফলে সৃষ্ট সুনামিতে শুধু টোঙ্গাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। অঞ্চলটিতে সুনামির প্রভাবে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে পেরুতেও। দেশটিতে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্ট সুনামির ধাক্কায় ট্যাংকার ফুটো হয়ে তেল ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার (২২ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকালে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পেরুর কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘ ৯০ দিন ধরে জারি থাকবে এ আদেশ। দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২১টির মতো সমুদ্রসৈকতে তেল ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কায় টেকসই ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করেছে তারা।
পেরুর পরিবেশ মন্ত্রণালয় বলছে, জরুরি অবস্থা জারির মূল কারণ হলো দুর্যোগের পরে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থা এবং দলগুলোকে আরও ভালোভাবে সংগঠিত করা এবং পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকানো। তাদের মতে, ১৭৪ হেক্টর জমিতে, যা ২৭০টি ফুটবল মাঠের সমান, সামুদ্রিক এলাকায় তেল ছড়িয়ে পড়েছে। তেল ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয়দের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর সে কারণে দেশটির সরকার তেল শোধনাগারের মালিক স্প্যানিশ এনার্জি জায়ান্ট রেপসোলের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করছে তারা।
এর আগে পেরুর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টুইট বার্তার মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, লিমার আশপাশ ঘিরে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়। এতে শত শত জেলে পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কিন্তু কোম্পানিটির যোগাযোগ বিষয়ক পরিচালক টিন ভান ডেন ওয়াল বেক গেল বুধবার এক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তেল ট্যাংকার ফুটো হওয়ার ঘটনার দায় অস্বীকার করেছেন। তেল খুব সামান্য ছড়িয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিকে মহাসাগরে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত এবং সৃষ্ট সুনামিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে টোঙ্গা। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের এক সপ্তাহ পর দেশটিতে চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটও। দেশটিতে খাদ্যের জন্য যে জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটি দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, হাঙ্গা টোঙ্গা-হাঙ্গা হা’পাই নামে আগ্নেয়গিরিটিতে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে গত শনিবার। এরপর পুরো প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে সুনামির ঢেউ আছড়ে পড়ে। টোঙ্গার রাজধানী থেকে আগ্নেয়গিরিটি ৬৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। ঘটনাস্থল থেকে নিউজিল্যান্ডের দূরত্ব দুই হাজার ৩০০ কিলোমিটার এবং ফিজির দূরত্ব ৮০০ কিলোমিটার।উল্লেখ্য, অগ্ন্যুৎপাতের পর সৃষ্ট সুনামির ঢেউ আঘাত হানে হাজার হাজার মাইল দূরে অবস্থিত জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র উপকূলেও। প্রচণ্ড ঢেউয়ে পেরুতে মারা গেছেন দুইজন। আগ্নেয়গিরিটি ভূমিকম্পের দিক থেকে অত্যন্ত সক্রিয় প্যাসিফিক রিং অব ফায়ারের ওপরেই অবস্থিত বলে জানা গেছে।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক /দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম 

























