বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাবিতে উৎসবমুখর পরিবেশে দেবী সরস্বতীর আরাধনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে সরস্বতী পূজা উদযাপন। ভক্ত-দর্শনার্থীদের পদচারণয় মুখর হয়ে উঠেছে পূজামণ্ডপ প্রাঙ্গণ।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় জগন্নাথ হল মন্দিরে শ্বেতশুভ্র বসনা জ্ঞানদায়িনী দেবী সরস্বতীর পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ১০টায় ভক্তরা পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে প্রণাম জানায় বিদ্যার দেবী সরস্বতীকে। সরেজমিনে দেখা যায়, পূজার সাজে সজ্জিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হল। করোনাকালের এ আয়োজন গত কয়েক বছরগুলোর তুলনায় কিছুটা ম্লান। তবু এক বছর পর সীমিত পরিসরে হলেও পূজা উদযাপন করতে পারায় ভক্তরা খুশি।

জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থী গণেশ রায় বলেন, প্রতি বছর বর্ণাঢ্য আয়োজনে আর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পূজাটি উদযাপন করি। কিন্তু করোনার বিধিনিষেধের কারণে সীমিত পরিসরে করতে হচ্ছে। তারপরও খুশি সশরীরে করতে পেরে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই সুস্থ-সুন্দর পৃথিবী ফিরে পাবো, মায়ের কাছে সেই প্রার্থনা জানাই।

পূজা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষক বিপুল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলে আমরা প্রতিবছর পূজা উদযাপন করে থাকি। কিন্তু করোনা মহামারির বিধিনিষেধের কারণে গত দুবছর যাবত আমরা সেভাবে পূজা করতে পারছি না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবার পূজার আয়োজন করেছি। গতবছর হল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল। এবার হল খোলা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। হলের শিক্ষার্থীরা আছে, বাইরে থেকে ভক্তরাও এসেছেন। আমরা চেষ্টা করেছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কিছু আয়োজন করতে।

জগন্নাথ হলের প্রধান পুরোহিত সাধন চক্রবর্তী বলেন, সঙ্গীত চর্চাকারীরা সঙ্গীতের সুরের জন্য প্রার্থনা করেছেন। আর শিক্ষার্থীরা করছেন বিদ্যার জন্য। আজকের দিনে মায়ের কাছে প্রার্থনা করেছি, সকলে যেন ক‌রোনার এই ভয়াল থাবা থেকে মুক্তি পায়। সকলেই সুখী হোক, সকলেই নিরাপদ থাকুক মায়ের কাছে এই প্রার্থনা।

এদিকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান সরস্বতী পূজা উপলক্ষে দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবাই‌কে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, সরস্বতী পূজা বাংলাদেশে অন্যতম জনপ্রিয় একটি ধর্মীয় উৎসব। ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে এই উৎসবে সবার অংশগ্রহণে দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও ঐতিহ্যে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। জ্ঞানচর্চার মাধ্যমেই মানবসভ্যতা ক্রমান্বয়ে বিকশিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমি জ্ঞানালোকের প্রতীক সরস্বতী পূজা উৎসবের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ঢাবিতে উৎসবমুখর পরিবেশে দেবী সরস্বতীর আরাধনা

প্রকাশিত সময় : ০৩:৩৭:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে সরস্বতী পূজা উদযাপন। ভক্ত-দর্শনার্থীদের পদচারণয় মুখর হয়ে উঠেছে পূজামণ্ডপ প্রাঙ্গণ।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় জগন্নাথ হল মন্দিরে শ্বেতশুভ্র বসনা জ্ঞানদায়িনী দেবী সরস্বতীর পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ১০টায় ভক্তরা পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে প্রণাম জানায় বিদ্যার দেবী সরস্বতীকে। সরেজমিনে দেখা যায়, পূজার সাজে সজ্জিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হল। করোনাকালের এ আয়োজন গত কয়েক বছরগুলোর তুলনায় কিছুটা ম্লান। তবু এক বছর পর সীমিত পরিসরে হলেও পূজা উদযাপন করতে পারায় ভক্তরা খুশি।

জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থী গণেশ রায় বলেন, প্রতি বছর বর্ণাঢ্য আয়োজনে আর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পূজাটি উদযাপন করি। কিন্তু করোনার বিধিনিষেধের কারণে সীমিত পরিসরে করতে হচ্ছে। তারপরও খুশি সশরীরে করতে পেরে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই সুস্থ-সুন্দর পৃথিবী ফিরে পাবো, মায়ের কাছে সেই প্রার্থনা জানাই।

পূজা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষক বিপুল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলে আমরা প্রতিবছর পূজা উদযাপন করে থাকি। কিন্তু করোনা মহামারির বিধিনিষেধের কারণে গত দুবছর যাবত আমরা সেভাবে পূজা করতে পারছি না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবার পূজার আয়োজন করেছি। গতবছর হল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল। এবার হল খোলা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। হলের শিক্ষার্থীরা আছে, বাইরে থেকে ভক্তরাও এসেছেন। আমরা চেষ্টা করেছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কিছু আয়োজন করতে।

জগন্নাথ হলের প্রধান পুরোহিত সাধন চক্রবর্তী বলেন, সঙ্গীত চর্চাকারীরা সঙ্গীতের সুরের জন্য প্রার্থনা করেছেন। আর শিক্ষার্থীরা করছেন বিদ্যার জন্য। আজকের দিনে মায়ের কাছে প্রার্থনা করেছি, সকলে যেন ক‌রোনার এই ভয়াল থাবা থেকে মুক্তি পায়। সকলেই সুখী হোক, সকলেই নিরাপদ থাকুক মায়ের কাছে এই প্রার্থনা।

এদিকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান সরস্বতী পূজা উপলক্ষে দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবাই‌কে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, সরস্বতী পূজা বাংলাদেশে অন্যতম জনপ্রিয় একটি ধর্মীয় উৎসব। ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে এই উৎসবে সবার অংশগ্রহণে দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও ঐতিহ্যে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। জ্ঞানচর্চার মাধ্যমেই মানবসভ্যতা ক্রমান্বয়ে বিকশিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমি জ্ঞানালোকের প্রতীক সরস্বতী পূজা উৎসবের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি।