ইউক্রেন সীমান্তে হামলার জন্য প্রায় এক লাখ সৈন্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র রাশিয়া। রুশ সেনাবাহিনী যে কোনো মুহূর্তে দেশটিতে হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। সংকটময় এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার হামলা বন্ধের দাবিতে রুশ সীমান্তবর্তী ইউক্রেনের একটি শহরে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ।
রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স তথ্যটি জানিয়েছে। আন্দোলনে ‘খারকিভ ইজ ইউক্রেন’ লেখা ব্যানার নিয়ে অংশ নেন এসব মানুষ। এর অর্থ- ‘খারকিভ শহরটি ইউক্রেনের’। এছাড়া ‘ইউক্রেনে হামলা বন্ধ করো’ লেখা সম্বলিত ব্যানারও ছিল আন্দোলনকারীদের হাতে।
ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন যাবতই সেনাবাহিনীর প্রায় এক লাখ সদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যে কোনো মুহূর্তে রুশ সৈন্যরা দেশটিতে আক্রমণ চালাতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে এখনই হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে শুরু থেকেই দাবি করে আসছে মস্কো।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রুশ সীমান্তবর্তী পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ শহরে শনিবার বিক্ষোভে অংশ নেন হাজার হাজার মানুষ। এই শহরটি ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং রুশ সীমান্ত থেকে মাত্র ৪২ কিলোমিটার (২৬ মাইল) দূরে অবস্থিত।
গেল দিন কয়েক আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলনস্কি জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার সম্ভাব্য আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে খারকিভ শহর। পরে তার মুখপাত্র বলেন, প্রেসিডেন্ট এটা কেবলই অনুমান করে বলেছেন। এরপরই মূলত শনিবার শিল্প সমৃদ্ধ এই শহরে বিক্ষোভে নামে মানুষ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রুশ আগ্রাসনের হুমকির মুখে শনিবার খারকিভের বিক্ষোভকারীরা জাতীয় সংগীত গান এবং ইউক্রেনের পতাকা উড়ান। এছাড়া ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলোরও পতাকা এ সময় বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল।
নিনা ভিটকো নামে খারকিভের এক বাসিন্দা বলেছেন, খারকিভ ইউক্রেনের শহর এবং আমরা এটি কারও হাতে তুলে দেব না। আর এ কারণেই বিক্ষোভ দেখাতে রাস্তায় নেমে এসেছে মানুষ।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে ৪০০ কিলোমিটার পূর্বে এবং রাশিয়ান সীমান্তের ঠিক পাশেই খারকিভ শহরটি অবস্থিত। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটি মূলত একটি শিল্পাঞ্চল ও বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র। বর্তমানে এখানে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বসবাস করেন। অবশ্য বাসিন্দাদের মধ্যে অনেক রুশভাষীও আছেন।
সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলনস্কি সতর্ক করে বলেছিলেন, রাশিয়ার সঙ্গে জনসংখ্যার দৃঢ় সংযোগের কারণে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে। এতে এই শহরটি রুশ আগ্রাসনের প্রধান লক্ষ্য হতে পারে।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক /দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম 
























