বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুবির তিনদিন ব্যাপী ঈদ!

খুবির তিনদিন ব্যাপী ঈদ!

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবারের ন্যায় এবারও অনুষ্ঠিত হচ্ছে র‌্যাগ-ডে’২২। একসাথে একসাত স্লোগানে আগামী তিন দিনব্যাপী (৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি) খুবির ১৭ ব্যাচের র‍্যাগ ডে বা শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠীত হতে যাচ্ছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ তম ব্যাচ বা ‘ওয়ান সেভেন’ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসমাপনী হচ্ছে এবার। র‌্যাগ ডে’ ২২ এ মেতে উঠেছে খুবি ক্যাম্পাস। অপ্রত্যাশিত মহামারীর ছোবলের দীর্ঘ বিরতির পর জমকালো র‌্যাগ-ডে যেন সব নতুন আনন্দ সঞ্চার করবে আবার পুরো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি প্রাণে। র‌্যাগ-ডের উৎসবটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যেন এক ভিন্ন আয়োজনের স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ। ক্যাম্পাসে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা, ঘোরাঘুরি, ক্লাস অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে দৌড়াদৌড়ি এভাবে পার হয় জীবনের সব থেকে সেরা দিনগুলো। কখন যে সময় চলে যায় কেউ টেরই পায় না। চারটি বছর পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টুং করে বেজে ওঠে বিদায়ের ঘণ্টা। শিক্ষাজীবনের সেই মধুময় দিনগুলো বিদায়ী শিক্ষার্থীর পিছু ডাকে।

আর মধুময় দিনগুলোর স্মৃতি হৃদয়ের ফ্রেমে বেঁধে রাখতে, স্মরণীয় করে রাখতে আনন্দে, উচ্ছাসে, সস্নোগানে, রঙে-রূপে এক অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়ে র‌্যাগ-ডে পালন করেন শিক্ষার্থীরা। উৎসবমুখর পরিবেশে ক্যাম্পাসে আনন্দ উদযাপন করে শিক্ষার্থীরা। এবারের ব্যাচের নামকরণ করা হয়েছে ‘সত্যম ১৭’- একসাথে একসাত’। ‘সত্যম’ অর্থ সৃষ্টিশীল, সক্রিয়, আনন্দদায়ক, উদার, বন্ধুত্বপূর্ণ। এই সৃষ্টিশীল অর্থের মতই বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে শিক্ষার্থীরা এ দিনে নানা আয়োজন করে থাকে। উত্তেজনার কমতি নেই সারা মাস জুড়ে। চলছে দেওয়ালে দেওয়ালে সত্যমের ছাপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাজসজ্জায়ও কোনো কমতি নেই। খুবির দেয়াল আজ সত্যমে পরিপূর্ণ ক্যাফেটেরিয়া থেকে শুরু করে নিরব স্তম্ভ কিংবা দেয়ালের রঙিন আলপনা সেজেছে আবেগ আর আনন্দে। র‌্যাগ ডে উপলক্ষে খুবি ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়ে থাকে প্রতিবারেই। অনুষ্ঠান চলাকালীন ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

কতৃপক্ষের সর্বোচ্চ সুশৃংখল চেষ্টা ও নিরাপত্তায় চলে তিন দিনব্যাপী খুবির বিশেষ এই আনন্দ উৎসব। র‍্যাগ-ডের আগের দিন খুবি যেন আলোয় উদ্ভাসিত অচেনা কোনো জায়গা। আগের রাত থেকেই অনানুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে যায় উৎসব।জুনিয়র-সিনিয়রদের রং খেলা, হাসি, আড্ডায় হলগুলো মাতোয়ারা থাকে রাতভর। বিদায়ী বেদনার মাঝে কালার ফেস্ট এর ছোঁয়া জাগাবে বন্ধুত্বের আবেগের নতুন ভুবন। র‍্যাগের তৃতীয় দিন থাকে কনসার্টের রাত। আসবে বাংলাদেশের বিখ্যাত ব্যান্ড খ্যাতনামা ব্যান্ড দলসমূহের ব্যান্ডশো—নেমেসিস, ক্যাপটিক ফেইট, আর ইনদালো । ক্যাম্পাসজুড়ে দুপুর থেকেই চুলচেরা নিরাপত্তার ব্যবস্থা। সন্ধ্যার মধ্যেই মঞ্চের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো বটেই, চলে আসে পুরো খুলনার এদিক-ওদিক থেকে মানুষজন খুবিয়ানদের আনন্দে সামিল হতে। সত্যমদের ভাবনা, জীবনে চলার পথে ক্যাম্পাসের চার বছর একবারই আসে। এ পথে সবার উপাখ্যান বদলায় পরাবাস্তবতার ভাঙা গড়ায়। জীবন থমকে যায় কোন এক । তবুও থেমে থাকে না সৃষ্টিশীলতার উল্লাস, আনন্দ।

এই যাত্রার উন্মাদনায় আমরা সত্যম, আমরা ভাগ্যবান। এই যাত্রায় এক সাথে আছি আমরা এক সাত। আমাদের তাণ্ডব চলছে এবং চলবে। সত্যম১৭ ,একসাথেএকসাত ক্যাম্পাসের দেয়াল জুড়ে সত্যমের ছাপ রেখে জানান দেয়া হচ্ছে তাণ্ডবের!

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

খুবির তিনদিন ব্যাপী ঈদ!

প্রকাশিত সময় : ০৫:২৬:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবারের ন্যায় এবারও অনুষ্ঠিত হচ্ছে র‌্যাগ-ডে’২২। একসাথে একসাত স্লোগানে আগামী তিন দিনব্যাপী (৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি) খুবির ১৭ ব্যাচের র‍্যাগ ডে বা শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠীত হতে যাচ্ছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ তম ব্যাচ বা ‘ওয়ান সেভেন’ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসমাপনী হচ্ছে এবার। র‌্যাগ ডে’ ২২ এ মেতে উঠেছে খুবি ক্যাম্পাস। অপ্রত্যাশিত মহামারীর ছোবলের দীর্ঘ বিরতির পর জমকালো র‌্যাগ-ডে যেন সব নতুন আনন্দ সঞ্চার করবে আবার পুরো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি প্রাণে। র‌্যাগ-ডের উৎসবটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যেন এক ভিন্ন আয়োজনের স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ। ক্যাম্পাসে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা, ঘোরাঘুরি, ক্লাস অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে দৌড়াদৌড়ি এভাবে পার হয় জীবনের সব থেকে সেরা দিনগুলো। কখন যে সময় চলে যায় কেউ টেরই পায় না। চারটি বছর পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টুং করে বেজে ওঠে বিদায়ের ঘণ্টা। শিক্ষাজীবনের সেই মধুময় দিনগুলো বিদায়ী শিক্ষার্থীর পিছু ডাকে।

আর মধুময় দিনগুলোর স্মৃতি হৃদয়ের ফ্রেমে বেঁধে রাখতে, স্মরণীয় করে রাখতে আনন্দে, উচ্ছাসে, সস্নোগানে, রঙে-রূপে এক অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়ে র‌্যাগ-ডে পালন করেন শিক্ষার্থীরা। উৎসবমুখর পরিবেশে ক্যাম্পাসে আনন্দ উদযাপন করে শিক্ষার্থীরা। এবারের ব্যাচের নামকরণ করা হয়েছে ‘সত্যম ১৭’- একসাথে একসাত’। ‘সত্যম’ অর্থ সৃষ্টিশীল, সক্রিয়, আনন্দদায়ক, উদার, বন্ধুত্বপূর্ণ। এই সৃষ্টিশীল অর্থের মতই বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে শিক্ষার্থীরা এ দিনে নানা আয়োজন করে থাকে। উত্তেজনার কমতি নেই সারা মাস জুড়ে। চলছে দেওয়ালে দেওয়ালে সত্যমের ছাপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাজসজ্জায়ও কোনো কমতি নেই। খুবির দেয়াল আজ সত্যমে পরিপূর্ণ ক্যাফেটেরিয়া থেকে শুরু করে নিরব স্তম্ভ কিংবা দেয়ালের রঙিন আলপনা সেজেছে আবেগ আর আনন্দে। র‌্যাগ ডে উপলক্ষে খুবি ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়ে থাকে প্রতিবারেই। অনুষ্ঠান চলাকালীন ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

কতৃপক্ষের সর্বোচ্চ সুশৃংখল চেষ্টা ও নিরাপত্তায় চলে তিন দিনব্যাপী খুবির বিশেষ এই আনন্দ উৎসব। র‍্যাগ-ডের আগের দিন খুবি যেন আলোয় উদ্ভাসিত অচেনা কোনো জায়গা। আগের রাত থেকেই অনানুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে যায় উৎসব।জুনিয়র-সিনিয়রদের রং খেলা, হাসি, আড্ডায় হলগুলো মাতোয়ারা থাকে রাতভর। বিদায়ী বেদনার মাঝে কালার ফেস্ট এর ছোঁয়া জাগাবে বন্ধুত্বের আবেগের নতুন ভুবন। র‍্যাগের তৃতীয় দিন থাকে কনসার্টের রাত। আসবে বাংলাদেশের বিখ্যাত ব্যান্ড খ্যাতনামা ব্যান্ড দলসমূহের ব্যান্ডশো—নেমেসিস, ক্যাপটিক ফেইট, আর ইনদালো । ক্যাম্পাসজুড়ে দুপুর থেকেই চুলচেরা নিরাপত্তার ব্যবস্থা। সন্ধ্যার মধ্যেই মঞ্চের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো বটেই, চলে আসে পুরো খুলনার এদিক-ওদিক থেকে মানুষজন খুবিয়ানদের আনন্দে সামিল হতে। সত্যমদের ভাবনা, জীবনে চলার পথে ক্যাম্পাসের চার বছর একবারই আসে। এ পথে সবার উপাখ্যান বদলায় পরাবাস্তবতার ভাঙা গড়ায়। জীবন থমকে যায় কোন এক । তবুও থেমে থাকে না সৃষ্টিশীলতার উল্লাস, আনন্দ।

এই যাত্রার উন্মাদনায় আমরা সত্যম, আমরা ভাগ্যবান। এই যাত্রায় এক সাথে আছি আমরা এক সাত। আমাদের তাণ্ডব চলছে এবং চলবে। সত্যম১৭ ,একসাথেএকসাত ক্যাম্পাসের দেয়াল জুড়ে সত্যমের ছাপ রেখে জানান দেয়া হচ্ছে তাণ্ডবের!