শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইমাম-হাফেজ পরিচয়ে প্রতারণা, মাসে আয় লাখ লাখ টাকা

বড় মসজিদের ইমাম ও হাফেজ পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এই চক্রটি মাসে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতো। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-আব্দুল মান্নান শেখ (৪২), মো. কামরুল ওরফে কামরুজ্জামান (৩৪), আসাদুল্লাহ আল গালিব (২৬), মো. আমিনুর রহমান (৩৯) ও (৫) মো. শওকত আলী খান সাগর (৪৩)।

ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ‘নতুন সংঘবদ্ধ এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার বড় বড় মসজিদের ইমাম পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতো। মসজিদের ইমাম বা মোয়াজ্জিন পরিচয় ব্যবহার করে তাদের স্ত্রী ক্যানসার রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে নানা কৌশলে হাসপাতালের বকেয়া বিল, লাশ দাফন-কাফন করতে টাকা প্রয়োজন। এভাবে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতো তারা।’

পুলিশ জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে নাম ঠিকানা ও পদবী সংগ্রহ করে বড় মসজিদের ইমাম পরিচয়ে নানা কৌশল ব্যবহার করে ফোন দিতো তারা। এভাবে চক্রটি জনপ্রতি ২০-২৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছিল। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সন্দেহ থেকে এ বিষয়ে সিআইডির কাছে অভিযোগ করলে অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডি।

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, আব্দুল মান্নান শেখ চক্রের মূল হোতাসহ চক্রের পাঁচজনকে মিরপুর পল্লবী থানা ও তুরাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ক্লাব ও অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারদের নাম, ঠিকানা ও ব্যক্তিগত তথ্যসহ মোবাইল নম্বর সংবলিত ডাইরেক্টরি উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ঢাকার গুলশান ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, ঢাকা গলফ ক্লাব, চিটাগং বোট ক্লাব, বারিধারা কসমোপলিটন ক্লাব, মহাখালী ডিওএইচএস কাউন্সিল, ঢাকা ইউনিভারসিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারসহ মোট ৩৫টি ডাইরেক্টরি উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মোবাইল, ব্যাংকিংয়ের অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতি মাসে প্রত্যেকে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। ডাইরেক্টরি বইতে কে, কখন টাকা দিয়েছে বা কে কখন দেবে ইত্যাদি মন্তব্য তালিকাবদ্ধ করে রাখতো তারা।

গত দুই বছরের অধিক সময় ধরে তারা এই প্রতারণা করে আসছে। আসামি ও উদ্ধারকৃত আলামত সিআইডির কাছে রয়েছে বলেও জানান ডিআইজি ইমাম হোসেন।দৈনিক আমাদের সময়

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ইমাম-হাফেজ পরিচয়ে প্রতারণা, মাসে আয় লাখ লাখ টাকা

প্রকাশিত সময় : ০৪:৩৯:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ মার্চ ২০২২

বড় মসজিদের ইমাম ও হাফেজ পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এই চক্রটি মাসে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতো। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-আব্দুল মান্নান শেখ (৪২), মো. কামরুল ওরফে কামরুজ্জামান (৩৪), আসাদুল্লাহ আল গালিব (২৬), মো. আমিনুর রহমান (৩৯) ও (৫) মো. শওকত আলী খান সাগর (৪৩)।

ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ‘নতুন সংঘবদ্ধ এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার বড় বড় মসজিদের ইমাম পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতো। মসজিদের ইমাম বা মোয়াজ্জিন পরিচয় ব্যবহার করে তাদের স্ত্রী ক্যানসার রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে নানা কৌশলে হাসপাতালের বকেয়া বিল, লাশ দাফন-কাফন করতে টাকা প্রয়োজন। এভাবে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতো তারা।’

পুলিশ জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে নাম ঠিকানা ও পদবী সংগ্রহ করে বড় মসজিদের ইমাম পরিচয়ে নানা কৌশল ব্যবহার করে ফোন দিতো তারা। এভাবে চক্রটি জনপ্রতি ২০-২৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছিল। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সন্দেহ থেকে এ বিষয়ে সিআইডির কাছে অভিযোগ করলে অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডি।

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, আব্দুল মান্নান শেখ চক্রের মূল হোতাসহ চক্রের পাঁচজনকে মিরপুর পল্লবী থানা ও তুরাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ক্লাব ও অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারদের নাম, ঠিকানা ও ব্যক্তিগত তথ্যসহ মোবাইল নম্বর সংবলিত ডাইরেক্টরি উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ঢাকার গুলশান ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, ঢাকা গলফ ক্লাব, চিটাগং বোট ক্লাব, বারিধারা কসমোপলিটন ক্লাব, মহাখালী ডিওএইচএস কাউন্সিল, ঢাকা ইউনিভারসিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারসহ মোট ৩৫টি ডাইরেক্টরি উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মোবাইল, ব্যাংকিংয়ের অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতি মাসে প্রত্যেকে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। ডাইরেক্টরি বইতে কে, কখন টাকা দিয়েছে বা কে কখন দেবে ইত্যাদি মন্তব্য তালিকাবদ্ধ করে রাখতো তারা।

গত দুই বছরের অধিক সময় ধরে তারা এই প্রতারণা করে আসছে। আসামি ও উদ্ধারকৃত আলামত সিআইডির কাছে রয়েছে বলেও জানান ডিআইজি ইমাম হোসেন।দৈনিক আমাদের সময়