শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছুরিকাঘাতে আহত রাবি শিক্ষার্থী, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

অতর্কিত হামলায় ছুরিকাঘাতে নাফি (২২) নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমরা অতি দ্রুত দোষীকে আইনের আওতায় আনতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। একই সাথে ঐ মেস মালিককে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। এছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে আশেপাশের সকাল মেস মালিককের সাথে আলোচনায় বসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য নাফিকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাঁর সকল চিকিৎসা ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গ্রহণ করবে।

অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নুর বলেন, এটি নিঃসন্দেহে একটি পূর্ব পরিকল্পিত আক্রমণ। একটি চরমপন্থী গোষ্ঠী এই হামলা করেছে বলে তিনি জানান।

উপস্থিত শিক্ষার্থীরা এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও আইনের আওতায় আনতে দুইদিন সময় বেঁধে দিয়েছে। তাঁরা আরও বলেছে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

উল্লেখ্য, আহত  নাফি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের (২০১৯-২০ সেশন) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। নাফির বাসা টাঙ্গাইল জেলায়। নাফি বিশ্ববিদ্যালয়ের  মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনাটির সূত্রপাত গতকাল (৯ মার্চ) আনুমানিক রাত ১১:৪৫ ঘটিকায়। নগরীর আমজাদের মোড় সংলগ্ন সোরাবানের মোড়ে এন আর ছাত্রাবাসে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শরীফ নামে এক শিক্ষার্থী থাকত। ঐ মেসে মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক। আর কেউ যদি রুমে নামাজ পড়তে চায় তাহলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। শরীফ নামের ঐ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা চলমান থাকায় সে রুমে নামাজ পড়ত ৷ এ নিয়ে ঐ মেসে থাকা কিছু এডমিশন পরিক্ষার্থী ছেলের সাথে শরীফের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শরীফ মেস মালিককে অভিযোগ করেন।

গতকাল রাতে অভিযোগের ভিত্তিতে মেসে একটি মিটিং বসেছিল। সেখানে শরীফের বন্ধু নাফিসহ, কয়েকজন ছোট ভাই গিয়েছিল। মিটিংয়ের একদম শেষ পর্যায়ে কিছু স্থানীয় ছেলে হঠাৎ করে মেসে ঢুকে দরজা লাগায় দেয় এবং ঝামেলায় সূত্রপাত ঘটায়। পরে শরীফ, নাফিসহ তাদের সকলে বের হতে ধরলে ভুক্তভোগী নাফিকে হামলাকারীরা ধরে ফেলে এবং পায়ে ও হাতে এলোপাতাড়ি চাকু মারে।

গুরুতর আহত অবস্থায় (ছুরিকাঘাত) নাফিকে তার সহপাঠিয়া উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) নিয়ে আসে। পরবর্তীতে আজ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

এবিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, আমরা এখনো লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কিছু করতে পারবো না। তাছাড়া আমরা বিষয়টা দেখছি বলে জানান তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ছুরিকাঘাতে আহত রাবি শিক্ষার্থী, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

প্রকাশিত সময় : ০৩:১৫:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২

অতর্কিত হামলায় ছুরিকাঘাতে নাফি (২২) নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমরা অতি দ্রুত দোষীকে আইনের আওতায় আনতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। একই সাথে ঐ মেস মালিককে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। এছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে আশেপাশের সকাল মেস মালিককের সাথে আলোচনায় বসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য নাফিকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাঁর সকল চিকিৎসা ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গ্রহণ করবে।

অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নুর বলেন, এটি নিঃসন্দেহে একটি পূর্ব পরিকল্পিত আক্রমণ। একটি চরমপন্থী গোষ্ঠী এই হামলা করেছে বলে তিনি জানান।

উপস্থিত শিক্ষার্থীরা এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও আইনের আওতায় আনতে দুইদিন সময় বেঁধে দিয়েছে। তাঁরা আরও বলেছে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

উল্লেখ্য, আহত  নাফি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের (২০১৯-২০ সেশন) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। নাফির বাসা টাঙ্গাইল জেলায়। নাফি বিশ্ববিদ্যালয়ের  মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনাটির সূত্রপাত গতকাল (৯ মার্চ) আনুমানিক রাত ১১:৪৫ ঘটিকায়। নগরীর আমজাদের মোড় সংলগ্ন সোরাবানের মোড়ে এন আর ছাত্রাবাসে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শরীফ নামে এক শিক্ষার্থী থাকত। ঐ মেসে মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক। আর কেউ যদি রুমে নামাজ পড়তে চায় তাহলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। শরীফ নামের ঐ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা চলমান থাকায় সে রুমে নামাজ পড়ত ৷ এ নিয়ে ঐ মেসে থাকা কিছু এডমিশন পরিক্ষার্থী ছেলের সাথে শরীফের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শরীফ মেস মালিককে অভিযোগ করেন।

গতকাল রাতে অভিযোগের ভিত্তিতে মেসে একটি মিটিং বসেছিল। সেখানে শরীফের বন্ধু নাফিসহ, কয়েকজন ছোট ভাই গিয়েছিল। মিটিংয়ের একদম শেষ পর্যায়ে কিছু স্থানীয় ছেলে হঠাৎ করে মেসে ঢুকে দরজা লাগায় দেয় এবং ঝামেলায় সূত্রপাত ঘটায়। পরে শরীফ, নাফিসহ তাদের সকলে বের হতে ধরলে ভুক্তভোগী নাফিকে হামলাকারীরা ধরে ফেলে এবং পায়ে ও হাতে এলোপাতাড়ি চাকু মারে।

গুরুতর আহত অবস্থায় (ছুরিকাঘাত) নাফিকে তার সহপাঠিয়া উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) নিয়ে আসে। পরবর্তীতে আজ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

এবিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, আমরা এখনো লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কিছু করতে পারবো না। তাছাড়া আমরা বিষয়টা দেখছি বলে জানান তিনি।