লালের সঙ্গে নীল মিশিয়ে / হলুদ, সবুজ, গোলাপি / আবির তোরা নে মাখিয়ে/ দোলেতে আর নিবি কী?’ অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দোলযাত্রা উপলক্ষে নানা রঙের আবিরে আজ রঙিন হবেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। ফাল্গুনের পূর্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। দোল আমাদের ঋতুচক্রেরও শেষ উৎসব।
পাতাঝরার সময়, বৈশাখের প্রতীক্ষা- এমনই এক আবহে শিশু থেকে বয়স্ক সবাই আজ একে অন্যকে আবির মাখিয়ে দিনভর মেতে থাকবেন আনন্দে। প্রতি বছর রাজধানীর পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, বাংলাবাজার, লক্ষ্মীবাজারসহ হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় দোল উৎসব উদযাপিত হয়। এ উৎসব সামনে রেখে সপ্তাহখানেক আগে থেকে পুরান ঢাকার বিভিন্ন রঙের দোকানে বিক্রি শুরু হয়েছে নানা ধরনের রঙ।
এ উৎসবকে হোলি নামেও অভিহিত করা হয়। আদিতে দোলযাত্রা ও হোলি উৎসব ছিল আলাদা। দোলযাত্রা একান্তই বাঙালিদের রঙিন উৎসব। আর হোলি হলো অবাঙালিদের উৎসব। তবে বর্তমানে দুটি উৎসব একীভূত হয়েছে। বৈষ্ণব অনুসারীদের মতে, দোল পূর্ণিমার দিন শ্রীকৃষ্ণ আবির নিয়ে শ্রীরাধা ও অন্য গোপীদের সঙ্গে রঙ খেলায় মত্ত ছিলেন। সেখান থেকেই দোলযাত্রার শুরু। পণ্ডিতদের মতে, রাধাকৃষ্ণের দোলনায় দোলা বা দোলায় গমন করা থেকেই ‘দোল’ কথাটির উৎপত্তি। আবার দোল পূর্ণিমা তিথিতে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মগ্রহণকে কেন্দ্র করেও এই মহোৎসব পালন করা হয়। এ তিথিকে গৌর পূর্ণিমাও বলা হয়। বাঙালির দোল বৈষ্ণব ধর্মাশ্রিত একটি উৎসব হলেও রবীন্দ্রনাথ দোলযাত্রার ধর্মীয় অংশকে বাদ দিয়ে তার সাংস্কৃতিক দিকটিকে নিয়ে দোলযাত্রাকে ‘বসন্ত উৎসব’-এ রূপান্তরিত করেন। খানিকটা সেই সূত্র ধরেই দোল প্রীতির উৎসব, প্রেমের উৎসব।