শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাবি ছাত্র জাবেরের মরদেহ ভেসে উঠলো শীতলক্ষ্যায়

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলামিন নগর এলাকায় সিটি গ্রুপের কার্গো জাহাজের ধাক্কায় এম এল আশরাফ উদ্দিন নামের একটি লঞ্চ ডুবে যাওয়ার দু’দিনের মাথায় নিখোঁজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল জাবেরের (৩০) মরদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে উঠেছে। আজ মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সকালে শীতলক্ষ্যা সেতুর দক্ষিণপাড়ের শাহ সিমেন্ট এলাকায় তার মরদেহ ভেসে আসে। ফায়ার সার্ভিস মরদেহটি উদ্ধারের পর পরিবার তার পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তাছাড়া শীতলক্ষ্যার কাঁচপুর সেতুর কাছাকাছি জায়গা থেকে ভোরের দিকে এক শিশুর ভাসমান মরদেহও উদ্ধার করা হয়। শিশুটির পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, সকালে শীতলক্ষ্যা সেতুর দক্ষিণপাড়ের শাহ সিমেন্ট এলাকায় জাবেরের মরদেহ ভেসে আসে। ফায়ার সার্ভিস মরদেহটি উদ্ধারের পর পরিবার তার পরিচয় নিশ্চিত করেছে। জাবেরের বাবা ওয়াদুদ সিদ্দিক জানান, জাবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। দেড় মাস আগে বিয়ে করেছেন। ছুটির দিন তিন বন্ধুর সঙ্গে তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জ যাচ্ছিলেন। লঞ্চডুবির পর তার তিন বন্ধু সাঁতরে পারে উঠলেও জাবেরের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। নৌ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, দুজনের মরদেহ তীরে আনা হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। এর আগে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলামিন নগর এলাকায় রবিবার বেলা ২টার দিকে সিটি গ্রুপের কার্গো জাহাজের ধাক্কায় এম এল আশরাফ উদ্দিন নামের একটি লঞ্চ ডুবে যায়। নিখোঁজদের উদ্ধারে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। রাতভর চেষ্টায় সোমবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে লঞ্চটি শীতলক্ষ্যার পাড়ে আনা হয়। তবে লঞ্চের ভেতর কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। লঞ্চডুবির ঘটনায় জাহাজের চালক, মাস্টারসহ আটজনকে তিন দিন করে রিমান্ডে পেয়েছে নৌপুলিশ। জানা যায়, জাবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদ্দিন হলে। বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। রবিবার জাবেরের নিখোঁজের পর তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধু ও ঢাবির আরবি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম বলেছিলেন, চার বন্ধু মিলে অবসর সময়ে লঞ্চে করে ঘুরতে মুন্সীগঞ্জে যাচ্ছিলেন জাবের। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, কার্গো জাহাজের ধাক্কায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবে যায় সেই লঞ্চ। এমন সময় জীবন বাঁচাতে নদীতে লাফিয়ে পরেছে। অনেকেই সাঁতার কেটে তীরে উঠেছে।তার সহযোগী তিন বন্ধু সাঁতার কেটে তীরে এসে বেঁচে যান। কিন্তু জাবের জানতেন না কিভাবে সাঁতার কাটতে হয়। যার ফলে অসংখ্য প্রাণের নিখোঁজের কাতারে তাকে শামিল হতে হয়। আবদুল্লাহ আল জাবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন রাজধানীর ডেমরার দারুন্নাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে। চাকরির পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নিয়োজিত ছিলেন বলে জানান তার বন্ধু আশরাফুল।ডেল্টা টাইমস্

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ঢাবি ছাত্র জাবেরের মরদেহ ভেসে উঠলো শীতলক্ষ্যায়

প্রকাশিত সময় : ০৩:৫৩:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ মার্চ ২০২২

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলামিন নগর এলাকায় সিটি গ্রুপের কার্গো জাহাজের ধাক্কায় এম এল আশরাফ উদ্দিন নামের একটি লঞ্চ ডুবে যাওয়ার দু’দিনের মাথায় নিখোঁজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল জাবেরের (৩০) মরদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে উঠেছে। আজ মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সকালে শীতলক্ষ্যা সেতুর দক্ষিণপাড়ের শাহ সিমেন্ট এলাকায় তার মরদেহ ভেসে আসে। ফায়ার সার্ভিস মরদেহটি উদ্ধারের পর পরিবার তার পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তাছাড়া শীতলক্ষ্যার কাঁচপুর সেতুর কাছাকাছি জায়গা থেকে ভোরের দিকে এক শিশুর ভাসমান মরদেহও উদ্ধার করা হয়। শিশুটির পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, সকালে শীতলক্ষ্যা সেতুর দক্ষিণপাড়ের শাহ সিমেন্ট এলাকায় জাবেরের মরদেহ ভেসে আসে। ফায়ার সার্ভিস মরদেহটি উদ্ধারের পর পরিবার তার পরিচয় নিশ্চিত করেছে। জাবেরের বাবা ওয়াদুদ সিদ্দিক জানান, জাবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। দেড় মাস আগে বিয়ে করেছেন। ছুটির দিন তিন বন্ধুর সঙ্গে তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জ যাচ্ছিলেন। লঞ্চডুবির পর তার তিন বন্ধু সাঁতরে পারে উঠলেও জাবেরের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। নৌ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, দুজনের মরদেহ তীরে আনা হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। এর আগে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলামিন নগর এলাকায় রবিবার বেলা ২টার দিকে সিটি গ্রুপের কার্গো জাহাজের ধাক্কায় এম এল আশরাফ উদ্দিন নামের একটি লঞ্চ ডুবে যায়। নিখোঁজদের উদ্ধারে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। রাতভর চেষ্টায় সোমবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে লঞ্চটি শীতলক্ষ্যার পাড়ে আনা হয়। তবে লঞ্চের ভেতর কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। লঞ্চডুবির ঘটনায় জাহাজের চালক, মাস্টারসহ আটজনকে তিন দিন করে রিমান্ডে পেয়েছে নৌপুলিশ। জানা যায়, জাবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদ্দিন হলে। বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। রবিবার জাবেরের নিখোঁজের পর তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধু ও ঢাবির আরবি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম বলেছিলেন, চার বন্ধু মিলে অবসর সময়ে লঞ্চে করে ঘুরতে মুন্সীগঞ্জে যাচ্ছিলেন জাবের। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, কার্গো জাহাজের ধাক্কায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবে যায় সেই লঞ্চ। এমন সময় জীবন বাঁচাতে নদীতে লাফিয়ে পরেছে। অনেকেই সাঁতার কেটে তীরে উঠেছে।তার সহযোগী তিন বন্ধু সাঁতার কেটে তীরে এসে বেঁচে যান। কিন্তু জাবের জানতেন না কিভাবে সাঁতার কাটতে হয়। যার ফলে অসংখ্য প্রাণের নিখোঁজের কাতারে তাকে শামিল হতে হয়। আবদুল্লাহ আল জাবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন রাজধানীর ডেমরার দারুন্নাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে। চাকরির পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নিয়োজিত ছিলেন বলে জানান তার বন্ধু আশরাফুল।ডেল্টা টাইমস্