মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনের পক্ষে জাতিসংঘে বাংলাদেশের ভোট 

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার জেরে যে মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব আনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ। ১৪০ ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়েছে। জাতিসংঘের ওয়েবসাইট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ইউক্রেনের পক্ষ থেকে অধিবেশনে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়। এতে ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং মানবিক সহায়তার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

একইসঙ্গে রুশ হামলার ফলে দেশটিতে সৃষ্ট ‘ভয়াবহ’ মানবিক পরিস্থিতির জন্য মস্কোর সমালোচনা করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে সাধারণ পরিষদের জরুরি অধিবেশনে এই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে অংশ নেয় সদস্য দেশগুলো। শেষ পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে পাস হয় প্রস্তাবটি। তবে রাশিয়ার জন্য এটি মেনে চলার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।

এদিনের ভোটাভুটিতে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় বাংলাদেশসহ ১৪০ সদস্য দেশ। বিপক্ষে ভোট দেয় পাঁচটি দেশ। আর ভোটদানে বিরত ছিল চীন, পাকিস্তান ও ভারতসহ ৩৮ দেশ।

মধ্যপ্রাচ্যের আলোচিত দুই মার্কিন মিত্র সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। বিপক্ষে ভোট দেওয়া পাঁচ দেশ হলো রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া ও সিরিয়া।

এর আগে গত ২ মার্চ ইউক্রেনে হামলা বন্ধে একটি প্রস্তাব পাস করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে। ওই সময়ে ১৪১টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। তবে তখন ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। তখন অনেকেই ভেবেছিলেন কিয়েভের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার উৎখাত করা সম্ভব। তবে বুধবার যখন এই আগ্রাসনের এক মাস পূর্ণ হয়েছে তখন রুশ বাহিনী কার্যত থমকে আছে। অসংখ্য রুশ সেনার প্রাণহানির পরও অবিলম্বে এই যুদ্ধ অবসানের কোনও ইঙ্গিত দৃশ্যত নেই।

অন্যদিকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব টের পেতে শুরু করেছে মস্কো। রাশিয়ার ওপর নতুন করে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ইউক্রেনকে আরও সামরিক সহযোগিতা দেওয়া নিয়ে এই সপ্তাহে ব্রাসেলস এবং ওয়ারশোতে বৈঠকে বসবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তার গুরুত্বপূর্ণ মিত্ররা।

ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্য সরবরাহ নিয়ে আশঙ্কা, নতুন বিশ্ব ব্যবস্থায় চীন-রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে আর্থিক এবং ভূরাজনৈতিক আলোড়ন তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হলো।

তবে মস্কোর মিত্র হিসেবে পরিচিত চীন এদিন সরাসরি রাশিয়ার পক্ষে ভোট দেওয়ার বদলে ভোট দেওয়া  থেকে বিরত ছিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ইউক্রেনের পক্ষে জাতিসংঘে বাংলাদেশের ভোট 

প্রকাশিত সময় : ০২:২৩:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ মার্চ ২০২২

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার জেরে যে মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব আনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ। ১৪০ ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়েছে। জাতিসংঘের ওয়েবসাইট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ইউক্রেনের পক্ষ থেকে অধিবেশনে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়। এতে ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং মানবিক সহায়তার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

একইসঙ্গে রুশ হামলার ফলে দেশটিতে সৃষ্ট ‘ভয়াবহ’ মানবিক পরিস্থিতির জন্য মস্কোর সমালোচনা করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে সাধারণ পরিষদের জরুরি অধিবেশনে এই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে অংশ নেয় সদস্য দেশগুলো। শেষ পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে পাস হয় প্রস্তাবটি। তবে রাশিয়ার জন্য এটি মেনে চলার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।

এদিনের ভোটাভুটিতে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় বাংলাদেশসহ ১৪০ সদস্য দেশ। বিপক্ষে ভোট দেয় পাঁচটি দেশ। আর ভোটদানে বিরত ছিল চীন, পাকিস্তান ও ভারতসহ ৩৮ দেশ।

মধ্যপ্রাচ্যের আলোচিত দুই মার্কিন মিত্র সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। বিপক্ষে ভোট দেওয়া পাঁচ দেশ হলো রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া ও সিরিয়া।

এর আগে গত ২ মার্চ ইউক্রেনে হামলা বন্ধে একটি প্রস্তাব পাস করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে। ওই সময়ে ১৪১টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। তবে তখন ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। তখন অনেকেই ভেবেছিলেন কিয়েভের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার উৎখাত করা সম্ভব। তবে বুধবার যখন এই আগ্রাসনের এক মাস পূর্ণ হয়েছে তখন রুশ বাহিনী কার্যত থমকে আছে। অসংখ্য রুশ সেনার প্রাণহানির পরও অবিলম্বে এই যুদ্ধ অবসানের কোনও ইঙ্গিত দৃশ্যত নেই।

অন্যদিকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব টের পেতে শুরু করেছে মস্কো। রাশিয়ার ওপর নতুন করে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ইউক্রেনকে আরও সামরিক সহযোগিতা দেওয়া নিয়ে এই সপ্তাহে ব্রাসেলস এবং ওয়ারশোতে বৈঠকে বসবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তার গুরুত্বপূর্ণ মিত্ররা।

ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্য সরবরাহ নিয়ে আশঙ্কা, নতুন বিশ্ব ব্যবস্থায় চীন-রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে আর্থিক এবং ভূরাজনৈতিক আলোড়ন তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হলো।

তবে মস্কোর মিত্র হিসেবে পরিচিত চীন এদিন সরাসরি রাশিয়ার পক্ষে ভোট দেওয়ার বদলে ভোট দেওয়া  থেকে বিরত ছিল।