পাক পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের আগে কখনো পদত্যাগ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। একই সঙ্গে যারা তার বিরুদ্ধে গেছেন তাদের কোনোদিন ক্ষমা না করার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পাক প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পাকিস্তানি মিডিয়া দ্য ডনের প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী রবিবার (২ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে। পাকিস্তানের সংসদে ৩৪২ আসনের মধ্যে ১৭২ ভোট নিয়ে বিরোধী দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেই ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রিত্ব বাতিল হবে।
ইমরান খানের জোটের প্রধান শরিক এমকিউএম গতকাল বুধবার বিরোধী জোটে যোগ দেওয়ার পরপরই বিরোধী দল সংসদে এই সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে। কাগজে-কলমে পার্লামেন্টে বিরোধী দলের ভোট এখন ১৭৫, আর সরকারি দলের ১৬৪।
পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি চাই তরুণরা আমার কথা মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করুক। আমরা ভয় করি। আমরা টাকার পেছনে ঘুরি। আমরা পিঁপড়ার মতো কাজ করি। আমি পাকিস্তানের উত্থান-পতন দেখেছি। আমি যখন স্কুলে পড়তাম, তখন রাষ্ট্রগুলোর কাছে পাকিস্তান ভালো উদাহরণ ছিল। দক্ষিণ কোরিয়াও এসেছে পাকিস্তানে। কিন্তু আমি এটার অবনতিও দেখেছি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে ইমরান খান বলেন, আমাদের বলা হয়েছিল, যদি আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন না করি, তাহলে তারা আহত ভালুকের মতো আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। ৯/১১-এর সময়, আমরা বলেছিলাম যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটলে আমাদের তাদের সাহায্য করা উচিৎ। কিন্তু এটি আমাদের লড়াই ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অনেক পাকিস্তানি প্রাণ উৎসর্গ করেছেন, কেউ কি আমাদের ধন্যবাদ দিয়েছে? কেউ কি শুকরিয়া বলেছে?
দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ইমরান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের নীতি কারও বিরুদ্ধে যাবে না। কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ হলেই ভারতের সঙ্গে আমাদের বিরোধ শুরু হয়।
পাক প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ওরা বলে, আমি দেশকে ধ্বংস করেছি কিন্তু শাসন করেছি মাত্র তিন বছর। আমি চ্যালেঞ্জ করতে পারি যে এই বিগত সাড়ে তিন বছরে আমি যা করেছি, তা কখনো অর্জন করা যায়নি।
এর আগে তিনি নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য ও সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন।বিশ্লেষকদের মতে, তারকা ক্রিকেটার ইমরান ২০১৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। যদিও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাকে। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও দিন দিন বাড়তে থাকা ঘাটতির জেরে ইমরানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সমালোচনার মুখে পড়েছে। এছাড়া সামরিক বাহিনীর সঙ্গে টানাপড়েনের কথাও শোনা যাচ্ছে। এরই মাঝে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পার্লামেন্টে উত্থাপিত হয়।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক /দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম 
























