শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানুষের মনে ঈদ আনন্দ নেই: মির্জা ফখরুল

দেশের মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ নেই বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (৩ মে) ঈদের দিন সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ও পুস্পমাল্য অর্পণের পর দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে দলের মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ঈদে আমরা সবসময় এই প্রত্যাশা করি যে, দেশের সকল মানুষের মধ্যে আনন্দ আসবে এবং আনন্দের সঙ্গে তারা ঈদুল ফিতর পালন করবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, যেভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যেভাবে দেশে অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে এবং একই সঙ্গে সাধারণ মানুষ কর্মচ্যুত হচ্ছেন সেখানে আনন্দের সঙ্গে ঈদুল ফিতর পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। মানুষের মধ্যে আনন্দ নেই।

দলের নেতা-কর্মীদের অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে আমরা দলের প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে আসি জিয়ারত করতে। এবার অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমরা এসেছি যে, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তিনি মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে নির্বাসিত অবস্থায় আছেন।

আমাদের প্রায় ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে আসামি করা হয়েছে, প্রায় ৬‘শ বেশি নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে, সহাস্রাধিক নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এ রকম একটা চরম ফ্যাসিবাদী শাসনে আজকে গণতান্ত্রিক অধিকারকে সম্পূর্ণভাবে হরণ করা হয়েছে এবং মানুষের যে মৌলিক অধিকারগুলো আছে তা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে।

সাজাপ্রাপ্ত সাংসদ হাজি সেলিমের বিদেশে গমনের প্রসঙ্গ টেনে সাজাপ্রাপ্ত হাজি সেলিম পেলেও খালেদা জিয়ারকে রাজনৈতিক কারণেই সরকার বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, এই ঘটনা(সাজাপ্রাপ্ত হাজি সেলিম চিকিতসার জন্য বিদেশ যাত্রা) থেকে প্রমাণিত হয় যে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাকে আটক করে রাখা হয়েছে। এটা তো আপনার এখন আর কারো কাছে এটার কোনো প্রশ্ন করতে পারে না। এজন্য শুধু আমরা নই বিদেশেও বলা হচ্ছে যে, তার এই সাজা দেয়া হয়েছে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে।

আপনারা দেখেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্ট যেটা কিছুদিন আগে বেরিয়েছে সেখানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মামলাকে সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক মামলা এবং সাজা দেওয়াটাও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য দেয়া হয়েছিলো তা উল্লেখ করা হয়েছে। এটা সরকার ক্ষমতা আসার পর থেকেই যারা এদেশে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন, যারা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য লড়াই করেন তাদের বিরুদ্ধে তারা এই ধরনের দমনমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। বিশেষ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক, গণতন্ত্রের প্রতীক, গণতন্ত্রের মাতা তাকে অন্যায়ভাবে আটক করে রেখে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে চায়।

সকাল সাড়ে ১১টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে এসে তার কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করে ফাতেহা পাঠ করেন।

এ সময়ে বিএনপির জয়নুল আবদিন ফারুক, রুহুল কবির রিজভী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব উ্ন নবী খান সোহেল, মীর সরফত আলী সপু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, ঢাকা মহানগরে আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, হাবিবুর রশীদ হাবিব, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জু্য়েল, ওলামা দলের শাহ নেছারুল হক, মতস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবদুর রহীম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ প্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

কারাভোগের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রতিটি ঈদে তার স্বামীর কবর জিয়ারত করতেন। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষায় মহাসচিবসহ নেতৃবৃন্দরা প্রতিবছর জিয়ার কবর জিয়ারত করেন।ভোরের কাগজ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

মানুষের মনে ঈদ আনন্দ নেই: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত সময় : ০৯:০৮:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ মে ২০২২

দেশের মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ নেই বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (৩ মে) ঈদের দিন সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ও পুস্পমাল্য অর্পণের পর দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে দলের মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ঈদে আমরা সবসময় এই প্রত্যাশা করি যে, দেশের সকল মানুষের মধ্যে আনন্দ আসবে এবং আনন্দের সঙ্গে তারা ঈদুল ফিতর পালন করবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, যেভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যেভাবে দেশে অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে এবং একই সঙ্গে সাধারণ মানুষ কর্মচ্যুত হচ্ছেন সেখানে আনন্দের সঙ্গে ঈদুল ফিতর পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। মানুষের মধ্যে আনন্দ নেই।

দলের নেতা-কর্মীদের অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে আমরা দলের প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে আসি জিয়ারত করতে। এবার অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমরা এসেছি যে, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তিনি মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে নির্বাসিত অবস্থায় আছেন।

আমাদের প্রায় ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে আসামি করা হয়েছে, প্রায় ৬‘শ বেশি নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে, সহাস্রাধিক নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এ রকম একটা চরম ফ্যাসিবাদী শাসনে আজকে গণতান্ত্রিক অধিকারকে সম্পূর্ণভাবে হরণ করা হয়েছে এবং মানুষের যে মৌলিক অধিকারগুলো আছে তা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে।

সাজাপ্রাপ্ত সাংসদ হাজি সেলিমের বিদেশে গমনের প্রসঙ্গ টেনে সাজাপ্রাপ্ত হাজি সেলিম পেলেও খালেদা জিয়ারকে রাজনৈতিক কারণেই সরকার বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, এই ঘটনা(সাজাপ্রাপ্ত হাজি সেলিম চিকিতসার জন্য বিদেশ যাত্রা) থেকে প্রমাণিত হয় যে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাকে আটক করে রাখা হয়েছে। এটা তো আপনার এখন আর কারো কাছে এটার কোনো প্রশ্ন করতে পারে না। এজন্য শুধু আমরা নই বিদেশেও বলা হচ্ছে যে, তার এই সাজা দেয়া হয়েছে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে।

আপনারা দেখেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্ট যেটা কিছুদিন আগে বেরিয়েছে সেখানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মামলাকে সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক মামলা এবং সাজা দেওয়াটাও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য দেয়া হয়েছিলো তা উল্লেখ করা হয়েছে। এটা সরকার ক্ষমতা আসার পর থেকেই যারা এদেশে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন, যারা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য লড়াই করেন তাদের বিরুদ্ধে তারা এই ধরনের দমনমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। বিশেষ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক, গণতন্ত্রের প্রতীক, গণতন্ত্রের মাতা তাকে অন্যায়ভাবে আটক করে রেখে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে চায়।

সকাল সাড়ে ১১টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে এসে তার কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করে ফাতেহা পাঠ করেন।

এ সময়ে বিএনপির জয়নুল আবদিন ফারুক, রুহুল কবির রিজভী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব উ্ন নবী খান সোহেল, মীর সরফত আলী সপু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, ঢাকা মহানগরে আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, হাবিবুর রশীদ হাবিব, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জু্য়েল, ওলামা দলের শাহ নেছারুল হক, মতস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবদুর রহীম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ প্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

কারাভোগের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রতিটি ঈদে তার স্বামীর কবর জিয়ারত করতেন। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষায় মহাসচিবসহ নেতৃবৃন্দরা প্রতিবছর জিয়ার কবর জিয়ারত করেন।ভোরের কাগজ