যতই গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করা হোক না কেন, কিংবা যত আধুনিক অস্ত্রই কিয়েভে পাঠানো হোক না কেন, রাশিয়াকে থামাতে পারবে না পশ্চিমা বিশ্ব। বৃহস্পতিবার ক্রেমলিন এ হুঁশিয়ারি করেছে বলে খবর দিয়েছে বিবিসি।মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রুশ জেনারেলদের হত্যা করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী- নিউইয়র্ক টাইমসের এমন সংবাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, রাশিয়াকে তার লক্ষ্য অর্জন থেকে চুল পরিমাণ বিচ্যুত করতে পারবে না কেউ।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ নামে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোয় ইউক্রেনের সম্ভাব্য সদস্যপদকে ঘিরে যে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল রাশিয়া, এর থেকে রক্ষা পেতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ওই অভিযানের নির্দেশ দেন। ৭২ দিনের এ যুদ্ধে উভয়পক্ষের সামরিক ও বেসামরিক উভয় ধরনের ক্ষতি হয়েছে বেশ। কতজন মানুষ ও সেনা নিহত হয়েছে, এ নিয়ে বিতর্কিত তথ্য পাওয়া যায়। তবে, লাখ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মরিপোলের অবরুদ্ধ আজভস্তাল ইস্পাত কারখানায় বৃহস্পতিবার পুরোদমে হামলা শুরু করেছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন। মরিপোলে কেবল এই কারখানা এলাকাটি ইউক্রেনীয়দের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আজভ রেজিমেন্টের কমান্ডার জানান, কারখানা এলাকার ভেতরে দ্বিতীয় দিনের মতো ‘কঠিন রক্তক্ষয়ী লড়াই’ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
টানা কয়েক দিনের হামলার পর রুশ বাহিনী ‘কারখানা এলাকায়’ ঢুকে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে বিবিসি আলাদাভাবে কারখানায় রুশ বাহিনীর হামলার বিষয়টি যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে। এরই মধ্যে দেড় শতাধিক বেসামরিক নাগরিককে কারখানা থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। এখনো সেখানে শিশুসহ প্রায় ২০০ বেসামরিক নাগরিক অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কারখানা এলাকায় আটকেপড়া ব্যক্তিদের জীবন বাঁচাতে জাতিসংঘের প্রতি আবারও আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ফোনে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রত্যেকেই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের বাঁচাতে আমরা আপনাদের সহায়তা চাই।’
এই সপ্তাহে জাতিসংঘ ও রেডক্রসের নেতৃত্বে সফলভাবে শতাধিক বেসামরিক লোকজনকে কারখানা থেকে সরিয়ে আনায় গুতেরেসকে ধন্যবাদ জানান জেলেনস্কি। তবে আজভস্তাল থেকে আহত সবাইকে সরিয়ে আনতে সহায়তা করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণার জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া। ৯ মে রাশিয়ার বিজয় দিবসে প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন আনুষ্ঠানিক যুদ্ধের ঘোষণা দেবেন বলে জল্পনা করছিল পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু এটিকে ‘বাজে ধারণা’ বলে মনে করছে ক্রেমলিন।
৯ মে রাশিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয় দিবস। ১৯৪৫ সালের এই দিনে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর পরাজয় ঘটে রাশিয়ায়। তারপর থেকেই রাশিয়া দিনটি স্মরণ করে আসছে। এমন প্রেক্ষাপটে ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, দিবসটি উপলক্ষে যুদ্ধ ঘোষণার যে গুজব শোনা যাচ্ছে সেটি আদৌ সত্য নয়।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক /দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম 
























