বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মধ্যপ্রাচ্যে তীব্র হচ্ছে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক 

দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখপাত্র নুপুর শর্মা সম্প্রতি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। পরবর্তীকালে সেই ঘটনার নিন্দায় সরব হয়ে উঠে উপসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ। একই সঙ্গে নবী (সা.)-কে নিয়ে বিজেপি নেতাদের এমন অবমাননাকর বক্তব্যের দায়ে উপসাগরীয় কয়েকটি দেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বানও ক্রমবর্ধমান হারে জোরাল হচ্ছে।

বুধবার (৮ জুন) মার্কিন মিডিয়া ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোতে নবী (সা.)-কে অবমাননার প্রতিবাদে টুইটার এবং ফেসবুকে ‘ভারতীয় পণ্য বর্জন করুন’, ‘নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননা বন্ধ করুন’ প্রচারণা ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার এই হিন্দু রাষ্ট্রটির মোট বাণিজ্যের এক দশমাংশেরও বেশি হয় উপসাগরীয় দেশগুলোতে।

ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক মুখপাত্র নুপুর শর্মা গত মে মাসে এক টেলিভিশন শোতে অংশ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। পরবর্তীকালে দলটির নয়াদিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন জিন্দালও নুপুর শর্মার মন্তব্যের সমর্থনে টুইটারে পোস্ট করেন।

মূলত তাদের ওই মন্তব্য দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এমনকি বিজেপির দুই নেতার মন্তব্যের জেরে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের মুসলিমরা বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলন করেন। ধীরে ধীরে সেই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বাইরের মুসলিম বিশ্বেও।

বিজেপির দুই সদস্যের বিতর্কিত এই মন্তব্যের জেরে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের তলব করে নিন্দা এবং তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। গত আট বছর যাবত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং ভারতীয় শস্য, পোশাক এবং যন্ত্রপাতির বাজার তৈরিতে সম্পর্ক গড়ার পেছনে ব্যয় করেছেন নরেন্দ্র মোদী।

এমন পরিস্থিতিতে উপসাগরীয় অঞ্চলে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক মোদীর জন্য আরও বেশি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

উল্লেখ্য, ভারতের ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যের প্রায় ১০ শতাংশই হয় কেবল সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের সাথে।

সূত্র : এএফপি, ব্লুমবার্গ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

মধ্যপ্রাচ্যে তীব্র হচ্ছে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক 

প্রকাশিত সময় : ০৪:৩২:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুন ২০২২

দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখপাত্র নুপুর শর্মা সম্প্রতি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। পরবর্তীকালে সেই ঘটনার নিন্দায় সরব হয়ে উঠে উপসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ। একই সঙ্গে নবী (সা.)-কে নিয়ে বিজেপি নেতাদের এমন অবমাননাকর বক্তব্যের দায়ে উপসাগরীয় কয়েকটি দেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বানও ক্রমবর্ধমান হারে জোরাল হচ্ছে।

বুধবার (৮ জুন) মার্কিন মিডিয়া ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোতে নবী (সা.)-কে অবমাননার প্রতিবাদে টুইটার এবং ফেসবুকে ‘ভারতীয় পণ্য বর্জন করুন’, ‘নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননা বন্ধ করুন’ প্রচারণা ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার এই হিন্দু রাষ্ট্রটির মোট বাণিজ্যের এক দশমাংশেরও বেশি হয় উপসাগরীয় দেশগুলোতে।

ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক মুখপাত্র নুপুর শর্মা গত মে মাসে এক টেলিভিশন শোতে অংশ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। পরবর্তীকালে দলটির নয়াদিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন জিন্দালও নুপুর শর্মার মন্তব্যের সমর্থনে টুইটারে পোস্ট করেন।

মূলত তাদের ওই মন্তব্য দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এমনকি বিজেপির দুই নেতার মন্তব্যের জেরে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের মুসলিমরা বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলন করেন। ধীরে ধীরে সেই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বাইরের মুসলিম বিশ্বেও।

বিজেপির দুই সদস্যের বিতর্কিত এই মন্তব্যের জেরে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের তলব করে নিন্দা এবং তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। গত আট বছর যাবত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং ভারতীয় শস্য, পোশাক এবং যন্ত্রপাতির বাজার তৈরিতে সম্পর্ক গড়ার পেছনে ব্যয় করেছেন নরেন্দ্র মোদী।

এমন পরিস্থিতিতে উপসাগরীয় অঞ্চলে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক মোদীর জন্য আরও বেশি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

উল্লেখ্য, ভারতের ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যের প্রায় ১০ শতাংশই হয় কেবল সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের সাথে।

সূত্র : এএফপি, ব্লুমবার্গ