বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয়

গরমে বাড়ে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎই বেড়ে গেলে তা হিটস্ট্রোকে পরিণত হয়। গরমে যে কোনো সময় যে কেউই হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন।

আর হিটস্ট্রোকের রোগীর দ্রুত চিকিৎসা না হলে মস্তিষ্ক, হৃদপিণ্ড, কিডনি ও শরীরের নানা অঙ্গে তার প্রভাব পড়তে পারে। এমনকি পক্ষাঘাতেও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

তাই এ সময় হিটস্ট্রোকের বিষয়ে সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে। আপনার আশপাশে হয়তো কেউ না কেউ এ সমস্যায় পড়তে পারেন। আপনার যদি জানা থাকে হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও এক্ষেত্রে দ্রুত কী করণীয়, তাহলে হয়তো আপনি ওই রোগীর জীবনও বাঁচাতে পারবেন।

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ কী কী?

> শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করেই বেড়ে যাওয়া, ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটও হয়ে যেতে পারে। এ সময় তেমন ঘাম হয় না।

> কথা জড়িয়ে যেতে পারে, ব্যবহারে অসংলগ্নতা টের পাওয়া যায়। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তি কোমাতেও চলে যেতে পারেন।

> মাথা ঘোরা ও বমি হতে পারে।

> ত্বকের রং হঠাৎই লাল হয়ে যেতে পারে, শরীরের তাপমাত্রা বাড়লে ত্বকের রংও লাল হয়ে যায়।

> শ্বাস-প্রশ্বাস অস্বাভাবিক হয়ে যায়, হৃদস্পন্দনও বেড়ে যেতে পারে।

> মাথায় প্রবল ব্যথা অনুভব হতে পারে।

হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে দ্রুত যা করণীয়

> বিশেষজ্ঞদের মতে, কারো মধ্যে হিটস্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত তাকে ছায়ার মধ্যে নিয়ে যেতে হবে। গায়ের অতিরিক্ত কাপড় খুলে ফেলে রোগীকে শীতল করার ব্যবস্থা করতে হবে। মোজা-জুতা খুলে ফেলতে হবে।

> আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা কমাতে ঠাণ্ডা বা বরফ মিশ্রিত পানি দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বিশেষ করে রোগীর বগল, কুঁচকি, ঘাড়সহ নানা স্থান ভেজা তোয়ালে দিয়ে বারবার মুছে দিতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে শুইয়ে দিয়ে পা একটু উঁচু বা মাথা একটু নিচের দিকে রাখাটা ভালো।

> রোগীর জ্ঞান থাকলে পানি, ডাবের পানি, ফলের শরবত অথবা খাবার স্যালাইন পান করতে দিতে হবে। যদি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে, তবে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া লাগবে। এ অবস্থায় ঘরে চিকিৎসা করার সুযোগ নেই। 

প্রতিরোধে করণীয়

> সূর্যের রোদের সবচেয়ে প্রখরতার সময়টুকু এড়িয়ে চলুন, প্রয়োজনে সে সময় ছাতা নিয়ে বের হোন। কিংবা বড় কোনো হ্যাট ও সানগ্লাস রাখুন বাইরে বের হওয়ার সময়।

> শরীরে পানিশূন্যতা যেন না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখুন। গরমে ও রোদে প্রচুর পরিমাণ পানি, ডাবের পানি, স্যালাইন খান।

> দুপুরের প্রচণ্ড রোদে ভারী কাজ বা শারীরিক ব্যায়াম করবেন না।

> গরমে বাইরে বেরোলে সাদা বা হালকা রঙের কাপড় পরুন।

> গরমের সময় চা, কফি, সিগারেট যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন, এগুলো শরীরে পানিশূন্যতা বাড়িয়ে দেয়। 

> শরীর ঠাণ্ডা রাখে এমন খাবার খান।

সূত্র: হেলথ লাইন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয়

প্রকাশিত সময় : ০৮:৫৩:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জুন ২০২২

গরমে বাড়ে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎই বেড়ে গেলে তা হিটস্ট্রোকে পরিণত হয়। গরমে যে কোনো সময় যে কেউই হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন।

আর হিটস্ট্রোকের রোগীর দ্রুত চিকিৎসা না হলে মস্তিষ্ক, হৃদপিণ্ড, কিডনি ও শরীরের নানা অঙ্গে তার প্রভাব পড়তে পারে। এমনকি পক্ষাঘাতেও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

তাই এ সময় হিটস্ট্রোকের বিষয়ে সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে। আপনার আশপাশে হয়তো কেউ না কেউ এ সমস্যায় পড়তে পারেন। আপনার যদি জানা থাকে হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও এক্ষেত্রে দ্রুত কী করণীয়, তাহলে হয়তো আপনি ওই রোগীর জীবনও বাঁচাতে পারবেন।

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ কী কী?

> শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করেই বেড়ে যাওয়া, ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটও হয়ে যেতে পারে। এ সময় তেমন ঘাম হয় না।

> কথা জড়িয়ে যেতে পারে, ব্যবহারে অসংলগ্নতা টের পাওয়া যায়। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তি কোমাতেও চলে যেতে পারেন।

> মাথা ঘোরা ও বমি হতে পারে।

> ত্বকের রং হঠাৎই লাল হয়ে যেতে পারে, শরীরের তাপমাত্রা বাড়লে ত্বকের রংও লাল হয়ে যায়।

> শ্বাস-প্রশ্বাস অস্বাভাবিক হয়ে যায়, হৃদস্পন্দনও বেড়ে যেতে পারে।

> মাথায় প্রবল ব্যথা অনুভব হতে পারে।

হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে দ্রুত যা করণীয়

> বিশেষজ্ঞদের মতে, কারো মধ্যে হিটস্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত তাকে ছায়ার মধ্যে নিয়ে যেতে হবে। গায়ের অতিরিক্ত কাপড় খুলে ফেলে রোগীকে শীতল করার ব্যবস্থা করতে হবে। মোজা-জুতা খুলে ফেলতে হবে।

> আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা কমাতে ঠাণ্ডা বা বরফ মিশ্রিত পানি দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বিশেষ করে রোগীর বগল, কুঁচকি, ঘাড়সহ নানা স্থান ভেজা তোয়ালে দিয়ে বারবার মুছে দিতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে শুইয়ে দিয়ে পা একটু উঁচু বা মাথা একটু নিচের দিকে রাখাটা ভালো।

> রোগীর জ্ঞান থাকলে পানি, ডাবের পানি, ফলের শরবত অথবা খাবার স্যালাইন পান করতে দিতে হবে। যদি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে, তবে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া লাগবে। এ অবস্থায় ঘরে চিকিৎসা করার সুযোগ নেই। 

প্রতিরোধে করণীয়

> সূর্যের রোদের সবচেয়ে প্রখরতার সময়টুকু এড়িয়ে চলুন, প্রয়োজনে সে সময় ছাতা নিয়ে বের হোন। কিংবা বড় কোনো হ্যাট ও সানগ্লাস রাখুন বাইরে বের হওয়ার সময়।

> শরীরে পানিশূন্যতা যেন না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখুন। গরমে ও রোদে প্রচুর পরিমাণ পানি, ডাবের পানি, স্যালাইন খান।

> দুপুরের প্রচণ্ড রোদে ভারী কাজ বা শারীরিক ব্যায়াম করবেন না।

> গরমে বাইরে বেরোলে সাদা বা হালকা রঙের কাপড় পরুন।

> গরমের সময় চা, কফি, সিগারেট যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন, এগুলো শরীরে পানিশূন্যতা বাড়িয়ে দেয়। 

> শরীর ঠাণ্ডা রাখে এমন খাবার খান।

সূত্র: হেলথ লাইন