পবিত্র ইদুল আজহার ছুটি পেয়ে পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে বাড়ির পানে ছুটছে মানুষ। বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বিকালের পর থেকে মহাসড়কে মানুষের চাপ বাড়তে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে ট্রাক ও রিজার্ভ গাড়ির চাপও বাড়ছে।
যাত্রীর চাপ বাড়ায় সাভার-আশুলিয়ার মহাসড়কে প্রায় ২৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার যেখানে সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী তোলার কারণে যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ইদযাত্রায় নারীর টানে বাড়ি ফেরা মানুষ।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাভার ও আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা, টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল থেকে চন্দ্রা প্রায় ১৩ কিলোমিটার, টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের বাইপাইল থেকে ইটখোলা প্রায় ৫ কিলোমিটার, আশুলিয়া বাজার থেকে ধউর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার ও ঢাকা-আরিচা মহাড়কে গাড়ির চাপ না থাকলেও গাবতলী থেকে ৫ কিলোমিটার যানজটসহ প্রায় ২৬ কিলোমিটার থেমে থেমে যানজটের তথ্য পাওয়া গেছে।
নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক দিয়ে আশুলিয়ার কবিরপুর থেকে বাইপাইল আসছিলেন কাজী শহিদুল্লাহ তনয়। তিনি দুপুর ১টার দিকে কবিরপুর থেকে বাইপাইলের উদ্দেশ্যে প্রাইভেটকার যোগে রওনা দেন। যানজট ঠেলে তাদের বাইপাইল আসতে সময় লেগেছে প্রায় ৩ ঘণ্টার মতো।
কাজী শহিদুল্লাহ তনয় বলেন, প্রতিদিন যেখানে আমাদের বাইপাইল আসতে লাগে ৭ থেকে ১০ মিনিট। সেখানে আমাদের আজকে লাগলো ৩ ঘণ্টারও বেশি। আমরা পাম্প থেকে আমাদের গাড়িতে ৫০০ টাকার গ্যাস তুলেছিলাম। সেই গ্যাস শেষ।
অন্যদিকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়ক দিয়ে বাইক যোগে ধৌড় থেকে জামগড়া এসেছেন শরীফ মোল্লা। তিনি বলেন, আমি পুরোটা রাস্তায় যানজট দেখলাম। বাইক নিয়েও আসার অবস্থা নেই। রাস্তায় গাড়ির প্রচুর চাপ।
মিরপুর থেকে মাকে নিয়ে জামগড়া আসার পথে ধউর বেড়িবাঁধে যানজটে আটকা পড়েন ইব্রাহিম মিয়া। তিনি বলেন, আশুলিয়া ব্রিজ পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ১০ মিনিটের পথ অতিক্রম করতে সময় লাগছে ১ থেকে দেড় ঘণ্টা। চরম ভোগান্তিতে ঘরমুখো মানুষ।
ছুটি পেয়ে নাটোর যাচ্ছেন আরেফিন। তিনি বলেন, বাইপাইল থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত যানজটে পড়তে হয়েছে। বাইপাইল থেকে জিরানী বাজার পর্যন্ত তীব্র যানজটে পড়তে হয়েছিল। বিকেলের পরে আরও যানজট বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, বাইপাইল থেকে চন্দ্রা যেতে সময় লাগছে প্রায় ৩ ঘণ্টা। যেখানে ২০ মিনিটের মতো স্বাভাবিক সময় লাগে। যানজট এড়াতে দ্রুত বের হয়ে কষ্ট হলেও বাড়ি রওনা করেছি। কিন্তু তারপরও যানজটে পড়তে হয়েছে।
আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের চালক শাহিন বলেন, সড়কে গাড়ির চাপ বাড়তে শুরু করেছে। এ ছাড়া গরুর ট্রাক একের পর এক ঢুকছে ঢাকার দিকে। এ কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ধীরে ধীরে যাত্রীর সঙ্গে আরও গাড়ির চাপ বাড়বে। এ সময় চরম যানজটের শঙ্কা রয়েছে।
ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ (প্রশাসন) আব্দুস সালম বলেন, এখন রাস্তায় প্রচুর পরিমাণে গাড়ির চাপ রয়েছে। অধিকাংশ পোশাক কারখানা ছুটি হয়েছে। তাই সবাই বাড়ি ফেরার জন্য রাস্তায় এসেছে। এছাড়া যাত্রীবাহী বাসগুলো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানোর কারণে এই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে।
এ বিষয়ে সাভার হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, আমাদের হাইওয়ে থানার পক্ষ থেকে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ২ শতাধিক পুলিশ কাজ করছে। তারা যানজট নিরসনে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম ডেস্ক 




















