বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাম কাত হয়ে ঘুমালে কী হয়?

ঘুমানোর ক্ষেত্রে আমরা সাধারণত নিজেদের স্বাচ্ছন্দ্যমতো পজিশনে শুয়ে থাকি। কেউ শরীর বাম দিকে কাত করে, কেউ ডান দিকে কাত করে, কেউ উপুর হয়ে, কেউবা চিৎ হয়ে। অর্থাৎ যার যার পছন্দমতো। তবে বাম কাত হয়ে ঘুমানোর অনেক উপকারিতা রয়েছে, যা আমাদের অনেকেরই অজানা। জেনে নিন, বাম কাত হয়ে ঘুমোনোর অভ্যাস করলে কী কী স্বাস্থ্য উপকারিতা হতে পারে আপনার।

* নাক ডাকার প্রবণতা কমায়: আপনার সঙ্গী নাক ডাকার অভ্যাস নিয়ে নিয়মিত অভিযোগ করে থাকে? বাম কাত হয়ে ঘুমিয়ে আপনি এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। যারা চিৎ হয়ে ঘুমায় তাদের অনেকেই জোরে নাক ডেকে থাকেন। এর কারণ হলো চিৎ হয়ে ঘুমানোর সময় জিহ্বা, মুখ এবং চোয়াল সম্পূর্ণ শিথিল থাকে, তাই নাক ডাকার প্রবণতা বাড়ে।

* বুক জ্বালা কমায়: ঘুমানোর আগে বেশি পরিমাণে খাবার খেয়ে অনেকেই অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যায় সারারাত ভুগে থাকেন। অ্যাসিড রিফ্লাক্স সেভাবে গুরুতর সমস্যা না হলেও দীর্ঘদিন ধরে যদি অ্যাসিড রিফ্লাক্স হতে থাকলে তা ক্যানসারের মতো ভয়াবহ রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাম কাত হয়ে ঘুমালে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা কমাতে সহায়ক হতে পারে।

* হার্টের জন্য উপকারী: বাম কাত হয়ে শুলে হার্টে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে শুরু করে। বাম কাত হয়ে ঘুমালে হৃদপিণ্ড পুরো শরীরে সহজে রক্ত সঞ্চালন করতে পারে। 

* কিডনি ও লিভার ভালো কাজ করে: কিডনি ও লিভার এই দুটি অঙ্গ শরীরের মেটাবলিজমকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে। বাম দিকে কাত হয়ে শুয়ে থাকলে শরীর থেকে বেশি করে টক্সিন বের করে শুরু করে কিডনি ও লিভার।

* হজম ক্ষমতা বাড়ায়: বাম দিকে কাত হয়ে থাকলে পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয় স্বাভাবিকভাবে ঝুলে থাকে। ফলে খাবার হজম হতে সময় কম লাগে। পাকস্থলী খানিক ঝুলে থাকায় খাবার তাতে গিয়ে হজম হতে বেশি সুবিধা হয়। মাঝে মাঝে অগ্ন্যাশয় থেকে এনজাইম বেরিয়ে এসে খাবার হজম করতে অনুঘটকের কাজ করে।

* গর্ভবতী নারীদের জন্য উপকারী: অনেক চিকিৎসক গর্ভবতী নারীদের বাম কাত হয়ে ঘুমানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু কেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, ডান দিকের তুলনায় বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমালে গর্ভবতী নারীর লিভারের ওপর চাপ কম পড়ে। লিভারের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে গর্ভাবস্থায় বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমানো ভালো। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রেগন্যান্সির শেষ পর্যায়ে চিৎ হয়ে ঘুমানোর সঙ্গে মৃত বাচ্চা প্রসব করার উচ্চ ঝুঁকি জড়িত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

বাম কাত হয়ে ঘুমালে কী হয়?

প্রকাশিত সময় : ০৬:১৫:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ জুলাই ২০২২

ঘুমানোর ক্ষেত্রে আমরা সাধারণত নিজেদের স্বাচ্ছন্দ্যমতো পজিশনে শুয়ে থাকি। কেউ শরীর বাম দিকে কাত করে, কেউ ডান দিকে কাত করে, কেউ উপুর হয়ে, কেউবা চিৎ হয়ে। অর্থাৎ যার যার পছন্দমতো। তবে বাম কাত হয়ে ঘুমানোর অনেক উপকারিতা রয়েছে, যা আমাদের অনেকেরই অজানা। জেনে নিন, বাম কাত হয়ে ঘুমোনোর অভ্যাস করলে কী কী স্বাস্থ্য উপকারিতা হতে পারে আপনার।

* নাক ডাকার প্রবণতা কমায়: আপনার সঙ্গী নাক ডাকার অভ্যাস নিয়ে নিয়মিত অভিযোগ করে থাকে? বাম কাত হয়ে ঘুমিয়ে আপনি এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। যারা চিৎ হয়ে ঘুমায় তাদের অনেকেই জোরে নাক ডেকে থাকেন। এর কারণ হলো চিৎ হয়ে ঘুমানোর সময় জিহ্বা, মুখ এবং চোয়াল সম্পূর্ণ শিথিল থাকে, তাই নাক ডাকার প্রবণতা বাড়ে।

* বুক জ্বালা কমায়: ঘুমানোর আগে বেশি পরিমাণে খাবার খেয়ে অনেকেই অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যায় সারারাত ভুগে থাকেন। অ্যাসিড রিফ্লাক্স সেভাবে গুরুতর সমস্যা না হলেও দীর্ঘদিন ধরে যদি অ্যাসিড রিফ্লাক্স হতে থাকলে তা ক্যানসারের মতো ভয়াবহ রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাম কাত হয়ে ঘুমালে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা কমাতে সহায়ক হতে পারে।

* হার্টের জন্য উপকারী: বাম কাত হয়ে শুলে হার্টে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে শুরু করে। বাম কাত হয়ে ঘুমালে হৃদপিণ্ড পুরো শরীরে সহজে রক্ত সঞ্চালন করতে পারে। 

* কিডনি ও লিভার ভালো কাজ করে: কিডনি ও লিভার এই দুটি অঙ্গ শরীরের মেটাবলিজমকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে। বাম দিকে কাত হয়ে শুয়ে থাকলে শরীর থেকে বেশি করে টক্সিন বের করে শুরু করে কিডনি ও লিভার।

* হজম ক্ষমতা বাড়ায়: বাম দিকে কাত হয়ে থাকলে পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয় স্বাভাবিকভাবে ঝুলে থাকে। ফলে খাবার হজম হতে সময় কম লাগে। পাকস্থলী খানিক ঝুলে থাকায় খাবার তাতে গিয়ে হজম হতে বেশি সুবিধা হয়। মাঝে মাঝে অগ্ন্যাশয় থেকে এনজাইম বেরিয়ে এসে খাবার হজম করতে অনুঘটকের কাজ করে।

* গর্ভবতী নারীদের জন্য উপকারী: অনেক চিকিৎসক গর্ভবতী নারীদের বাম কাত হয়ে ঘুমানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু কেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, ডান দিকের তুলনায় বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমালে গর্ভবতী নারীর লিভারের ওপর চাপ কম পড়ে। লিভারের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে গর্ভাবস্থায় বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমানো ভালো। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রেগন্যান্সির শেষ পর্যায়ে চিৎ হয়ে ঘুমানোর সঙ্গে মৃত বাচ্চা প্রসব করার উচ্চ ঝুঁকি জড়িত।