শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এবার বৃহস্পতি গ্রহের ছবি তুলে চমক দিলো জেমস ওয়েব

এক সপ্তাহ না যেতেই আবারও চমক দিল নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। ১২ জুলাই গভীর ও দূরতম মহাবিশ্বের বিস্তারিত দৃশ্য প্রকাশ পেয়েছিলো জেমস ওয়েবের লেন্সে। আর এবার বৃহস্পতি গ্রহের চোখ ধাঁধানো ছবি পাঠিয়েছে টেলিস্কোপটি।

আর এই ছবিতে সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহটির বলয় ছাড়াও স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে এর তিন চাঁদ- ইউরোপা, থিব ও মেটিস।

গবেষণার তথ্য সংগ্রহের জন্য জেমস ওয়েবের যন্ত্র প্রস্তুত কিনা, তা যাচাই করতে গত মঙ্গলবারের আগে তিনবার বৃহস্পতির ছবি তুলেছেন নাসার গবেষকরা। সে ছবিগুলো এখন প্রকাশ করা হচ্ছে ‘স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউট’-এর ‘মিকালস্কি আর্কাইভ ফর স্পেস টেলিস্কোপ’-এ। প্রথম ছবিতে বৃহস্পতির বলয় দেখা না গেলেও আছে গ্রহটির চাঁদ ইউরোপা। এমনকি ‘গ্রেট রেড স্পট’ নামে পরিচিত বৃহস্পতির পৃষ্ঠের দানবীয় ঝড়টিও দেখা যাচ্ছে স্পষ্ট।

মার্কিন গবেষণা সংস্থা বলছে, এই ঝড় এতটাই বড় যে, পুরো পৃথিবীকে গিলে ফেলতে পারবে।

তবে ওয়েব টেলিস্কোপের ‘নিয়ার ইনফ্রারেড ক্যামেরা’ বা এনআইআরক্যামের শর্ট-ওয়েভলেন্থ ফিল্টারের মাধ্যমে তোলা ছবিগুলোর প্রক্রিয়াজাত করার কৌশলের কারণে লাল রঙের বদলে সাদা রঙে ফুটে উঠেছে ‘গ্রেট রেড স্পট’।

এ বিষয়ে স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউটের গবেষক ব্রায়ান হলার বলেন, “সেদিন প্রকাশ করা ডিপ ফিল্ড ছবি আর বৃহস্পতির নতুন ছবিগুলো মিলে ওয়েবের পূর্ণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার প্রমাণ দিচ্ছে; বহু দূরের অস্পষ্ট ছায়াপথ থেকে শুরু করে আমাদের প্রতিবেশী গ্রহের ছবি, যা আপনি খালি চোখে নিজের উঠান থেকেই দেখতে পারেন।”
ছবিতে বৃহস্পতির পাশেই ইউরোপা। বৃহস্পতির এই চাঁদ নিয়েও মহাকাশবিজ্ঞানীরা কৌতূহলী। তাদের ধারণা, উপগ্রহটির পুরু বরফের স্তরের নিচে একটি সাগর লুকিয়ে আছে। নাসার আসন্ন ‘ইউরোপা ক্লিপার’ মিশনের মূল লক্ষ্য বৃহস্পতির এই উপগ্রহ। ‘গ্রেট রেড স্পট’-এর পাশে ইউরোপার ছায়াও ধরা পড়েছে ছবিতে।

প্রথম ছবিটি বাদে ইনফ্রারেড আলোর ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে বৃহস্পতির ছবি নিতে আলাদা দুটি ফিল্টার ব্যবহার করেছে জেমস ওয়েব। নাসা দুই ফিল্টারে তোলা ছবি পাশাপাশি তুলনাও করেছে। ওই দুই ছবিতে বৃহস্পতির বলয়ের পাশাপাশি একই সঙ্গে ধরা পড়েছে বৃহস্পতির তিন চাঁদ।

নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানী স্টেফানি মিলাম বলেন,“আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না যে আমরা সব কিছু এত স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছিলাম, আর কত উজ্জ্বল ছিল সবকিছু।”

নাসা তাদের ওয়েবসাইটে আরও জানিয়েছে, এই ছবিগুলো প্রমাণ করছে, বৃহস্পতি, শনি এবং মঙ্গলের মতো উজ্জ্বল গ্রহগুলোকে ঘিরে থাকা বলয় আর উপগ্রহ পর্যবেক্ষণের সক্ষমতা আছে জেমস ওয়েবের। তবে বৃহস্পতির বলয় সবচেয়ে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে এনআইআরক্যামের ‘লং-ওয়েভলেন্থ ফিল্টার’ ব্যবহার করে তোলা ছবিতে। গ্রহাণু আর ধূমকেতুর ছবি তোলার সক্ষমতাও জেমস ওয়েবের আছে।একুশে টেলিভিশন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

এবার বৃহস্পতি গ্রহের ছবি তুলে চমক দিলো জেমস ওয়েব

প্রকাশিত সময় : ১১:৪৮:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ জুলাই ২০২২

এক সপ্তাহ না যেতেই আবারও চমক দিল নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। ১২ জুলাই গভীর ও দূরতম মহাবিশ্বের বিস্তারিত দৃশ্য প্রকাশ পেয়েছিলো জেমস ওয়েবের লেন্সে। আর এবার বৃহস্পতি গ্রহের চোখ ধাঁধানো ছবি পাঠিয়েছে টেলিস্কোপটি।

আর এই ছবিতে সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহটির বলয় ছাড়াও স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে এর তিন চাঁদ- ইউরোপা, থিব ও মেটিস।

গবেষণার তথ্য সংগ্রহের জন্য জেমস ওয়েবের যন্ত্র প্রস্তুত কিনা, তা যাচাই করতে গত মঙ্গলবারের আগে তিনবার বৃহস্পতির ছবি তুলেছেন নাসার গবেষকরা। সে ছবিগুলো এখন প্রকাশ করা হচ্ছে ‘স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউট’-এর ‘মিকালস্কি আর্কাইভ ফর স্পেস টেলিস্কোপ’-এ। প্রথম ছবিতে বৃহস্পতির বলয় দেখা না গেলেও আছে গ্রহটির চাঁদ ইউরোপা। এমনকি ‘গ্রেট রেড স্পট’ নামে পরিচিত বৃহস্পতির পৃষ্ঠের দানবীয় ঝড়টিও দেখা যাচ্ছে স্পষ্ট।

মার্কিন গবেষণা সংস্থা বলছে, এই ঝড় এতটাই বড় যে, পুরো পৃথিবীকে গিলে ফেলতে পারবে।

তবে ওয়েব টেলিস্কোপের ‘নিয়ার ইনফ্রারেড ক্যামেরা’ বা এনআইআরক্যামের শর্ট-ওয়েভলেন্থ ফিল্টারের মাধ্যমে তোলা ছবিগুলোর প্রক্রিয়াজাত করার কৌশলের কারণে লাল রঙের বদলে সাদা রঙে ফুটে উঠেছে ‘গ্রেট রেড স্পট’।

এ বিষয়ে স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউটের গবেষক ব্রায়ান হলার বলেন, “সেদিন প্রকাশ করা ডিপ ফিল্ড ছবি আর বৃহস্পতির নতুন ছবিগুলো মিলে ওয়েবের পূর্ণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার প্রমাণ দিচ্ছে; বহু দূরের অস্পষ্ট ছায়াপথ থেকে শুরু করে আমাদের প্রতিবেশী গ্রহের ছবি, যা আপনি খালি চোখে নিজের উঠান থেকেই দেখতে পারেন।”
ছবিতে বৃহস্পতির পাশেই ইউরোপা। বৃহস্পতির এই চাঁদ নিয়েও মহাকাশবিজ্ঞানীরা কৌতূহলী। তাদের ধারণা, উপগ্রহটির পুরু বরফের স্তরের নিচে একটি সাগর লুকিয়ে আছে। নাসার আসন্ন ‘ইউরোপা ক্লিপার’ মিশনের মূল লক্ষ্য বৃহস্পতির এই উপগ্রহ। ‘গ্রেট রেড স্পট’-এর পাশে ইউরোপার ছায়াও ধরা পড়েছে ছবিতে।

প্রথম ছবিটি বাদে ইনফ্রারেড আলোর ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে বৃহস্পতির ছবি নিতে আলাদা দুটি ফিল্টার ব্যবহার করেছে জেমস ওয়েব। নাসা দুই ফিল্টারে তোলা ছবি পাশাপাশি তুলনাও করেছে। ওই দুই ছবিতে বৃহস্পতির বলয়ের পাশাপাশি একই সঙ্গে ধরা পড়েছে বৃহস্পতির তিন চাঁদ।

নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানী স্টেফানি মিলাম বলেন,“আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না যে আমরা সব কিছু এত স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছিলাম, আর কত উজ্জ্বল ছিল সবকিছু।”

নাসা তাদের ওয়েবসাইটে আরও জানিয়েছে, এই ছবিগুলো প্রমাণ করছে, বৃহস্পতি, শনি এবং মঙ্গলের মতো উজ্জ্বল গ্রহগুলোকে ঘিরে থাকা বলয় আর উপগ্রহ পর্যবেক্ষণের সক্ষমতা আছে জেমস ওয়েবের। তবে বৃহস্পতির বলয় সবচেয়ে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে এনআইআরক্যামের ‘লং-ওয়েভলেন্থ ফিল্টার’ ব্যবহার করে তোলা ছবিতে। গ্রহাণু আর ধূমকেতুর ছবি তোলার সক্ষমতাও জেমস ওয়েবের আছে।একুশে টেলিভিশন