শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুর্নীতির অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পমন্ত্রী গ্রেফতার

অবশেষে অনেক নাটকীয়তার পর গ্রেফতার হলেন পশ্চিমবঙ্গের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রায় ২৭ ঘণ্টা ধরে টানা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

শনিবার (২৩ জুলাই) সকাল ১০টা নাগাদ তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টা দিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোলকাতার নাকতলার বাড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যায় ইডির একটি দল। সারা দিন তো বটেই, রাতভর মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় মন্ত্রীর বাড়ি। টানা জিজ্ঞাসাবাদের মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। যার জন্য দু’বার তার বাড়িতে পৌঁছান চিকিৎসকেরা। কিন্তু তাতেও প্রশ্ন-পর্ব থামেনি।

একই সঙ্গে ইডির দাবি, দক্ষিণ কোলকাতায় পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে প্রায় ২১ কোটি টাকা নগদ পাওয়া গিয়েছে। দুবস্তায় ভরা ছিল ২০০০ এবং ৫০০ টাকার নোটের বান্ডিল। ওই বাড়ি থেকে ২০টি মোবাইল ফোনও পাওয়া গিয়েছে বলে ইডির দাবি।

যে নগদ উদ্ধার হয়েছে, তা ব্যাঙ্ককর্মীদের দিয়ে যন্ত্রের সাহায্যে শনিবার সকাল পর্যন্ত গোনার কাজ চলেছে। ইডি সূত্রে জানয়, ওই টাকা স্কুলে বেআইনি নিয়োগে নেওয়া ঘুষের অংশ বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছে তারা।

ইডির আরও দাবি, প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগের নেতৃত্বাধীন কমিটির রিপোর্টে ও সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন জানিয়েছেন, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশেই সমস্ত নিয়োগ করা হয়েছিল। উনিই নিয়োগের ক্ষেত্রে মূল নিয়ন্ত্রক ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে নথি সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ করে তা যাচাই করা হয় ইডির পক্ষ থেকে। 

কোনও রকম তলবি নোটিস ছাড়াই শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটায় পার্থকে ঘুম থেকে তুলে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা। নাকতলার বাড়িতে পৌঁছনোর পরেই মন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষী ও দেহরক্ষীদের মোবাইল বন্ধ করার নির্দেশ দেন তদন্তকারীরা। 

ইডি সূত্রের আরও জানান, একই নির্দেশ দেওয়া হয় পার্থকেও। দুপুরে দু’জন আইনজীবীকে বাড়িতে ডেকে পাঠান পার্থ। তবে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে তাদের হাজির থাকার অনুমতি দেননি তদন্তকারীরা। 

এদিকে দুপুরে পুলিশের সঙ্গে এসে পার্থের পারিবারিক চিকিৎসক তদন্তকারীদের সামনেই তার শারীরিক পরীক্ষা করেন। পরে এসএসকেএম থেকে তিন জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও মন্ত্রীকে দেখে যান। তার পরেও চলে জিজ্ঞাসাবাদ।
সূত্রঃ আনন্দবাজার অনলাইন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

দুর্নীতির অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পমন্ত্রী গ্রেফতার

প্রকাশিত সময় : ০৩:১৯:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২

অবশেষে অনেক নাটকীয়তার পর গ্রেফতার হলেন পশ্চিমবঙ্গের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রায় ২৭ ঘণ্টা ধরে টানা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

শনিবার (২৩ জুলাই) সকাল ১০টা নাগাদ তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টা দিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোলকাতার নাকতলার বাড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যায় ইডির একটি দল। সারা দিন তো বটেই, রাতভর মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় মন্ত্রীর বাড়ি। টানা জিজ্ঞাসাবাদের মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। যার জন্য দু’বার তার বাড়িতে পৌঁছান চিকিৎসকেরা। কিন্তু তাতেও প্রশ্ন-পর্ব থামেনি।

একই সঙ্গে ইডির দাবি, দক্ষিণ কোলকাতায় পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে প্রায় ২১ কোটি টাকা নগদ পাওয়া গিয়েছে। দুবস্তায় ভরা ছিল ২০০০ এবং ৫০০ টাকার নোটের বান্ডিল। ওই বাড়ি থেকে ২০টি মোবাইল ফোনও পাওয়া গিয়েছে বলে ইডির দাবি।

যে নগদ উদ্ধার হয়েছে, তা ব্যাঙ্ককর্মীদের দিয়ে যন্ত্রের সাহায্যে শনিবার সকাল পর্যন্ত গোনার কাজ চলেছে। ইডি সূত্রে জানয়, ওই টাকা স্কুলে বেআইনি নিয়োগে নেওয়া ঘুষের অংশ বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছে তারা।

ইডির আরও দাবি, প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগের নেতৃত্বাধীন কমিটির রিপোর্টে ও সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন জানিয়েছেন, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশেই সমস্ত নিয়োগ করা হয়েছিল। উনিই নিয়োগের ক্ষেত্রে মূল নিয়ন্ত্রক ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে নথি সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ করে তা যাচাই করা হয় ইডির পক্ষ থেকে। 

কোনও রকম তলবি নোটিস ছাড়াই শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটায় পার্থকে ঘুম থেকে তুলে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা। নাকতলার বাড়িতে পৌঁছনোর পরেই মন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষী ও দেহরক্ষীদের মোবাইল বন্ধ করার নির্দেশ দেন তদন্তকারীরা। 

ইডি সূত্রের আরও জানান, একই নির্দেশ দেওয়া হয় পার্থকেও। দুপুরে দু’জন আইনজীবীকে বাড়িতে ডেকে পাঠান পার্থ। তবে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে তাদের হাজির থাকার অনুমতি দেননি তদন্তকারীরা। 

এদিকে দুপুরে পুলিশের সঙ্গে এসে পার্থের পারিবারিক চিকিৎসক তদন্তকারীদের সামনেই তার শারীরিক পরীক্ষা করেন। পরে এসএসকেএম থেকে তিন জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও মন্ত্রীকে দেখে যান। তার পরেও চলে জিজ্ঞাসাবাদ।
সূত্রঃ আনন্দবাজার অনলাইন