রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাবি ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী পুলিশি হেফাজতে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রিক্তা আক্তার (২১) নামে এক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ধরমপুর পূর্বপাড়ার একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও তার বন্ধুকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।

নিহত রিক্তা আক্তার বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার জোতপাড়া গ্রামে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, এ ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমি মেডিকেলে গিয়েছি। একজন শিক্ষার্থীর এমন অকালমৃত্যু কখনোই কাম্য নয়। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।

নিহত শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা জানান, দুই বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ ইসতিয়াক রাব্বির সঙ্গে রিক্তার বিয়ে হয়। কলেজজীবন থেকেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বছরখানেক ধরে তারা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ধরমপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।

এদিকে নিহত রিক্তার স্বামীর বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আল-আমিন ইসলাম বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ওদের মধ্যে একটু ঝামেলা চলছিল। শুক্রবার বিকেলে রাব্বি আমাদেরকে বলে তার বউ নাকি অন্য একটা ছেলের সঙ্গে ফেইক আইডি খুলে কথা বলে। এটা নিয়ে দুপুরে ওদের দুইজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।’

মৃতের স্বামী আব্দুল্লাহ ইশতিয়াক রাব্বি বলেন, রিক্তা আত্মহত্যা করার জন্য গলায় ফাঁস দেয়। আমি ও আমার বন্ধু মিলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে বিষয়টি সন্দেহজনক বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে নিহতের যেসব লক্ষণ আমরা দেখেছি তাতে এটিকে আত্মহত্যা মনে হয়নি। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে।

পরিবার থেকে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে মতিহার থানার ওসি আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী ও তার বন্ধুকে হেফাজতে রাখা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাবি ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী পুলিশি হেফাজতে

প্রকাশিত সময় : ০৫:২২:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রিক্তা আক্তার (২১) নামে এক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ধরমপুর পূর্বপাড়ার একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও তার বন্ধুকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।

নিহত রিক্তা আক্তার বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার জোতপাড়া গ্রামে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, এ ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমি মেডিকেলে গিয়েছি। একজন শিক্ষার্থীর এমন অকালমৃত্যু কখনোই কাম্য নয়। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।

নিহত শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা জানান, দুই বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ ইসতিয়াক রাব্বির সঙ্গে রিক্তার বিয়ে হয়। কলেজজীবন থেকেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বছরখানেক ধরে তারা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ধরমপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।

এদিকে নিহত রিক্তার স্বামীর বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আল-আমিন ইসলাম বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ওদের মধ্যে একটু ঝামেলা চলছিল। শুক্রবার বিকেলে রাব্বি আমাদেরকে বলে তার বউ নাকি অন্য একটা ছেলের সঙ্গে ফেইক আইডি খুলে কথা বলে। এটা নিয়ে দুপুরে ওদের দুইজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।’

মৃতের স্বামী আব্দুল্লাহ ইশতিয়াক রাব্বি বলেন, রিক্তা আত্মহত্যা করার জন্য গলায় ফাঁস দেয়। আমি ও আমার বন্ধু মিলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে বিষয়টি সন্দেহজনক বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে নিহতের যেসব লক্ষণ আমরা দেখেছি তাতে এটিকে আত্মহত্যা মনে হয়নি। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে।

পরিবার থেকে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে মতিহার থানার ওসি আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী ও তার বন্ধুকে হেফাজতে রাখা হয়েছে।