শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দাবদাহে ক্যালিফোর্নিয়ায় ঘরছাড়া হাজারো মানুষ

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় চলতি বছরের সবচেয়ে বড় দাবানলে হাজারো মানুষ বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। প্রবল বাতাস ও বজ্রঝড়ে গত রবিবার অঙ্গরাজ্যটির শুষ্ক ভূমিতে সৃষ্ট আগুনে কিছু ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় ক্ল্যাম্যাথ ন্যাশনাল ফরেস্টে ‘ম্যাককিনি’ দাবানলের সূত্রপাত ঘটে। ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ওয়াইরিকা শহরের পার্শ্ববর্তী ৫১ হাজার একরের বেশি জমিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চলতি বছরে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে এটাই সবচেয়ে বড় দাবানল। চলতি গ্রীষ্মে অঙ্গরাজ্যটি বেশ কয়েকটি দাবানলের সম্মুখীন হয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ায় গত শনিবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন রাজ্যের গভর্নর গ্যাভিন নিউসম। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত শুক্রবার সৃষ্ট দাবানলে বাড়িঘর পুড়ে গেছে। শুষ্ক পরিবেশ, তীব্র খরা, উচ্চ তাপমাত্রা, বাতাস এবং বজ্রঝড়ের কারণে দাবানল ছড়িয়ে পড়ে তীব্র আকার ধারণ করে।

ক্যালিফোর্নিয়ার জরুরি সেবা কার্যালয় জানায়, দুই হাজারের বেশি বাসিন্দাকে ঘরবাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আরো ২০০ এলাকাবাসীকে ঘরবাড়ি ছাড়তে সতর্ক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই সিসকিউ কাউন্টির বাসিন্দা।

সিসকিউ কাউন্টির শেরিফ এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘প্রয়োজন পড়লে আশপাশের মানুষজনকে ঘরবাড়ি ছাড়তে প্রস্তুত থাকা উচিত। দয়া করে বাড়ি ছাড়তে দ্বিধা করবেন না। ’

ইউরিকার বাসিন্দা ল্যারি ক্যাসেল একটি সংবাদপত্রকে বলেন, তিনি ও তাঁর স্ত্রী কিছু মাল বস্তাবন্দি করেছেন। পোষা তিনটি কুকুর নিয়ে তাঁরা ঘর ছাড়বেন। কারণ সাম্প্রতিক বছরগুলোর দাবানল থেকে তাঁরা শিক্ষা পেয়েছেন যে পরিস্থিতি খুবই ভয়ানক আকার ধারণ করতে পারে।
জাতীয় দাবানল সমন্বয় সংস্থা বলছে, রবিবার পর্যন্ত আগুন নেভাতে প্রায় ৬৫০ জন মানুষ কাজ করছিল। আগুন নেভাতে পার্শ্ববর্তী অরেগন অঙ্গরাজ্য থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ঘটনাস্থলে পাঠায় কর্তৃপক্ষ।

ক্যালফায়ার বলছে, কিভাবে আগুন লেগেছে, তা এখনো তদন্তাধীন। মার্কিন বন বিভাগ বলছে, আগুনের বিস্তৃতি ঠেকাতে ফোর্ট জোনস ও পশ্চিম ইউরিকায় কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

মারাত্মক খরায় ভুগছে ক্যালিফোর্নিয়া। দাবানল মৌসুমের আরো কয়েক মাস এখনো বাকি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্যালিফোর্নিয়া ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কিছু স্থান দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছরে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে ভয়াবহ দাবানল দেখা দেয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে ঘন ঘন ও তীব্র দাবদাহ দেখা দিচ্ছে। এর ফলে দাবানলের ঝুঁকি বাড়ছে। সুত্রঃ কালের কণ্ঠ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

দাবদাহে ক্যালিফোর্নিয়ায় ঘরছাড়া হাজারো মানুষ

প্রকাশিত সময় : ১০:৪১:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ অগাস্ট ২০২২

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় চলতি বছরের সবচেয়ে বড় দাবানলে হাজারো মানুষ বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। প্রবল বাতাস ও বজ্রঝড়ে গত রবিবার অঙ্গরাজ্যটির শুষ্ক ভূমিতে সৃষ্ট আগুনে কিছু ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় ক্ল্যাম্যাথ ন্যাশনাল ফরেস্টে ‘ম্যাককিনি’ দাবানলের সূত্রপাত ঘটে। ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ওয়াইরিকা শহরের পার্শ্ববর্তী ৫১ হাজার একরের বেশি জমিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চলতি বছরে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে এটাই সবচেয়ে বড় দাবানল। চলতি গ্রীষ্মে অঙ্গরাজ্যটি বেশ কয়েকটি দাবানলের সম্মুখীন হয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ায় গত শনিবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন রাজ্যের গভর্নর গ্যাভিন নিউসম। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত শুক্রবার সৃষ্ট দাবানলে বাড়িঘর পুড়ে গেছে। শুষ্ক পরিবেশ, তীব্র খরা, উচ্চ তাপমাত্রা, বাতাস এবং বজ্রঝড়ের কারণে দাবানল ছড়িয়ে পড়ে তীব্র আকার ধারণ করে।

ক্যালিফোর্নিয়ার জরুরি সেবা কার্যালয় জানায়, দুই হাজারের বেশি বাসিন্দাকে ঘরবাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আরো ২০০ এলাকাবাসীকে ঘরবাড়ি ছাড়তে সতর্ক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই সিসকিউ কাউন্টির বাসিন্দা।

সিসকিউ কাউন্টির শেরিফ এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘প্রয়োজন পড়লে আশপাশের মানুষজনকে ঘরবাড়ি ছাড়তে প্রস্তুত থাকা উচিত। দয়া করে বাড়ি ছাড়তে দ্বিধা করবেন না। ’

ইউরিকার বাসিন্দা ল্যারি ক্যাসেল একটি সংবাদপত্রকে বলেন, তিনি ও তাঁর স্ত্রী কিছু মাল বস্তাবন্দি করেছেন। পোষা তিনটি কুকুর নিয়ে তাঁরা ঘর ছাড়বেন। কারণ সাম্প্রতিক বছরগুলোর দাবানল থেকে তাঁরা শিক্ষা পেয়েছেন যে পরিস্থিতি খুবই ভয়ানক আকার ধারণ করতে পারে।
জাতীয় দাবানল সমন্বয় সংস্থা বলছে, রবিবার পর্যন্ত আগুন নেভাতে প্রায় ৬৫০ জন মানুষ কাজ করছিল। আগুন নেভাতে পার্শ্ববর্তী অরেগন অঙ্গরাজ্য থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ঘটনাস্থলে পাঠায় কর্তৃপক্ষ।

ক্যালফায়ার বলছে, কিভাবে আগুন লেগেছে, তা এখনো তদন্তাধীন। মার্কিন বন বিভাগ বলছে, আগুনের বিস্তৃতি ঠেকাতে ফোর্ট জোনস ও পশ্চিম ইউরিকায় কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

মারাত্মক খরায় ভুগছে ক্যালিফোর্নিয়া। দাবানল মৌসুমের আরো কয়েক মাস এখনো বাকি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্যালিফোর্নিয়া ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কিছু স্থান দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছরে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে ভয়াবহ দাবানল দেখা দেয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে ঘন ঘন ও তীব্র দাবদাহ দেখা দিচ্ছে। এর ফলে দাবানলের ঝুঁকি বাড়ছে। সুত্রঃ কালের কণ্ঠ