রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাবির প্রক্সির মাধ্যমে প্রথম হওয়া তানভীরের ফল বাতিল

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন তানভীর আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী। তার হয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়ে আটক হন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী বায়েজিদ খান। তীব্র সমলোচনার মুখে প্রক্সির মাধ্যমে প্রথম হওয়া তানভীর আহমেদের ফল বাতিল করা হয়েছে। 

বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার ফল বাতিল করে। বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির ফল বাতিলের এ তথ্য জানানো হয়।

মঙ্গলবার ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফলে দেখা যায় ২য় শিফটে ৯২ দশমিক ৭৫ পেয়ে প্রথম হয়েছেন তানভীর। ফল প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতির কথা বলছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

ওইদিন ৬২৮২৮ রোল নম্বরধারী ইশরাত জাহানের হয়ে প্রক্সি দেন জান্নাতুল মেহজাবিন। নিয়ম অনুযায়ী প্রক্সি বা জালয়াতি ধরা পরার পর ইশরাত বহিষ্কার হবেন কিন্তু প্রকাশিত ফলে দেখা যায় তিনিও পাস করেছেন। তৃতীয় শিফটে ৪৬ দশমিক ৯০ পেয়ে ৬ হাজার ৯২১তম অবস্থানে রয়েছেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘এটি পদ্ধতিগত ত্রুটি। এমনটি হওয়া উচিত ছিলো না।’

এ ঘটনায় ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর খাতা সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হওয়া উচিত ছিল। তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনি। ওই শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশের মাধ্যমে পরীক্ষা কমিটির ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।’

তানভীর আহমেদের প্রথম হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ‘এ’ ইউনিটের সমন্বয়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইলিয়াছ হোসেন বলেন, “প্রক্সি দিয়েছে এই তথ্য আমাদের দেওয়া হয়নি। প্রক্সি ধরা পরলে তার খাতা আলাদা করে ফেলা হয়। কিন্তু এটি আমাদের অবহিত করা হয়নি। সেজন্য তার নাম রয়ে গেছে।”

নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বখতিয়ার আহমেদ বলেন, “এটি ভর্তি পরীক্ষা কমিটির জন্য জন্য বড় ব্যর্থতা। একটি ছেলে প্রক্সি দিতে এসে যখন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়, তখন এটি প্রমাণিত যে সে প্রক্সি দিয়েছে। তার মানে তাৎক্ষণিক ওই পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র বাতিল হয়ে যাওয়া উচিত ছিল।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাবির প্রক্সির মাধ্যমে প্রথম হওয়া তানভীরের ফল বাতিল

প্রকাশিত সময় : ০৫:০৯:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ অগাস্ট ২০২২

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন তানভীর আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী। তার হয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়ে আটক হন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী বায়েজিদ খান। তীব্র সমলোচনার মুখে প্রক্সির মাধ্যমে প্রথম হওয়া তানভীর আহমেদের ফল বাতিল করা হয়েছে। 

বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার ফল বাতিল করে। বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির ফল বাতিলের এ তথ্য জানানো হয়।

মঙ্গলবার ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফলে দেখা যায় ২য় শিফটে ৯২ দশমিক ৭৫ পেয়ে প্রথম হয়েছেন তানভীর। ফল প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতির কথা বলছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

ওইদিন ৬২৮২৮ রোল নম্বরধারী ইশরাত জাহানের হয়ে প্রক্সি দেন জান্নাতুল মেহজাবিন। নিয়ম অনুযায়ী প্রক্সি বা জালয়াতি ধরা পরার পর ইশরাত বহিষ্কার হবেন কিন্তু প্রকাশিত ফলে দেখা যায় তিনিও পাস করেছেন। তৃতীয় শিফটে ৪৬ দশমিক ৯০ পেয়ে ৬ হাজার ৯২১তম অবস্থানে রয়েছেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘এটি পদ্ধতিগত ত্রুটি। এমনটি হওয়া উচিত ছিলো না।’

এ ঘটনায় ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর খাতা সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হওয়া উচিত ছিল। তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনি। ওই শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশের মাধ্যমে পরীক্ষা কমিটির ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।’

তানভীর আহমেদের প্রথম হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ‘এ’ ইউনিটের সমন্বয়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইলিয়াছ হোসেন বলেন, “প্রক্সি দিয়েছে এই তথ্য আমাদের দেওয়া হয়নি। প্রক্সি ধরা পরলে তার খাতা আলাদা করে ফেলা হয়। কিন্তু এটি আমাদের অবহিত করা হয়নি। সেজন্য তার নাম রয়ে গেছে।”

নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বখতিয়ার আহমেদ বলেন, “এটি ভর্তি পরীক্ষা কমিটির জন্য জন্য বড় ব্যর্থতা। একটি ছেলে প্রক্সি দিতে এসে যখন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়, তখন এটি প্রমাণিত যে সে প্রক্সি দিয়েছে। তার মানে তাৎক্ষণিক ওই পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র বাতিল হয়ে যাওয়া উচিত ছিল।”