রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাবি ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে নির্মাণাধীন ভবন থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ

রাবি ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে নির্মাণাধীন ভবন থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নির্মাণাধীন একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। ভবনটির ঠিকাদারী কোম্পানি মজিদ এন্ড সন্স’র কাছে গত শনিবার (৬ অগাস্ট) তিনি ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। ইদ সালামি হিসেবে এ টাকা দাবি করলেও এর আগে ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা তাকে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

এঘটনায় অভিযুক্ত মোমিনুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দেশরতœ শেখ হাসিনা হল, এ এইচ এম কামারুজ্জামান হল, ১০ তলা ভবনবিশিষ্ট শিক্ষক কোয়ার্টার, ২০ তলা একাডেমিক ভবন, ড্রেন নির্মাণসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনা হয়। পরে ২০১৯ সালে সংশোধিত বাজেটে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মজিদ সন্স’ ১০ তলা বিশিষ্ট শহীদ কামারুজ্জামান আবাসিক হল ও বিশতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের কাজ পায়।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভবনের কাজ চলাকালে ছাত্রলীগ নেতা মোমিন সেখানে গিয়ে হল চালানোর খরচের কথা বলে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু প্রকল্পটির একজন সহকারী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, এর আগে তাকে ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা দেয়া হয়েছে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে তিনি তাদের কাছে চাঁদা চাওয়া শুরু করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্পটির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন আমরাও ভীত এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের কোম্পানির উপর মহলে জানানোর পর তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে। গত ২ দিন ধরে আর আসেনি।’

চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোমিনুল বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে অবগত নই। এক বছর ধরে কাজ চলছে কোনোদিন যাইনি। সামনে সম্মেলন আমি একজন প্রার্থী। আমি ইদ সালামি চাইনি।’

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত নই। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী খন্দকার শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘সেখানে সমস্যা করছিল সেটা আমাকে জানানোর পর, আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করি। উপাচার্য স্যার বিষয়টা সরাসরি ডিল করছেন। এখন আর সমস্যা হচ্ছে না।’

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘অফিসিয়ালি আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। পত্রিকার খবরে দেখলাম।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। অফিসিয়ালি তারা আমার কাছে অভিযোগ করে নি। তবে বিষয়টি জানার পর বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি দেখভাল করছে। কোন দুর্নীতিবাজকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাবি ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে নির্মাণাধীন ভবন থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ

প্রকাশিত সময় : ১১:০৭:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ অগাস্ট ২০২২

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নির্মাণাধীন একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। ভবনটির ঠিকাদারী কোম্পানি মজিদ এন্ড সন্স’র কাছে গত শনিবার (৬ অগাস্ট) তিনি ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। ইদ সালামি হিসেবে এ টাকা দাবি করলেও এর আগে ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা তাকে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

এঘটনায় অভিযুক্ত মোমিনুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দেশরতœ শেখ হাসিনা হল, এ এইচ এম কামারুজ্জামান হল, ১০ তলা ভবনবিশিষ্ট শিক্ষক কোয়ার্টার, ২০ তলা একাডেমিক ভবন, ড্রেন নির্মাণসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনা হয়। পরে ২০১৯ সালে সংশোধিত বাজেটে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মজিদ সন্স’ ১০ তলা বিশিষ্ট শহীদ কামারুজ্জামান আবাসিক হল ও বিশতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের কাজ পায়।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভবনের কাজ চলাকালে ছাত্রলীগ নেতা মোমিন সেখানে গিয়ে হল চালানোর খরচের কথা বলে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু প্রকল্পটির একজন সহকারী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, এর আগে তাকে ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা দেয়া হয়েছে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে তিনি তাদের কাছে চাঁদা চাওয়া শুরু করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্পটির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন আমরাও ভীত এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের কোম্পানির উপর মহলে জানানোর পর তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে। গত ২ দিন ধরে আর আসেনি।’

চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোমিনুল বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে অবগত নই। এক বছর ধরে কাজ চলছে কোনোদিন যাইনি। সামনে সম্মেলন আমি একজন প্রার্থী। আমি ইদ সালামি চাইনি।’

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত নই। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী খন্দকার শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘সেখানে সমস্যা করছিল সেটা আমাকে জানানোর পর, আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করি। উপাচার্য স্যার বিষয়টা সরাসরি ডিল করছেন। এখন আর সমস্যা হচ্ছে না।’

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘অফিসিয়ালি আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। পত্রিকার খবরে দেখলাম।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। অফিসিয়ালি তারা আমার কাছে অভিযোগ করে নি। তবে বিষয়টি জানার পর বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি দেখভাল করছে। কোন দুর্নীতিবাজকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না।