ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়ার পাশে উত্তর কোরিয়া। ইউক্রেনের ডনবাসে চলমান লড়াইয়ে রাশিয়াকে সহায়তা করতে ১,০০,০০০ ‘স্বেচ্ছাসেবী’সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিল তারা। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ওয়ানকে দেশটির সামরিক বিশেষজ্ঞ ইগোর কোরোচেনকো বলেছেন, রাশিয়ায় এসে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান সংঘাতে অংশ নিতে উত্তর কোরিয়ার ১ লাখ ‘স্বেচ্ছাসেবী’ সৈন্য প্রস্তুত রয়েছে।
জবাবে রাশিয়া বলেছে, উক্রেনের ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসাবে উত্তর কোরিয়া যদি সেনা পাঠাতে চায়, তবে তাদের স্বাগত। একে ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক যুদ্ধ হিসাবে দাবি করেছে রাশিয়া।
রুশ সামরিক বিশেষজ্ঞ ইগোর কোরোচেনকো উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর কাউন্টার-ব্যাটারি যুদ্ধের অভিজ্ঞতার প্রশংসাও করেছেন।
ইউক্রেনকে এক ডজন হাইমারস রকেট ব্যবস্থাপনা সহায়তার মার্কিন সিদ্ধান্তের পর রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর কাছে কার্যকরী কাউন্টার-ব্যাটারি যুদ্ধের গুরুত্ব বেড়েছে। দূরপাল্লার এবং উচ্চ-নিখুঁত নিশানায় আঘাত হানতে সক্ষম এই রকেট ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রচেষ্টায় ‘বিশাল পার্থক্য’ গড়ে দিয়েছে বলে গত মাসে ইনসাইডারের সিনেড বেকারকে বলেছিলেন একজন সামরিক বিশেষজ্ঞ।
উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের এবং তাদের কাউন্টার-ব্যাটারি যুদ্ধের দক্ষতাকে স্বাগত জানানো উচিত বলে মন্তব্য করেছেন কোরোচেনকো। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়া ইউক্রেনীয় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজেদের বৈশ্বিক দায়িত্ব পালন করতে চাইলে তাতে আমাদের সায় দেওয়া উচিত।
বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম সামরিক বাহিনী রয়েছে উত্তর কোরিয়ার। কোরীয় উপদ্বীপের এই দেশটির প্রায় ১৩ লাখ সক্রিয় সৈন্য রয়েছে। এছাড়া রিজার্ভ সৈন্য হিসেবে কাজ করছে আরও ৬ লাখ।
কিন্তু প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রচুরসংখ্যক সৈন্য থাকলেও পুরোনো সব অস্ত্র আর প্রযুক্তি নিয়ে পিছিয়ে আছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম ডেইলি এনকে বলেছে, যুদ্ধ-পরবর্তী ইউক্রেন পুনর্গঠনেও রাশিয়াকে কর্মী পাঠিয়ে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
রাশিয়ার একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে ডেইলি এনকে বলছে, যুদ্ধে রাশিয়া জয়ী হলে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের ডনবাসে এক হাজারের বেশি কর্মী পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে উত্তর কোরিয়ার। উত্তর কোরিয়ার একটি সূত্র ডেইলি এনকে-কে বলেছে, ‘যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। যে কারণে পিয়ংইয়ংয়ের সরকার মাঠের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে যথাযথ সময়ে কর্মী পাঠানোর এই পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে’।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন হামলা করেন রাশিয়া। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ধূলিসাৎ হয়েছে ইউক্রেনের একাধিক এলাকা। এর মধ্যে নতুন করে রুশ হামলার আশঙ্কায় ইউক্রেনের পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চল থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এই আবহেই রাশিয়াকে সেনা-সাহায্যের প্রস্তাব দিল উত্তর কোরিয়া।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক /দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম 
























