রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাবিতে খেলার মাঠ দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ইংরেজি বিভাগ ও ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৫জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনকে গুরুতর অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত ওই শিক্ষার্থীর নাম আশিক মাহমুদ ধ্রুব। তিনি ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র সাংগঠনিক সম্পাদক। বাকিরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ঐশর্য, তাকিব, নেহাল ও সাজ্জাদ।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেল ৪টায় ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল নামে দুই গ্রুপের খেলা ছিল। কিন্তু তাদের খেলোয়াড় আসতে দেড়ি হওয়ায় ওই সময়ে খেলতে নামে ইংরেজি ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ। তাদের খেলা শেষ হওয়ার পূর্বেই ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র সকল খেলোয়াড় মাঠে উপস্থিত হয়। পরে তারা অশ্লীল ভাষায় ইংরেজি ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগকে খেলা শেষ করতে বলেন। তাদের খেলা শেষ হলে ইংরেজি বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র খেলোয়াড়দের অশ্লীল ভাষা ব্যবহারের প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র খেলোয়াড়রা। এ সময় ধ্রুব নামে ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র এক শিক্ষার্থী ইংরেজি বিভাগের এক শিক্ষার্থীর নাকে ঘুষি মারেন। এতে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে।

ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র খেলোয়াড় রাকিব হাসান বলেন, আজকে আমাদের জেলা সমিতি’র দুই গ্রুপের খেলা ছিল। খেলা চলাকালে পাশে থাকা ইংরেজি বিভাগের কয়েকজন আমাদেরকে বাজে ভাষায় স্লেজিং করতেছিল। এক পর্যায়ে আমাদের কয়েকজনের সাথে তাদের হাতাহাতি লাগে যায়। পরে হাতাহাতি থামানো হয়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে ইংরেজি বিভাগের বেশ কিছু শিক্ষার্থী এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়। অপর দিকে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদেরকে অ্যালুমিনিয়াম রড দিয়ে মেরেছে

ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র খেলোয়াড়রা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাথে আমাদের বিভাগের একটা প্রীতি ম্যাচ ছিল। সেই ম্যাচ চলাকালে ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র কয়েকজন আমাদেরকে বাজে ভাষায় দ্রুত খেলা শেষ করতে বলেন। পরে আমাদের ১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের এক ভাই তাদের বাজে ভাষার প্রতিবাদ করলে তারা ভাইয়ের সাথে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। সেখানে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে এক পর্যায়ে তারা স্টেডিয়ামের গেইট বন্ধ করে আমাদেরকে রড ও লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করে। তবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি নন ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন।

এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক রুদাইয়া আখতার বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে রড দিয়ে মারা হয়েছে এমনটি শুনেছি। আমরা আগামীকাল বিভাগের শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফ. ম. আ জাহিদ বলেন, এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে চারজনকে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি আর একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রক্টর ড. আরিফুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাটি জেনেছি। উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আমি পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছি। আমি উভয় পরবর্তীতে দুইপক্ষকে ডেকে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাবিতে খেলার মাঠ দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫

প্রকাশিত সময় : ১০:৫৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২২

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ইংরেজি বিভাগ ও ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৫জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনকে গুরুতর অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত ওই শিক্ষার্থীর নাম আশিক মাহমুদ ধ্রুব। তিনি ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র সাংগঠনিক সম্পাদক। বাকিরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ঐশর্য, তাকিব, নেহাল ও সাজ্জাদ।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেল ৪টায় ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল নামে দুই গ্রুপের খেলা ছিল। কিন্তু তাদের খেলোয়াড় আসতে দেড়ি হওয়ায় ওই সময়ে খেলতে নামে ইংরেজি ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ। তাদের খেলা শেষ হওয়ার পূর্বেই ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র সকল খেলোয়াড় মাঠে উপস্থিত হয়। পরে তারা অশ্লীল ভাষায় ইংরেজি ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগকে খেলা শেষ করতে বলেন। তাদের খেলা শেষ হলে ইংরেজি বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র খেলোয়াড়দের অশ্লীল ভাষা ব্যবহারের প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র খেলোয়াড়রা। এ সময় ধ্রুব নামে ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র এক শিক্ষার্থী ইংরেজি বিভাগের এক শিক্ষার্থীর নাকে ঘুষি মারেন। এতে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে।

ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র খেলোয়াড় রাকিব হাসান বলেন, আজকে আমাদের জেলা সমিতি’র দুই গ্রুপের খেলা ছিল। খেলা চলাকালে পাশে থাকা ইংরেজি বিভাগের কয়েকজন আমাদেরকে বাজে ভাষায় স্লেজিং করতেছিল। এক পর্যায়ে আমাদের কয়েকজনের সাথে তাদের হাতাহাতি লাগে যায়। পরে হাতাহাতি থামানো হয়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে ইংরেজি বিভাগের বেশ কিছু শিক্ষার্থী এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়। অপর দিকে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদেরকে অ্যালুমিনিয়াম রড দিয়ে মেরেছে

ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র খেলোয়াড়রা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাথে আমাদের বিভাগের একটা প্রীতি ম্যাচ ছিল। সেই ম্যাচ চলাকালে ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র কয়েকজন আমাদেরকে বাজে ভাষায় দ্রুত খেলা শেষ করতে বলেন। পরে আমাদের ১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের এক ভাই তাদের বাজে ভাষার প্রতিবাদ করলে তারা ভাইয়ের সাথে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। সেখানে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে এক পর্যায়ে তারা স্টেডিয়ামের গেইট বন্ধ করে আমাদেরকে রড ও লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করে। তবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি নন ময়মনসিংহ জেলা সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন।

এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক রুদাইয়া আখতার বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে রড দিয়ে মারা হয়েছে এমনটি শুনেছি। আমরা আগামীকাল বিভাগের শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফ. ম. আ জাহিদ বলেন, এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে চারজনকে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি আর একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রক্টর ড. আরিফুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাটি জেনেছি। উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আমি পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছি। আমি উভয় পরবর্তীতে দুইপক্ষকে ডেকে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।