শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গর্বাচেভকে শেষবিদায় জানাতে মানুষের ঢল

মস্কোতে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে শনিবার সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বশেষ নেতা মিখাইল গর্বাচেভকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে রুশরা। সে অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন না প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

মস্কোর ঐতিহাসিক হল অব কলামে রাখা গর্বাচেভের খোলা কফিনের সামনে সারিবদ্ধভাবে শ্রদ্ধা জানায় শোকার্তরা। হলটি রাশিয়ার শীর্ষ নেতাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য দীর্ঘকাল ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে।

১৯৫৩ সালে জোসেফ স্তালিনের মৃতু্যর পর তাঁর মরদেহ এখানেই প্রথম রাখা হয়েছিল। গর্বাচেভকে মস্কোর মর্যাদাপূর্ণ নভোদেভিচি কবরস্থানে তাঁর স্ত্রী রাইসার পাশে দাফন করা হবে।

৯১ বছর বয়সে গর্বাচেভ গত মঙ্গলবার ‘গুরুতর ও দীর্ঘ অসুস্থতার’ কারণে মারা যান। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯১ সালের মধ্যে ক্ষমতায় থাকাকালে গর্বাচেভ সোভিয়েত ইউনিয়নকে গণতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করেছিলেন।

বিংশ শতাব্দীর অন্যতম রাজনৈতিক এই ব্যক্তিত্ব স্নায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটাতে সাহায্য করার জন্য এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পরিবর্তনের জন্য পশ্চিমা বিশ্বে প্রশংসিত। কিন্তু সোভিয়েতের পতনের পর রাশিয়ার বৈশ্বিক প্রভাব কমে যাওয়ায় এবং বাজার অর্থনীতিতে সংগ্রাম করায় গর্বাচেভের শানি্ত ও সংস্কারের পদক্ষপগুলো ঢাকা পড়ে যায়। ফলে তিনি নিজের দেশেই অনেকের কাছে নিন্দিত।

গত কয়েক দশকে বেশির ভাগ সময় গর্বাচেভ রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতেও রাশিয়ার সরকারি মহলে দৃশ্যমান আলোচনা কম হয়েছে। ব্যস্ত সময়সূচির কথা জানিয়ে শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন পুতিনও।

তবে গর্বাচেভের মৃতু্যর পর হাসপাতালে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান পুতিন। গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে পুতিনের শ্রদ্ধা জানানোর ছবি দেখানো হয়। সেখানে পুতিনকে একাকী গম্ভীরমুখে গর্বাচেভের খোলা কফিনের সামনে লাল গোলাপের তোড়া রাখতে দেখা যায়।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের কারণে রাশিয়ায় একমাত্র ঊর্ধ্বতন বিদেশি নেতা হিসেবে গর্বাচেভের শেষকৃত্যে যোগদানের ঘোষণা দেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান।

ইউক্রেন যুদ্ধের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের মধ্যে পুতিনের সঙ্গে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল অরবানের। ক্রেমলিন জানিয়েছে, তাঁর মস্কো সফরে কোনো বৈঠকের পরিকল্পনা করা হয়নি।

পুতিন বরাবরই সোভিয়েতের পতনকে বিংশ শতাব্দীর ‘সবচেয়ে বড় ভূ-রাজনৈতিক বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করেছেন। ঐকবদ্ধ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর রাশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট হওয়া বরিস ইয়েলত্সিনকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। সে অনুষ্ঠানে পুতিন ও গর্বাচেভ উভয়ই উপস্থিত ছিলেন।

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

গর্বাচেভকে শেষবিদায় জানাতে মানুষের ঢল

প্রকাশিত সময় : ১১:১৯:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

মস্কোতে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে শনিবার সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বশেষ নেতা মিখাইল গর্বাচেভকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে রুশরা। সে অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন না প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

মস্কোর ঐতিহাসিক হল অব কলামে রাখা গর্বাচেভের খোলা কফিনের সামনে সারিবদ্ধভাবে শ্রদ্ধা জানায় শোকার্তরা। হলটি রাশিয়ার শীর্ষ নেতাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য দীর্ঘকাল ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে।

১৯৫৩ সালে জোসেফ স্তালিনের মৃতু্যর পর তাঁর মরদেহ এখানেই প্রথম রাখা হয়েছিল। গর্বাচেভকে মস্কোর মর্যাদাপূর্ণ নভোদেভিচি কবরস্থানে তাঁর স্ত্রী রাইসার পাশে দাফন করা হবে।

৯১ বছর বয়সে গর্বাচেভ গত মঙ্গলবার ‘গুরুতর ও দীর্ঘ অসুস্থতার’ কারণে মারা যান। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯১ সালের মধ্যে ক্ষমতায় থাকাকালে গর্বাচেভ সোভিয়েত ইউনিয়নকে গণতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করেছিলেন।

বিংশ শতাব্দীর অন্যতম রাজনৈতিক এই ব্যক্তিত্ব স্নায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটাতে সাহায্য করার জন্য এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পরিবর্তনের জন্য পশ্চিমা বিশ্বে প্রশংসিত। কিন্তু সোভিয়েতের পতনের পর রাশিয়ার বৈশ্বিক প্রভাব কমে যাওয়ায় এবং বাজার অর্থনীতিতে সংগ্রাম করায় গর্বাচেভের শানি্ত ও সংস্কারের পদক্ষপগুলো ঢাকা পড়ে যায়। ফলে তিনি নিজের দেশেই অনেকের কাছে নিন্দিত।

গত কয়েক দশকে বেশির ভাগ সময় গর্বাচেভ রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতেও রাশিয়ার সরকারি মহলে দৃশ্যমান আলোচনা কম হয়েছে। ব্যস্ত সময়সূচির কথা জানিয়ে শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন পুতিনও।

তবে গর্বাচেভের মৃতু্যর পর হাসপাতালে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান পুতিন। গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে পুতিনের শ্রদ্ধা জানানোর ছবি দেখানো হয়। সেখানে পুতিনকে একাকী গম্ভীরমুখে গর্বাচেভের খোলা কফিনের সামনে লাল গোলাপের তোড়া রাখতে দেখা যায়।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের কারণে রাশিয়ায় একমাত্র ঊর্ধ্বতন বিদেশি নেতা হিসেবে গর্বাচেভের শেষকৃত্যে যোগদানের ঘোষণা দেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান।

ইউক্রেন যুদ্ধের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের মধ্যে পুতিনের সঙ্গে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল অরবানের। ক্রেমলিন জানিয়েছে, তাঁর মস্কো সফরে কোনো বৈঠকের পরিকল্পনা করা হয়নি।

পুতিন বরাবরই সোভিয়েতের পতনকে বিংশ শতাব্দীর ‘সবচেয়ে বড় ভূ-রাজনৈতিক বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করেছেন। ঐকবদ্ধ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর রাশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট হওয়া বরিস ইয়েলত্সিনকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। সে অনুষ্ঠানে পুতিন ও গর্বাচেভ উভয়ই উপস্থিত ছিলেন।

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ