শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিচারকালে পরীমনিকে সশরীরে আদালতে চান রাষ্ট্রপক্ষ

মাদক আইনের মামলার বিচারকালে ঢাকাই সিনেমার আলোচিত ও সমালোচিত নায়িকা শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনিকে সশরীরে আদালতে চান রাষ্ট্রপক্ষ। আজ রোববার ঢাকার দশ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে এমনই আবেদন করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুব হাসান।

আবেদনে তিনি বলেন, ‘প্রেগনেন্ট থাকায় বিজ্ঞ আদালত আসামির (পরীমনি) আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা মঞ্জুর করেছিলেন। তিনি এখন মা হয়ে গেছেন। তাই আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরার আর প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রত্যেক ধার্য তারিখে তাকে (পরীমনি) সশরীরে আদালতে হাজির হতে আদেশ দেওয়ার আবেদন করছি।’

ওই সময় পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান ও নীলাঞ্জনা রিফাত (সুরভী) রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের বিরোধীতা করে বলেন, মাস খানেক হলো পরীমনি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তিনি এখনো পুরোপুরি সুস্থ না। তা ছাড়া সরকারিভাবেও মাতৃত্বকালীন ছুটিও তো ৬ মাস। তিনি সুস্থ হলে আদালতে হাজিরা দেবেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক নজরুল ইসলাম আবেদনটির বিষয়ে এদিন কোনো আদেশ না দিয়ে নথিভূক্ত রাখার আদেশ দেন। এরপর এদিন মামলার বাদী র‌্যাব-১ এর কর্মকর্তা মজিবর রহমানকে জেরা শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। এরপর আদালত আগামি ১৩ অক্টোবর সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।

শুনানিকালে পরীমনির ম্যানেজার এ মামলার আসামি আশরাফুল ইসলাম দিপু ও খালু কবীর হাওলাদার আদালতে হাজিরা ছিলেন। এর আগে গত ৫ জানুয়ারি পরীমনিসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

মামলায় পরীমনিসহ তিন জনের বিরুদ্ধে গত বছর ৪ অক্টোবর ঢাকা সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা।

গত বছর ৪ আগস্ট বিকেল ৪টার পর বনানীর ১২ নম্বর রোডের পরীমনির বাসায় অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। ওই সময় বাসা থেকে ১৯টি বোতলে ১৮.৫ লিটার বিদেশি মদ, চার গ্রাম আইস, এক স্লট এলএসডি নামক মাদক জব্দ করা হয়।

চার্জশিটে বলা হয়, চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসা থেকে জব্দ হওয়া মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। তদন্তকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর লিখিতভাবে জানিয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমনির নামীয় মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়। যা ২০২০ সালের ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হয়েছে।

অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহের বিষয়ে বলা হয়, পরীমনি বিভিন্ন স্থান থেকে জব্দকৃত মাদকদ্রব্য মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

বিচারকালে পরীমনিকে সশরীরে আদালতে চান রাষ্ট্রপক্ষ

প্রকাশিত সময় : ১২:৩৭:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

মাদক আইনের মামলার বিচারকালে ঢাকাই সিনেমার আলোচিত ও সমালোচিত নায়িকা শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনিকে সশরীরে আদালতে চান রাষ্ট্রপক্ষ। আজ রোববার ঢাকার দশ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে এমনই আবেদন করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুব হাসান।

আবেদনে তিনি বলেন, ‘প্রেগনেন্ট থাকায় বিজ্ঞ আদালত আসামির (পরীমনি) আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা মঞ্জুর করেছিলেন। তিনি এখন মা হয়ে গেছেন। তাই আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরার আর প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রত্যেক ধার্য তারিখে তাকে (পরীমনি) সশরীরে আদালতে হাজির হতে আদেশ দেওয়ার আবেদন করছি।’

ওই সময় পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান ও নীলাঞ্জনা রিফাত (সুরভী) রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের বিরোধীতা করে বলেন, মাস খানেক হলো পরীমনি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তিনি এখনো পুরোপুরি সুস্থ না। তা ছাড়া সরকারিভাবেও মাতৃত্বকালীন ছুটিও তো ৬ মাস। তিনি সুস্থ হলে আদালতে হাজিরা দেবেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক নজরুল ইসলাম আবেদনটির বিষয়ে এদিন কোনো আদেশ না দিয়ে নথিভূক্ত রাখার আদেশ দেন। এরপর এদিন মামলার বাদী র‌্যাব-১ এর কর্মকর্তা মজিবর রহমানকে জেরা শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। এরপর আদালত আগামি ১৩ অক্টোবর সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।

শুনানিকালে পরীমনির ম্যানেজার এ মামলার আসামি আশরাফুল ইসলাম দিপু ও খালু কবীর হাওলাদার আদালতে হাজিরা ছিলেন। এর আগে গত ৫ জানুয়ারি পরীমনিসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

মামলায় পরীমনিসহ তিন জনের বিরুদ্ধে গত বছর ৪ অক্টোবর ঢাকা সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা।

গত বছর ৪ আগস্ট বিকেল ৪টার পর বনানীর ১২ নম্বর রোডের পরীমনির বাসায় অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। ওই সময় বাসা থেকে ১৯টি বোতলে ১৮.৫ লিটার বিদেশি মদ, চার গ্রাম আইস, এক স্লট এলএসডি নামক মাদক জব্দ করা হয়।

চার্জশিটে বলা হয়, চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসা থেকে জব্দ হওয়া মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। তদন্তকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর লিখিতভাবে জানিয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমনির নামীয় মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়। যা ২০২০ সালের ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হয়েছে।

অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহের বিষয়ে বলা হয়, পরীমনি বিভিন্ন স্থান থেকে জব্দকৃত মাদকদ্রব্য মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।